
আমি আগে ভেবেছিলাম ডাকসু নির্বাচন বাইরে কোনো প্রভাব ফেলবে না। কিন্তু আমার ধারণা সম্পূর্ণ ভুল প্রমাণিত হয়েছে।
গতকাল আমি আর Arif Adnan ভাই সন্ধায় ঝাল মুড়ি খেতে বেরিয়েছিলাম। পাশেই ষাটোর্ধ লুঙ্গি পরা ডাবওয়ালা পাশের রিকসাওয়ালাকে জিজ্ঞেস করলেন "ভোট হয়ে গেছে?"
রিকশায়ালা বা আরেকজন ভ্যানচালক বললেন "ভোট তো সেই ৪ টায় শেষ, এখন গণনা চলছে।"
তখন আমি প্রথমে বুঝতে পারলাম ডাকসু নির্বাচনটা জনমনে চিন্তার খোরাক জুগিয়েছে।
আজ সারাদিন ৩ টা চায়ের দোকানে গিয়েছিলাম। দুপুরে আমার সাথে ছিল Mijanur Mijan তার সাথে চা খাচ্ছিলাম। চায়ের দোকানে ৪/৫ জন আড্ডা দিচ্ছে। সবাই নিম্ন আয়ের মানুষ বোঝা যাচ্ছে। তাদের আলোচনার বিষয়- শিবিরের ভূমিধ্বস বিজয়। সামনে শিবির এই করবে সেই করবে। একজন তো বললেন শিবির সামনে সরকার গঠন করে ফেলবে!
দুনিয়া সব সময় জয়ীদের পক্ষে থাকে। নির্বাচনে একটা বড় ফ্যাক্টর- কে জয়ী হবে তা আগে ধারণা করা। বাংলাদেশের অনেক মানুষ জামায়াতের সফটকোর সাপোর্টার হয়েও জামায়াতকে ভোট দেয় না।
একদলের ধারণা জামায়াতকে ভোট দিলে ভোট 'নস্ট' হয়ে যাবে। তারা ভোট 'নস্ট' না করে অন্য দলকে ভোট দেয়, বিশেষ করে যারা সম্ভাব্য বিজয়ী প্রার্থী তাদেরকে ভোট দেয়।
আরেক পক্ষ 'কস্ট করে' ভোট দিতেই যায় না। তারা মনে করে জামায়াতকে ভোট দিয়ে কী লাভ? ভোট দিলেও তারা হারবে। অনেকের বাড়ি দিনাজপুর, থাকে ঢাকায়। এত টাকা খরচ করে একদিনের জন্য ভোট দিতে দিনাজপুরে না গিয়ে বাসায় ঘুমানোই ভালো। ঢাকায় ৩ কোটি ভোটারের মধ্যে ২ কোটির বেশি ঢাকার বাইরের ভোটার। এর মধ্যে খুব বেশি হলে ৫০ লাখ মানুষ ভোট দিতে এলাকায় যাবে। বাকীরা কস্ট করে যাবে না।
ডাকসু জামায়াতকে ভোট দিলে ভোট নস্ট হবে- এই ন্যারেটিভ ভেঙ্গে দিয়েছে। এখন চায়ের দোকানে জামাত শিবির নিয়ে আলোচনা হয়। চায়ের দোকানে সব কিছু বাড়িয়ে, ফুলিয়ে ফঁপিয়ে প্রচার করা হয়, তিলকে তাল বানানো হয়। যেমন আজকের দুপুরের চায়ের দোকানের আলোচনা শুনে মনে হবে জামায়াত নেক্সট ইলেকশনে জিতে যাচ্ছে। এটা মনে করলে অনেক দুদুল্যমান ভোটার জামায়াতকে ভোট দিতে পারে যেটা আগে দিতো না।
গতকাল সন্ধ্যার পর থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আমাকে অনেকেই ফোন করে ডাকসুর আপডেট জানতে চেয়েছিলেন। তখন বুঝলাম ডাকসু নিয়ে দেশের সবারই অনেক আগ্রহ আছে।