Image description

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সাবেক শিক্ষার্থী শাহীন আলম। ৪৪তম বিসিএসে শিক্ষা ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন তিনি। তার এই ক্যাডার হওয়ার পেছনে প্রাক্তন প্রেমিকার ছেড়ে যাওয়াসহ নানা ধরনের গল্প ছড়িয়েছে। তবে এসব পেছনে ফেলে টিউশনি করে স্ত্রীর মাসে পাঠানো ৬ হাজার টাকায় তিনি চাকরির প্রস্তুতি নেন বলে জানিয়েছেন।

নিজের বিসিএস ক্যাডার হওয়ার গল্প ফেসবুকে লিখেছেন শাহীন আলম। আজ শনিবার (৮ নভেম্বর) এক পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘যে কথাটি সত্য-আজকে আমি যে ক্যাডার হয়েছি, তার পিছনে ভালবাসার মতো অদৃশ্য এক বস্তুই কিন্তু দায়ী। আর সেটা কিন্তু আমার প্রাক্তনের ভালবাসা বা চলে যাওয়া নয়।’

তিনি বলেছেন, ২০২২ সালের শুরুর দিকে সাথী নামের এক মেয়ের সাথে আমার পরিচয় হয়। তখন আমি ৬ হাজার টাকার একটা টিউশন করতাম মোহাম্মদপুরে। সেই টিউশনটা ছাড়তে বাধ্য করেছিল এই মেয়েটা। 

টিউশন ছাড়ার কারণে বলেছিল, ‘আপনি ভালোভাবে বিসিএসের প্রিপারেশন নেন। টিউশন পড়িয়ে ৪-৫ ঘণ্টা নষ্ট না করে, এ সময়টা পড়াশোনায় দেন। আর আপনার টিউশনের টাকার দায়িত্ব আমি নিচ্ছি। আপনি টিউশন করে যত টাকা পেতেন, এই টাকাটা আপনি সময় মতো পেয়ে যাবেন।’ আমি তার কথায় টিউশনটা ছেড়ে দেই এবং পড়াশোনা দৃঢ়ভাবে চালিয়ে যেতে থাকি। 

২০২২ সালের নভেম্বর মাসে ৪৪তম বিসিএসের রিটেন হয়। রিটেন শেষ না হওয়া পর্যন্ত বাপের টাকায় চলা মেয়েটি আমার জন্য নিজে টিউশন করিয়ে সেই ৬ হাজার টাকা পাটিয়েছে প্রতি মাসে। তার একটাই কথা ছিল- ‘আপনার জন্য আমি নিজে পরিশ্রম করছি তার একটাই কারণ, আর সেটা হচ্ছে- আপনি ক্যাডার হলে সকল ব্যর্থ প্রেমিক উৎসাহ পাবে, আর নিজেকে শেষ না করে ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প লিখতে পারবে।’

শাহীন লিখেছেন, ‘হ্যাঁ, আজ আমি ক্যাডার। আর সেই মহীয়সী নারী আমার বর্তমান অর্ধাঙ্গী- সাথী এবং আমার জীবনের নতুন গল্পের সাথী। যে নারীটাকেই এখন আমি পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি ভালবাসি। আমার স্ত্রীকেও প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে হয়েছে। কিন্তু সে পেরেছিল। কিন্তু সব নারীর সে ক্ষমতা থাকে না বা পরিবেশ-পরিস্থিতিও এক হয় না। আমার প্রাক্তনের বেলায়ও হয়তো তা-ই হয়েছে।’

তার ঘুরে দাঁড়ানোর গল্পের নায়িকা প্রাক্তন নয়, স্ত্রী উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘মানুষের জীবনে প্রাক্তন থাকতেই পারে। আমি চাই না, আপনারা আমার প্রাক্তনকে দোষী করেন বা তার নামে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেন। ওর মতো ও তার পরিবার-পরিজন নিয়ে ভালো থাকুক। আমি এটাই চাই সব সময়। ভালবাসা যা নেয়, কিছু কিছু ক্ষেত্রে বহুগুণ ফিরিয়েও দেয়। পৃথিবীর সকল মানুষ সুখী হোক। ধন্যবাদ।’