৮ নভেম্বর ছুটির দিন (শনিবার) শেষে মধ্যরাতে প্রথম ধাপে ডিসি পদে নিয়োগের পরই বিতর্ক ওঠে। এরপর ৯ নভেম্বর আরও ১৪ জেলায় নতুন জেলা প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হয়। সেই থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত নতুন মুখ এবং পুরনো মিলিয়ে মোট ৫২ জেলায় ডিসি পদে পরিবর্তন হয়েছে। এসব নিয়োগ নিয়ে চলছে মহাবিতর্ক। এটিকে অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে আরেক মহা কেলেঙ্কারি বলে আখ্যায়িত করছেন সংশ্লিষ্টরা। অভিযোগ উঠেছে, অধিকাংশ পদায়নই হয়েছে সাবেক ছাত্রলীগ, ছাত্রশিবির এবং জামায়াত-আওয়ামী ঘনিষ্ঠ কর্মকর্তাদের মধ্য থেকে। এমনকি দুর্নীতিবাজ এবং বিতর্কিত কর্মকর্তাও রয়েছেন এর মধ্যে বেশ কয়েকজন। বিএনপির পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিকভাবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে গিয়ে প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। এছাড়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা নামে একটি সংগঠনও প্রতিবাদ জানিয়েছে।
এর আগে এই অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে ডিসি নিয়োগ নিয়ে এক মহা কেলেঙ্কারি কাণ্ড বেধে গিয়েছিল। তখন জনপ্রশাসন সচিব পদে ছিলেন ড. মোখলেস উর রহমান। অনেকটা তড়িঘড়ি ফিটলিস্ট তৈরি করে এক সঙ্গে ৫৯ জেলায় নতুন ডিসি নিয়োগ দেয়া হয়। ওই নিয়োগে ড. মোখলেস এর নেতৃত্বে ব্যাপকহারে ঘুষ লেনদেনের অভিযোগ উঠে। নিয়োগ বাতিল চেয়ে নজিরবিহীনভাবে সচিবালয়ে বিক্ষোভ করেন আওয়ামী লীগ আমলের ‘বঞ্চিত’ কর্মকর্তারা। হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে। ডিসি নিয়োগ দেওয়া নয়জন কর্মকর্তাকে পরে সরিয়ে নেওয়া হয়। ডিসি নিয়োগ দেওয়া নিয়ে বিভিন্ন জেলায় বিক্ষোভও হয়। নিয়োগে অর্থ কেলেঙ্কারির অভিযোগ অত্যন্ত বিব্রতকর অবস্থায় ফেলে দিয়েছিল অন্তর্বর্তী সরকারকে। তখন পদোন্নতি বঞ্চিত কর্মকর্তারা প্রকাশ্যে প্রতিবাদে নেমেছিলেন। সেই বিতর্ক এখন নতুন আঙ্গিকে আবারও ফিরে এসেছে, তাও নির্বাচন ঘনিয়ে আসার মুহূর্তে। রাজনৈতিক এবং প্রশাসন বিষয়ক বিশ্লেষকসহ সচেতন মহল আশংকা করছেন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে বানচাল করার ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে ডিসি নিয়োগ নিয়ে পরিকল্পিতভাবে এই কেলেঙ্কারি কাণ্ডের অবতারণা করা হয়েছে।
ছাত্রশিবির-ছাত্রলীগের ব্যাকগ্রাউন্ড, আওয়ামী-জামায়াত ঘনিষ্ঠ, অনভিজ্ঞ ও বিতর্কিতদেরই প্রাধান্য
অভিযোগ উঠেছে, গত সপ্তায় যে ৫২টি জেলার ডিসি পদে পরিবর্তন হয়েছে তারমধ্যে ৩১ জন সাবেক ছাত্রশিবির ও জামায়াত সংশ্লিষ্ট। বাকিদের মধ্যে অন্তত ১৬ জন আওয়ামী লীগপন্থি এবং ৫ জন দলনিরপেক্ষ। ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের আমলে যারা মন্ত্রী ও সচিবদের পিএসের দায়িত্ব পালন করেছেন, তারাও ডিসি পদে নিয়োগ পেয়েছেন। এমনকি আওয়ামী সরকারের বিতর্কিত নির্বাচন এবং রাতের ভোটের নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করা কর্মকর্তাও রয়েছেন এর মধ্যে।
অন্তর্বর্তী সরকারের তরফ থেকে বিভিন্ন সময়ে বলা হয়েছিল, মাঠ প্রশাসনে বিগত তিন নির্বাচনের কাজে যুক্ত ছিলেন এমন কোনো কর্মকর্তাকে ডিসি, এডিসি (অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক), ইউএনওসহ বিচারিক দায়িত্বে পদায়ন করা হবে না। ন্যূনতম ভূমিকা থাকলেও তাঁকে এই নির্বাচনে দায়িত্বে রাখা হবে না। বিশেষ করে, যারা এআরও ছিলেন তাদের বিষয়ে কঠোরভাবে পদায়ন না করার সিদ্ধান্ত আছে। অথচ সরকারের ডিসি পদে গত সপ্তাহের এসব প্রজ্ঞাপনে কয়েকজনের ক্ষেত্রে উল্টোচিত্র দেখা গেছে। নতুনদের মধ্যে বিগত নির্বাচনে এআরও ছিলেন এমন অন্ততঃ দুজনকে ডিসি করা হয়েছে। প্রজ্ঞাপন পর্যালোচনা করে দেখা যায়, বিসিএস ২৫তম ও ২৭তম ব্যাচের প্রশাসন ক্যাডারের দুজন কর্মকর্তাকে ডিসি করা হয়েছে, যাঁদের একজন ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে, অন্যজন ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে এআরও ছিলেন। এ ছাড়াও অন্তত তিনজন কর্মকর্তা আছেন যারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এডিসি) বা স্থানীয় সরকারের উপপরিচালক পদে পুরোপুরি দুই বছর দায়িত্ব পালন করেননি। অথচ জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের পদায়ন নীতিমালায় বলা আছে, ডিসি হতে হলে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের উল্লিখিত পদে দুই বছর চাকরির অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
এ ছাড়া প্রশাসন ক্যাডারের সঙ্গে বিলুপ্ত ইকোনমিক ক্যাডারের তিন কর্মকর্তার ডিসি হিসেবে পদায়ন নিয়েও নানা আলোচনা চলছে। কর্মকর্তারা বলছেন, ইকোনমিক ক্যাডারের কর্মকর্তাদের মাঠ প্রশাসনে সহকারী কমিশনার বা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এসব পদে কাজের অভিজ্ঞতা ছিল না। তাঁরা সরাসরি ইউএনও, এডিসি বা স্থানীয় সরকারের উপপরিচালকের দায়িত্বে ছিলেন। ইকোনমিক ক্যাডার ২০১৮ সালে প্রশাসন ক্যাডারের সঙ্গে একীভূত হয়। মাঠ প্রশাসনে কাজের অভিজ্ঞতা না থেকেও তারা ডিসি হয়েছেন। অথচ ডিসিকে ভূমি ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেসি জানতে হয়। বিষয়টি নিয়ে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।
বিসিএস ২৭তম ব্যাচের কর্মকর্তা মোহাম্মদ এনামুল আহসানকে রংপুরের ডিসি করা হয়েছে। এর আগে তিনি সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার ইউএনও ছিলেন বলে জানা গেছে। এ সময় এইচ টি ইমামের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা হয়। এই কর্মকর্তা বিগত আওয়ামী সরকারের আমলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলামের স্ত্রী সাবেক তথ্য সচিব কামরুন নাহারের পিএস ছিলেন। অভিযোগ রয়েছে, ওই সময় তিনি ফ্যাসিস্ট সরকারের তথ্যমন্ত্রী হাসান মাহমুদের পিএসের সঙ্গে একাট্টা হয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ে শক্তিশালী সিন্ডিকেট গড়ে তোলেন। এই সিন্ডিকেটের ভয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের অন্য কর্মকর্তারা তটস্থ থাকতেন। সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসান মাহমুদের সঙ্গে তাঁর এখনো গভীর সম্পর্ক রয়েছে বলে জানা গেছে। আওয়ামী সরকার পতনের পর এই কর্মকর্তা ঘুষ দিয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পোস্টিং নেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
মুন্সীগঞ্জের ডিসি পদে নিয়োগ পেয়েছেন পরিকল্পনা বিভাগের উপসচিব সৈয়দা নূর মহল আশরাফী। প্রয়াত আওয়ামী নেতা এইচ টি ইমামের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল তাঁরও। এ কারণে সব সময় তাঁকে গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরে দায়িত্ব পালনে দেখা গেছে। গাজীপুরে দায়িত্ব পালনকালে সেখানকার একজন এডিসির সঙ্গে তাঁর অন্তরঙ্গ ছবি ও ভিডিও ভাইরাল হয়। এ ছাড়া বরগুনার ডিসি করা হয়েছে কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের উপসচিব তাছলিমা আক্তারকে। একসময় ছাত্রলীগ করা এই কর্মকর্তার স্বামী জাহাঙ্গীর আলম জনতা ব্যাংকের আওয়ামীপন্থী সিবিএ নেতা।
সামাজিক মাধ্যমে ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগান দেওয়া ভিডিও ভাইরাল হওয়া আজাদ জাহানকে গাজীপুরের জেলা প্রশাসক হিসেবে পদায়ন করেছে সরকার। এর আগে তিনি ভোলার জেলা প্রশাসক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। আওয়ামী ঘনিষ্ঠ এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির মাধ্যমে নিজ এলাকায় শত একর জমিতে মৎস্য ঘের তৈরির অভিযোগ রয়েছে। তা সত্ত্বেও তাকে নির্বাচনকালীন সময়ে গুরুত্বপূর্ণ জেলা গাজীপুরের ডিসি হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
একইভাবে, সামাজিক মাধ্যমে আওয়ামী লীগ ও বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যদের ছবি ও বার্তা শেয়ার করা উপসচিব আফসানা বিলকিসকে মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক হিসেবে পদায়ন করা হয়েছে। বিভিন্ন সময়ে তিনি শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা, এমনকি টিউলিপ রেজওয়ানার ছবিও নিজের ফেসবুকে শেয়ার করেছেন। সরকারি কর্মকর্তা হয়েও এমন দলীয় সংশ্লিষ্টতা প্রকাশ্যে আনায় প্রশাসনের ভেতর সমালোচনা সৃষ্টি হয়েছে।
অন্যদিকে, নড়াইলের সাবেক ডিসি শারমিন আক্তার জাহানকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ডিসি করা হয়েছে। উপসচিব পদে পদোন্নতির পরই তিনি ও কিছু আওয়ামীপন্থী কর্মকর্তা বঙ্গবন্ধুর মাজারে ফুল দিয়ে ‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শে শপথ’ নেন। তার বিরুদ্ধে নড়াইলের ডিসি থাকাকালীন আর্থিক অনিয়ম ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদ ইস্যুর অভিযোগও রয়েছে।
‘গাছখেকো’খ্যাত পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক আবদুল্লাহ আল মাসউদকে ঝিনাইদহের ডিসি করায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তোলপাড় শুরু হয়েছে। কিশোরগঞ্জে থাকাকালে সরকারি গাছ কাটার বিষয়ে একটি জাতীয় দৈনিকে সংবাদ প্রকাশিত হলে তিনি ‘গাছখেকো মাসউদ’ নামে পরিচিতি পান। আওয়ামী লীগ আমলে মাসউদ তৎকালীন আইনমন্ত্রীর দাপট দেখিয়ে চলেছেন। প্রমাণিত অভিযোগ থাকার পরও মাসউদ এসি ল্যান্ড থেকে ইউএনও হন। ইউএনও থেকে এডিসি হন। সবই সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের তদবিরে।
এর আগে গত ১৫ অক্টোবর চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক হিসেবে পদায়ন করা হয় ফেনীর জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলামকে। বিতর্কের কারণে অবশেষে গত সপ্তায় তাকে প্রত্যাহার করা হয়। সাইফুল ইসলাম আওয়ামী শাসনামলে অর্থ বিভাগ, বাগেরহাটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, মুন্সিগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, একই জেলার সিনিয়র সহকারী কমিশনারসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনে কাজ করেছেন। আওয়ামী সুবিধাভোগী এই কর্মকর্তা ফেনীর জেলা প্রশাসক হিসেবে যোগদান করেই এক আওয়ামী লীগ নেতার সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হন। তার এই পদায়ন নিয়েও উঠেছে নানা বিতর্ক।
কুড়িগ্রামের ডিসি পদে নিয়োগ পেয়েছেন ছাত্রলীগের রাজনীতি করা উপভূমি সংস্কার কমিশনার অন্নপূর্ণা দেবনাথ। ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে তিনি গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরে কাজ করেছেন। তাঁর ডিসি পদে নিয়োগ পাওয়ায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে অভিনন্দন জানিয়েছে বিশ্ব হিন্দু মহাজোট। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মহাজোটের একজন লিখেছেন, ‘অভিনন্দন ও শুভ কামলা রইল দিদিভাই।’
এইচ টি ইমামের আরেক ঘনিষ্ঠ কর্মকর্তা নাজমা আশরাফিকে ডিসি পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে রাঙামাটিতে। আওয়ামী আমলে তিনি তৎকালীন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের বিশ্বস্ত ছিলেন, এমন গুঞ্জন আছে।
নেত্রকোনার ডিসি পদে নিয়োগ পেয়েছেন সাইফুর রহমান। বিলুপ্ত ইকোনমিক ক্যাডার কর্মকর্তা সাইফুর ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের একজন কর্মী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। মাঠ প্রশাসনে তাঁর কোনো অভিজ্ঞতা-ই নেই।
একইভাবে, আওয়ামী ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত বাগেরহাটের সাবেক ডিসি আহমেদ কামরুল হাসানকে নোয়াখালীর ডিসি হিসেবে পদায়ন করা হয়েছে। তারও মাঠ প্রশাসনে যথাযথ অভিজ্ঞতা না থাকলেও দুই জেলার ডিসি পদে পরপর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
ছাত্রলীগের রাজনীতি করা এস এম মেহেদী হাসানকে লক্ষ্মীপুরের ডিসি হিসেবে পদায়ন করা হয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব রেজাউল করিমকে ঢাকার ডিসি পদে পদায়ন করা হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকাকালে ক্যাম্পাসে তিনি ছাত্রলীগের মিছিলে যেতেন বলে অভিযোগ রয়েছে
অন্যদিকে, বিতর্কিত ২০১৪ সালের নির্বাচনে সহকারী রিটার্নিং অফিসার (এআরও) হিসেবে দায়িত্ব পালন করা সন্দ্বীপ কুমার সিংহ ও লুৎফুন নাহারকেও যথাক্রমে বরগুনা ও মেহেরপুরের ডিসি করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) মামলা ও নির্বাচনী অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে
বিএনপির এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার পক্ষ থেকে অভিযোগ
বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ইসমাইল জবিউল্লাহ এর নেতৃত্ব একটি প্রতিনিধি দল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের সাথে সাক্ষাৎ করে এসব বিতর্কিত এবং রাজনৈতিক একপেশে কর্মকর্তাদের ডিসি পদে নিয়োগের প্রতিবাদ জানিয়েছেন। এসময় জনপ্রশাসন সচিব তাদের জানিয়েছেন বিষয়টি প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে আলোচনা করে সমাধান করা হবে। কিন্তু সেইদিন দুপুরে বিএনপির নেতাদের সাথে কথা বলার পরে রাতে ডিসি নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তারা মনে করছেন, যে ৫২ জনের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে, তা রাজনৈতিকভাবে একপেশে। ইতোমধ্যে নতুন নিয়োগ পাওয়া ডিসিদের তথ্য সংগ্রহ করছে বিএনপি। এসব নতুন ডিসিরা ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের আমলে কোন কোন মন্ত্রী-সচিবের পিএস-এপিএসের দায়িত্ব পালন করেছেন এবং বিতর্কিত নির্বাচনগুলোয় তাদের কী ভুমিকা ছিল এসব আমলে নিচ্ছে বিএনপি।
এদিকে জেলা প্রশাসক (ডিসি) নিয়োগকে ঘিরে নতুন করে বিতর্কের জেরে ১১ ডিসির বিরুদ্ধে তদন্তের আবেদন জানানো হয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা নামে একটি সংগঠন ১৩ নভেম্বর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বরাবর এই আবেদন জমা দেয়।
আবেদনে বলা হয়েছে, দেশের বিভিন্ন জেলায় নতুন ডিসি নিয়োগ দেওয়া হলেও প্রক্রিয়া, যোগ্যতা যাচাই ও প্রশাসনিক নীতিমালা অনুসরণ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সংগঠনটির দাবি, নিয়োগপ্রাপ্তদের মধ্যে কয়েকজন রাজনৈতিকভাবে সুবিধাভোগী, আবার কয়েকজনের পূর্ববর্তী কর্মদক্ষতা, অভিজ্ঞতা ও প্রশাসনিক নৈতিকতা নিয়ে গুরুতর অভিযোগ রয়েছে।
সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়, অভিযোগ থাকা কর্মকর্তাদের কেউ কেউ অতীতে প্রকাশ্যে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত ছিলেন, কেউ প্রশাসনিক আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন। আবার কয়েকজনের অভিজ্ঞতা জেলা প্রশাসকের মতো দায়িত্ব পালনের জন্য যথেষ্ট নয়।
শীর্ষনিউজ