Image description
 

কন্টেইনার টার্মিনাল বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের সাম্প্রতিক বন্দর চুক্তিকে “অতিগোপন” ও “চুপিসারে সম্পন্ন” বলে সমালোচনা করেছেন বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক। মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় তিনি বলেন, প্রবল বিরোধিতার মধ্যেও এই ধরনের চুক্তি করার মতো কোনো ম্যান্ডেট অন্তর্বর্তী সরকারের নেই।

সাইফুল হক বলেন, সরকার অতিগোপনে বা চুপিসার বন্দরের চুক্তি করেছে প্রবল বিরোধিতার মুখে। এই চুক্তি করার কোনো ম্যান্ডেট এমন সরকারের নেই। তাদের কী এমন দায় পড়লো যে, এভাবে জাতিকে কোনকিছু না জানিয়ে এভাবে চুক্তি করে বন্দর বিদেশিদের হাতে তুলে দিতে হবে।

তিনি বলেন, এর সঙ্গে স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় নিরাপত্তা জড়িত। অথচ দেশের কারো সঙ্গে কোনো আলোচনা না করেই অন্তর্বর্তী বন্দরের চুক্তি করেছে। এটি স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় নিরাপত্তা বিরোধী। কাজেই এই চুক্তি বাতিল করতে হবে।

সাইফুল হক বলেন, পার্লামেন্টে আলোচনার পর পার্লামেন্টের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এমন চুক্তির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে, এর ব্যতিক্রম কোনো পথে নয়। কারণ এসবের জন্য বাংলাদেশের মানুষকে পে করতে হবে। গণশুনানি ছাড়া এ ধরনের মেগা প্রকল্পের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ নেই।

তিনি বলেন, এমন চুক্তির পেছনে দুরভিসন্ধি আছে। সরকারের দায়বদ্ধতা কি দেশের মানুষের কাছে নাকি বিদেশি কোম্পানির কাছে?

সাইফুল হক বলেন, নির্বাচনের যেখানে আর মাত্র আড়াই মাস বাকি সেখানে নির্বাচন নিয়ে সরকারের তেমন তোড়জোড় দেখছি না। সরকারকে এই দেশবিরোধী ও গণবিরোধী চুক্তি থেকে ফিরিয়ে আনতে হবে।

তিনি বলেন, গণভোটের বিষয়ে সরকার যথেষ্ট জটিলতা তৈরি করেছে। প্রশ্নের ধরনের জন্য না ভোটের জয়ের মত আশংকা তৈরি হয়েছে, যা বিপজ্জনক হবে।

এ সময় গণফোরামের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সুব্রত চৌধুরী বলেন, চট্টগ্রামে এখন মহিউদ্দিন চৌধুরী নেই। আমরা কি আরেকজন মহিউদ্দিন চৌধুরী সৃষ্টি করতে পারি না?

তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার যা করছে তাতে দেখছি ইউনূস সাহেব সবকিছু লণ্ডভণ্ড করে দিচ্ছেন। ভাত দেয়ার মুরোদ নাই কিল মারার গোসাঁই। কারণে অকারণে বিদেশ সফরে গিয়ে এসে গালভরা বুলি দিচ্ছেন। বলছেন, এই অর্জন করেছি। কি অর্জন করেছেন এসব সফর থেকে? জাপান থেকে কি পেয়েছেন?

তিনি বলেন, ঐকমত্য কমিশনের অন্য কমিশনগুলোর প্রতিবেদনের কি খবর? শ্বেতপত্র ডিপফ্রিজে রাখলেন কেন? নিজের দায়িত্বের বাইরে গিয়ে বন্দর নিয়ে দেশবিরোধী, গণবিরোধী চুক্তির মত কর্মকাণ্ড কেন করছেন?

সরকারের উদ্দেশে সুব্রত চৌধুরী বলেন, নির্বাচনের আগে রুটিন ওয়ার্কের বাইরে আর কিছু করবেন না। দেশকে আর বিপদে ফেলবেন না। আপনাদের এই দেশবিরোধী চুক্তি বাতিলের বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগ্রাম অব্যহত থাকবে।

কন্টেইনার টার্মিনাল চুক্তি সম্পর্কে বাংলাদেশ লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম বলেন, এটা একটা দেশ বিক্রির চুক্তি। এই চুক্তির বিরুদ্ধে আদালতে যাব।

তিনি বলেন, যেখানে দেশীয় বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগে প্রস্তুত সেখানে দেশের সর্বনাশ করতেই এই চুক্তি। সরকার ন্যূনতম স্বচ্ছ থাকলে বন্ধের দিনে এভাবে সুপারসনিক গতিতে দেশবিরোধী এই চুক্তি করে ফেলত না।

হোসেন সেলিম বলেন, বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের দিলে বরং দেশ অনেক বেশি লাভবান হবে-আশিক চৌধুরী ও লুৎফে সিদ্দিকীকে চ্যালেঞ্জ দিচ্ছি। সৎ সাহস থাকলে তারা চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করুক।

শীর্ষনিউজ