Image description
 

নরসিংদী শহরের ৮ বছর বয়সী হাফেজ পড়ুয়া শিশু ওমর ফারুক এবং তার বাবা দেলোয়ার হোসেন (৩৭) এক সাথে জানাযা পড়ে শেষ বিদায় জানাল নরসিংদীবাসী। হাজারও মানুষের অশ্রুসিক্ত নয়নে গতকাল শুক্রবার রাত ১২টার দিকে নরসিংদী সদর উপজেলার চিনিশপুর মাদ্রাসা মাঠে তাদের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

 

জানাজায় মাদ্রাসার শিক্ষক, শিক্ষার্থী, প্রশাসনের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার হাজারও মানুষ অংশ নেন। সহপাঠীদের সাথে কেঁদেছে জেলার বহু মানুষ।

 

জানাজা শেষে বাবা-ছেলের মরদেহ বহনকারী অ্যাম্বুলেন্স নিজ এলাকা কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তরপাড়া গ্রামের উদ্দেশে চলে যান। সেখানে দ্বিতীয় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাঁদের দাফন করা হবে বলে জানান ওমরের চাচা জাকির হোসেন।

 

জানা যায়, শুক্রবার সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে ভূমিকম্পের সময় নরসিংদী সদর উপজেলার চিনিশপুর ইউনিয়নের গাবতলি এলাকায় নির্মাণাধীন ভবনের দেয়াল থেকে ইট ধসে পাশের বাড়ির ছাদের ওপর পড়ে। এতে ওই বাড়ির সানশেড ভেঙে মো. ওমর ফারুক, তার বাবা দেলোয়ার হোসেন এবং দুই বোন আহত হন। তাদেরকে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দেন এবং আশঙ্কাজনক অবস্থায় বাবা-ছেলেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসকেরা ওমরকে মৃত ঘোষণা করেন।

 

পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার বাবা দেলোয়ারও মারা যান ওমর ফারুকের চাচা জাকির হোসেন জানান, ভূমিকম্পের সময় দেলোয়ার হোসেন ও তার ছেলে এবং দুই মেয়েকে নিয়ে বাইরে যাচ্ছিলেন। এ সময় তাদের বাড়ির সাদের একাংশ ভেঙ্গে তাদের ওপর পড়ে। এসময় আহত হলে তাদের হাসপাতালে নেওয়ার পর দেলোয়ার ও ওমরকে হাসপাতালে নেয়া হয়। কিন্তু দুজনের কাউকেই বাঁচানো যায়নি।

 

তিনি আরও জানান, তার ভাই দেলোয়ার নরসিংদীর ইইউ এমসি জুটমিলে চাকরি করতেন। ছেলেকে মেধাবী মাওলানা বানানোর স্বপ্ন নিয়ে হাফেজে ভর্ করা হয়। সে কারণেই ওমরকে মাদ্রাসায় দেন। অল্প বয়সেই ওমর কোরআনে হাফেজ হয়েছিল। কে জানত এমন ভূমিকম্পে তাদের জীবন এভাবেই থেমে যাবে। এসব বলতে বলতে অশ্রুসিক্ত নয়নে কান্নায় ভেঙে পড়েন স্বজনরা।