মা নুসরাত বেগমের সঙ্গে মহিষের মাংস কিনতে বেরিয়েছিলেন স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র রাফিউল ইসলাম রাফি। আজ শুক্রবার (২১ নভেম্বর) সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটের সময় রাজধানীর পুরান ঢাকার বংশালের কসাইটুলিতে একটি ভবনের নিচতলায় নয়নের মাংসের দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন তারা। হঠাৎ ভূমিকম্প শুরু হলে তীব্র ঝাঁকুনিতে দোকানের সামনে থাকা ক্রেতাদের ওপর ভবনের ছাদের রেলিং ভেঙে পড়ে তাদের ওপর।
গুরুতর আহত অবস্থায় নুসরাত ও রাফিকে উদ্ধার করে নেওয়া হয় মিটফোর্ড হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসক রাফিকে মৃত ঘোষণা করেন। একই হাসপাতালে আলাদা ওয়ার্ডে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে নুসরাতকে। তিনি এখনো জানেন না ছেলে আর বেঁচে নেই।
মিটফোর্ড হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাজহারুল ইসলাম খান বলেন, নুসরাতের মাথায় গুরুতর জখম হয়েছে। সেজন্য সেলাই দিতে হয়েছে। তিনি শঙ্কামুক্ত কিনা তা ২৪ ঘণ্টা পর বলা যাবে। তবে তাকে ছেলের মৃত্যুর খবর জানানো হয়নি। কারণ এই অবস্থায় তিনি ছেলের মৃত্যুর ধাক্কা সইতে পারবেন না।
মিটফোর্ড হাসপাতালের ক্যাজুয়ালটি ব্লকে চিকিৎসাধীন নুসরাত। তিনি কিছুক্ষণ পরপরই ছেলের খোঁজ জানতে চাইছেন। তাকে বলা হয়েছে, ছেলে আহত অবস্থায় চিকিৎসা নিচ্ছেন। তবে তাতে আশ্বস্ত হতে পারছেন না তিনি। মাঝেমধ্যেই হাউমাউ করে কেঁদে উঠছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ভূমিকম্পের সময় হঠাৎ পাঁচতলা একটি ভবনের রেলিং ধসে পড়ে। এ সময় মায়ের সঙ্গে বাজার করছিলেন রাফি। ভবনের একটি ইট তার মাথায় পড়লে মারা যান তিনি। এ ঘটনায় রাফির মাও গুরুতর আহত হয়েছেন।
এ ঘটনায় নিহত বাকি দুজন হলেন আব্দুর রহিম (৪৮) ও তার ছেলে মেহরাব হোসেন রিমন (১২)। তারা রাজধানীর সুরিটোলা স্কুলের পেছনে ভাড়া বাসায় থাকতেন।
বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পটির তীব্রতা ছিল ৫ দশমিক ৭। উৎপত্তিস্থল নরসিংদীর মাধবদী। ভূমিকম্পটিকে মাঝারি মাত্রার বলছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।