
ফরিদপুরের ভাঙ্গায় সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্বিন্যাস ও পুলিশের করা মামলার প্রতিবাদে উপজেলার গোলচত্বর ও আশপাশের এলাকায় উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
বিক্ষোভকারীরা আজ সোমবার দুপুরে ভাঙ্গা উপজেলা পরিষদ ও ভাঙ্গা থানা ও ভাঙ্গা হাইওয়ে থানায় ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়। ভাঙ্গা অফিসার্স ক্লাবে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। বন্ধ হয়ে যায় ঢাকার সাথে দক্ষিণবঙ্গের ২১ জেলার পুরোপুরি যোগাযোগ ব্যবস্থা। সেখানে সাংবাদিকরা তাদের দায়িত্ব পালন করতে গেলে তাদেরও বাধা দেওয়া হয়। এ ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হয়।
বিক্ষোভকারীদের তাণ্ডব থামাতে পুলিশের একটি দল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এগিয়ে গেলে তারা জনতার ধাওয়ার মুখে পড়ে। পরে তারা পাশের মডেল মসজিদে আশ্রয় নেয় বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা।
এ সময় ভাঙ্গা থানা ঘেরাওসহ পুলিশের একাধিক গাড়ি ভাঙচুর ও একটি গাড়িতে আগুন দেওয়া, এপিবিএনকে লক্ষ্য করে ইট পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে।
ফরিদপুরের ভাঙ্গায় সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্বিন্যাস ও পুলিশের করা মামলার প্রতিবাদে উপজেলার গোলচত্বর ও আশপাশের এলাকায় উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে। আলগী ও হামিরদী ইউনিয়ন ছাড়াও ভাঙ্গার অন্য যে বাকি ৯টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার স্থানীয়রা একযোগে সমর্থন জানিয়ে এসময় জড়ো হয়। তাদের দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত তারা এ আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলে এই সময় জানিয়েছেন।
এর আগে আজ ভোর থেকে অবরোধ কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ থাকলেও দুপুর ১২টার আগে থেকে ফের তারা সড়ক অবরোধ কর্মসূচি শুরু করেন। পরে দুপুর ১টার পর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে হাজার হাজার মানুষ জড়ো হয়ে একযোগে হামলা চালায় সরকারের বিভিন্ন স্থাপনায়। এ সময় ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়। সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আন্দোলনকারীদের বাধা দিলে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। ক্ষতিগ্রস্ত হয় সরকারি বিভিন্ন স্থাপনা।
হাইওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ রোকিবুজ্জামান জানান, ভাঙ্গা থানা ঘেরাওসহ একটি গাড়িতে আগুন ও কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করে বিক্ষোভকারীরা। এ ছাড়া ইউএনও ও নির্বাচন কমিশন অফিসে আগুন দেওয়াসহ সেখানে থাকা কয়েকটি গাড়ি ও আটটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর চালায় তারা।
বিষয়টি নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মিজানুর রহমান জানান, তারা কার্যালয় থেকে নিরাপদ স্থানে আছেন। কারও ওপর হামলার ঘটনা ঘটেনি। তবে ইউএনও কার্যালয়ের কিছু অংশে ভাঙচুর করা হয়েছে। নির্বাচন কার্যালয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে আন্দোলনকারীরা।
সবশেষ খবর অনুযায়ী, আজ বিকেল সাড়ে ৩টার পর থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করে। এ সময় স্বল্প পরিসরে যান চলাচল করতে দেখা যায় মহাসড়কে।
জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. কামরুল হাসান মোল্যা বলেন, ‘আমরা বিক্ষুব্ধদের শান্ত করার চেষ্টা করছি। আসন পুনর্বিন্যাসের বিষয়টি নির্বাচন কমিশনে জানানো হয়েছে। নির্বাচন কমিশন থেকে আমাদের বলা হয়েছে দ্রুত প্রতিবেদন দিতে। আমরা দ্রুত প্রতিবেদন দিলে আশা করি দু-একদিনের মধ্যে একটা সমাধান হবে।’