বৈশ্বিক অনলাইন স্বাধীনতা কমলেও এ বছর উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি দেখিয়ে বাংলাদেশ ইন্টারনেট স্বাধীনতা সূচকে ভারতের কাছাকাছি পৌঁছেছে বলে জানিয়েছে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়। আজ শনিবার (১৫ নভেম্বর) তথ্য মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মুহম্মদ জসীম উদ্দিন স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ফ্রিডম হাউসের ১৩ নভেম্বর প্রকাশিত ‘ফ্রিডম অন দ্য নেট ২০২৫’ প্রতিবেদনে ইন্টারনেট স্বাধীনতায় বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি আন্তর্জাতিক নজর কেড়েছে। গত বছরের ৪০ থেকে এ বছর দেশের স্কোর বেড়ে ৪৫-এ পৌঁছেছে—যা শুধু সাত বছরের সর্বোচ্চই নয়, বরং অঞ্চলগতভাবে ভারত(৫১) ও শ্রীলঙ্কার(৫৩) কাছাকাছি অবস্থান নিশ্চিত করেছে।
প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব দায়িত্ব গ্রহণের পর নতুন টেলিকম অধ্যাদেশ, সার্ভেইল্যান্স কাঠামোর মৌলিক পরিবর্তন, ব্যক্তিগত উপাত্ত সুরক্ষা অধ্যাদেশ এবং জাতীয় উপাত্ত ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ পাস করাসহ ইন্টারনেটের স্বাধীনতা বৃদ্ধিতে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করেছেন যার ফলশ্রুতিতে সূচকের এই উত্থান। ইতোমধ্যে বিশ্বব্যাংকের প্রতিনিধি দল ব্যক্তিগত উপাত্ত সুরক্ষা অধ্যাদেশ এবং জাতীয় উপাত্ত ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ বিশ্বমানের হয়েছে বলে মন্তব্য করেছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী বিশ্বের ৭২টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ এ বছর সবচেয়ে বেশি অগ্রগতি অর্জনকারী দেশ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের আগস্ট মাসে শিক্ষার্থী নেতৃত্বাধীন গণঅভ্যুত্থানের ফলে দমনমূলক সরকার অপসারিত হওয়ায় এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিভিন্ন নীতিগত সংস্কার—বিশেষত ইন্টারনেট শাটডাউন বন্ধে নীতিগত সংশোধন এবং বিতর্কিত সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিল—ইন্টারনেটের স্বাধীনতা বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে।
বাংলাদেশের এই অগ্রগতি দেশটির ডিজিটাল ভবিষ্যৎ আরও উন্মুক্ত ও সুরক্ষিত করার প্রত্যয়কেই প্রতিফলিত করে। আশা করা যাচ্ছে মানসম্পন্ন ইন্টারনেট গভর্নেন্স, ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশন, টেলিকমের কমপ্লেক্স লাইসেন্স রেজিম সহজ করা, নাগরিক সেবা এবং ইন্টার অপারেবিলিটিতে যে উদ্যোগগুলো নেয়া হচ্ছে তাতে খুব দ্রুতই বাংলাদেশের ইন্টারনেট স্বাধীনতার সূচক ৫০ ছাড়িয়ে যাবে।