Image description

রাজধানীতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য পরিচয় দিয়ে অপহরণ ও চাঁদাবাজি করা সংঘবদ্ধ চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় হাইকোর্ট এলাকা থেকে সিআইডির সিরিয়াস ক্রাইম শাখার একটি টিম তাদের গ্রেপ্তার করে।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন—হাসানুজ্জামান (৩৫) ও আলমগীর শিকারি (৪৬)। রোববার সিআইডির এক বিজ্ঞপ্তি থেকে এ তথ্য জানানো হয়।

সিআইডি জানায়, চক্রের সদস্যরা প্রথমে তাবলীগ জামাত বা অন্যান্য ধর্মীয় অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ভিকটিমদের সঙ্গে পরিচয় গড়ে তুলতো। এরপর অভাবের কথা বলে টাকা নেওয়ার ফাঁদ তৈরি করে। ভুক্তভোগী জামাল (ছদ্মনাম) কাকরাইলের তাবলীগ জামাতের মারকাজ মসজিদে অংশ নেওয়ার সুবাদে অভিযুক্ত সামসুল হক খানের (৫৬) সঙ্গে পরিচিত হন। সামসুল প্রায়ই বিভিন্ন অজুহাতে জামালের কাছ থেকে টাকা নিতেন।

গত ১৪ অক্টোবর রাতে যাত্রাবাড়ি কাঁচাবাজার এলাকায় সামসুলের সঙ্গে দেখা করতে গেলে তাকে ও তার সহকর্মী রেজাউল করিমকে ঘিরে ফেলে আরও সাতজন। তারা নিজেদের সিআইডি পরিচয় দিয়ে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা দেখায় এবং পিস্তল ঠেকিয়ে জোর করে গাড়িতে তুলে। পরে তাদের ঢাকার হাসনাবাদের একটি বাড়ির ছয়তলায় নিয়ে গিয়ে পাঁচ কোটি টাকা চাঁদা দাবি করা হয়। টাকা না দিলে মারধরের মুখে জামাল ভয়ে মোট এক কোটি ১০ লাখ টাকা নগদ ও ব্যাংক ট্রান্সফার করে দেন। রেজাউলের কাছ থেকেও নেয় ২৭ হাজার টাকা।

সিআইডি জানায়, অপহরণকারীরা জামালকে বিবস্ত্র করে একটি নারীর সঙ্গে বসিয়ে ভিডিয়ো ও স্থির ছবি ধারণ করেন। পাশাপাশি ১৮টি নন-জুডিসিয়াল স্ট্যাম্পে সই নেন। ১৪ অক্টোবর রাত ১১টা থেকে পরদিন ১৫ অক্টোবর বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলে এ ভয়াবহ ঘটনা। পরে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে জামাল ও রেজাউলকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এক সপ্তাহ পর চক্রটি ভিডিও প্রকাশ না করার বিনিময়ে আবার ২০ লাখ টাকা দাবি করে। টাকা না দিলে মিথ্যা মামলা ও ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। জামাল ৬ নভেম্বর যাত্রাবাড়ী থানায় মামলা দায়ের করলে সিআইডি তদন্ত শুরু করে এবং এরই ধারাবাহিকতায় দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তারা অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে বলে জানিয়েছে সিআইডি। চক্রের বাকি সদস্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।