Image description

সদ্য কার্যকর হওয়া ‘সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ ২০২৫’ -এর আওতায় মেহেরপুর জেলায় প্রথম মামলা হয়েছে। মামলায় ১৯ আসামির নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তা ছাড়া অজ্ঞাত পরিচয়ে আসামিও রাখা হয়েছে। আসামিদের সূত্রে ও মামলার নথিপত্র থেকে বিষয়টি জানা গেছে।

মুজিবনগর থানায় করা মামলার নথি থেকে জানা যায়, ৩ নভেম্বর বিকেল সাড়ে ৪টায় মুজিবনগর উপজেলার কোমরপুর এলাকায় অভিযান চালায় জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। এ সময় অনলাইন জুয়া ও অর্থপাচার চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়।

তারা হলেন— দেলোয়ার হোসেন দিপু (৪০), সুমন আলী (৩৮) ও সাকিবুল ইসলাম (২৩)। অভিযান পরিচালনা করেন ডিবি শাখার পরিদর্শক মুহাদ্দিদ মোর্শেদ চৌধুরী ও শিমুল কুমার দাস।

ডিবির ভাষ্য অনুযায়ী, এ চক্রটি মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া ও আশপাশের এলাকায় অনলাইন জুয়া ও অবৈধ ই-লেনদেনের নেটওয়ার্ক চালাত। মামলার এজাহারে গ্রেপ্তার তিনজন ছাড়াও আরও ১৬ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।

তারা হলেন— কোমরপুর গ্রামের মুকুল, শুভ (২২), প্রসেনজিৎ হালদার (২৫), আক্তারুজ্জামান ফিলসন, শামীম (৩০), মহাজনপুর গ্রামের মিঠু (৪০) ও সোহাগ (৩৮), গোপালপুর গ্রামের বদরুদ্দৌজা রয়েল (৩৭), রসিকপুর গ্রামের সিরাজ (৩৬), মোনাখালী গ্রামের মাহফুজুর রহমান (২১), গাংনী উপজেলার গাড়াডো গ্রামের তুলিপ হোসেন (৩০), মেহেরপুর সদর উপজেলার বামন পাড়ার রঞ্জু ও রাজু, কোর্ট পাড়ার মো. সাজু, শেখ পাড়ার পনির (২৪) এবং স্টেডিয়াম পাড়ার বাপ্পি (৩০)। মামলায় আরও কিছু অজ্ঞাতনামা আসামিও রাখা হয়েছে।

নথি অনুযায়ী, এ চক্র আন্তর্জাতিক অনলাইন ক্যাসিনো প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে দেশে-বিদেশে টাকা পাচার করত। তারা বিকাশ, নগদ, রকেট ও উপায় অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে কোটি টাকার লেনদেন চালাত। ফেসবুক ও টেলিগ্রাম গ্রুপে দ্রুত আয়ের প্রলোভন দেখিয়ে সাধারণ মানুষকে ফাঁদে ফেলা ছিল তাদের কৌশল।

অভিযানস্থল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে একটি টয়োটা প্রিমিও গাড়ি, চারটি স্মার্টফোন, মোবাইল ব্যাংকিং সিম, লেনদেন-সংক্রান্ত নথি ও অন্যান্য ডিজিটাল প্রমাণ। দিপুর বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে পাওয়া যায় স্যামসাং গ্যালাক্সি এস২৩ আল্ট্রা, ডাচ-বাংলা ব্যাংকের তিনটি কার্ড ও দুটি পেনড্রাইভ।

এ ঘটনায় মুজিবনগর থানায় সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ ২০২৫-এর ২০(২), ২৪(২) ও ২৭(২) ধারায় মামলা হয়েছে। মামলায় ১৯ আসামির নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তা ছাড়া অজ্ঞাত পরিচয় আসামিও রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে কিছু বলা হয়নি।

উল্লেখযোগ্য যে, মামলার আসামি পনির ও তুলিপ হোসেনের বিরুদ্ধে অর্থপাচার-সম্পর্কিত একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন সম্প্রতি দৈনিক কালবেলায় ‘ফ্রিল্যান্সার সেজে হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার’ শিরোনামে প্রকাশিত হয়েছে।