বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে মারামারির ঘটনায় দুই বিভাগের চার শিক্ষার্থীকে ছয় মাসের জন্য বহিষ্কারাদেশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বহিষ্কৃত চার শিক্ষার্থীর মধ্যে তিনজন একাউন্টটিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের এবং একজন মার্কেটিং বিভাগের। একই সঙ্গে দুই বিভাগের আরও ২১ শিক্ষার্থীকে অভিভাবকদের নিয়ে মুচলেকা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
গত বুধবার (২২ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয়ের অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মো. মুহসিন উদ্দীনের স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে শিক্ষার্থীদের শাস্তির বিষয়টি জানানো হয়েছে। এর আগে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯১তম সিন্ডিকেট সভায় শিক্ষার্থীদের এই বহিষ্কারাদেশের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীরা হলেন- অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো. শাওন শেখ এবং ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সাজ্জাদ হোসেন। উভয়কেই ছয় মাস বা এক সেমিস্টার বহিষ্কারাদেশ দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া, আরও দুই শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারাদেশের পাশাপাশি অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। একাউন্টিং বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী তরিকুল ইসলাম নয়ন, যাকে ছয় মাসের বহিষ্কারাদেশ অথবা ৪০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আরেক শিক্ষার্থী হলেন- মার্কেটিং বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী শাহারিয়ার শাওন, তাকে ছয় মাসের বহিষ্কারাদেশ অথবা ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বহিষ্কারাদেশে আরও জানানো হয়, বহিষ্কৃত চারজন শিক্ষার্থীসহ মার্কেটিং বিভাগের ১০ জন শিক্ষার্থী এবং অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের ১১ জন শিক্ষার্থীকে তাদের অভিভাবকসহ আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের সামনে উপস্থিত হয়ে মুচলেকা দিতে হবে।
এই মুচলেকায় উল্লেখ থাকবে যে, ভবিষ্যতে তারা কোনো শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ড বা অসদাচরণ করলে তাকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চূড়ান্ত বহিষ্কার করা হবে এবং তাতে তাদের কোনো আপত্তি থাকবে না। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে মুচলেকা দিতে ব্যর্থ হলে তাদের চলমান শিক্ষা কার্যক্রমে অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া হবে না বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
মার্কেটিং বিভাগের ১০শিক্ষার্থী হলেন- আফ্রিদি হাসান, আজিজুল ইসলাম চয়ন, আলিফ হোসাইন নয়ন, মো. আশিক ইলাহি, মো.সবুজ মিয়া, হাজ্জাজ হোসেন মিশন, তারা সবাই ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। মো.তাহমিদ হোসেন সিয়াদ, মোহাম্মদ আরাফাতুন নূর হৃদয়, মো.শাহাদাত হোসেন ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এবং আবুল কালাম আজাদ রুমন ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের ১১ জন শিক্ষার্থী হলেন, অর্পণ রায়, আসিফ আহমেদ, প্রীতম মল্লিক ২০২৩-২৪ শিক্ষা বর্ষের শিক্ষার্থী। বর্ণ বরণ সরকার, আশরাফুল হক চৌধুরী, চিরঞ্জিত কুমার সাহা, লাদেন মিয়া (সাদমান), কল্যাণ মজুমদার ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। সেফাত আহমেদ খান, মো. আব্দুল গাফফার, সুরজ আহমেদ শিশির ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মো. মুহসিন উদ্দীন বলেন, ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে মারামরির ঘটনায় তদন্ত কমিটি প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল তাদের উপর শাস্তি আরোপ করেছে।
প্রসঙ্গত, গত ১২ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস এবং মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থীদের ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন নির্মাণাধীন বিটাক ভবনের বালুর মাঠে সংঘর্ষের ঘটনায় এই শাস্তি দিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।