একীভূত করার প্রক্রিয়ায় থাকা পাঁচ ইসলামি ব্যাংকের ক্ষতিগ্রস্ত সাধারণ শেয়ারহোল্ডারা ক্ষতিপূরণ পাবেন কি না- তা নিয়ে ধোঁয়াশা দেখা দিয়েছে। বিষয়টি বাংলাদেশ ব্যাংক ও অর্থ মন্ত্রণালয় কেউ স্পষ্ট করছে না। দায়িত্বশীলদের পক্ষ থেকে এক এক সময় এক এক ধরনের বক্তব্য আসছে। ব্যাংকগুলো হলো- ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী, সোশ্যাল ইসলামী (এসআইবিএল), এক্সিম, গ্লোবাল ইসলামী এবং ইউনিয়ন ব্যাংক।
মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি ও অর্থনৈতিক বিষয়ক সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে পাঁচ ব্যাংক নিয়ে কথা বললেও অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ শেয়ারহোল্ডারদের ক্ষতিপূরণের বিষয়টি স্পষ্ট করেননি।
পাঁচ ব্যাংকের সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের ক্ষতিপূরণের বিষয়ে আপনারা কী ভাবছেন- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, দেখি কী করা যায় ওদের ব্যাপারে।
ক্ষতিগ্রস্ত শেয়ারহোল্ডাররা কি ক্ষতিপূরণ পাবেন? এমন পাল্টা প্রশ্ন করলে উপদেষ্টা বলেন, এটা বাংলাদেশ ব্যাংককে প্রশ্ন করেন।
বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে তো বলা হয়েছে সরকার বিবেচনা করবে। সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে এমন কথা বলা হলে ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা বিবেচনা করবো। জয়েন্টলি (সম্মিলিতভাবে) আমরা দেখবো। এটা আমরা একেবারে ইগনোর করছি না।
তাহলে কি ক্ষতিগ্রন্ত সাধারণ শেয়ারহোল্ডারা কিছু ক্ষতিপূরণ পাবেন? এমন প্রশ্নে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, এটা এখন আমি বলবো না।
এর আগে একীভূতকরণের প্রক্রিয়ায় থাকা পাঁচ ইসলামি ব্যাংকের শেয়ার শূন্য ঘোষণা করা হবে এমন গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়লে শেয়ারবাজারে প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ারের ব্যাপক দরপতন হয়। এমন পরিস্থিতিতে ১২ অক্টোবর অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বলা হয়, ‘পাঁচটি ইসলামি ব্যাংক একীভূত করার প্রক্রিয়ায় বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে মর্মে একটি স্বার্থান্বেষী মহল কর্তৃক সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব ছড়ানো হচ্ছে। বিষয়টি সরকারের দৃষ্টিগোচর হয়েছে।’
এতে আরও বলা হয়, ‘বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ ক্ষুণ্ন হয় এমন কোনো সিদ্ধান্ত সরকার গ্রহণ করেনি। ব্যাংক একীভূত করার প্রক্রিয়ায় বিনিয়োগকারীদের স্বার্থের বিষয়টি সরকার গুরুত্বের সঙ্গে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে।’
অর্থ মন্ত্রণালয়ের এই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর ৫ নভেম্বর এক সংবাদ সম্মেলন করে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, পাঁচ ব্যাংকের শেয়ারহোল্ডারদের ইক্যুইটির মূল্য এখন শূন্যের নিচে। ফলে শেয়ারগুলোর ভ্যালু জিরো হিসেবে বিবেচিত হবে। কাউকে কোনো ধরনের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না।
অবশ্য পরদিন ৬ নভেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এক বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বলা হয়, সরকার ক্ষুদ্র শেয়ারহোল্ডারদের ক্ষতিপূরণের বিষয়টি বিবেচনা করতে পারে।
এরপর ৯ নভেম্বর সচিবালয়ে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক এবং অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে অর্থ উপদেষ্টাকে প্রশ্ন করা হয়, সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক একটা ঘোষণা দিয়েছে- সেখানে বলছে যে পাঁচটা ব্যাংকের শেয়ার শূন্য হবে, সাধারণ শেয়ারহোল্ডাররা কিছু পাবেন না। উত্তরে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, আমরা বলেছি যে এটা আমরা দেখবো যে কী ব্যাপার। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর যেটা বলেছেন সেটা তো ফাইনাল (চূড়ান্ত) কথা না। ফাইনাল কথা হলো সরকার দেখবে।