
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুল্ক ইস্যুতে তৃতীয় দফার আলোচনার প্রথম দিনের বৈঠক নিয়ে আশাবাদী বাংলাদেশ। যেখানে ধারণা মিলেছে বাংলাদেশের শুল্ক কমানোর বিষয়ে। ওয়াশিংটনের বাংলাদেশ দূতাবাসের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা চ্যানেল 24 কে এমন তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ওয়াশিংটনের বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বৈঠকে দেশটির বাণিজ্য প্রতিনিধি- ইউএসটিআরের কাছে বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে বাংলাদেশের গৃহীত পদক্ষেপ তুলে ধরা হয়েছে। যাতে প্রতিনিধিদের খানিকটা আশ্বস্ত মনে হয়েছে। তবে পরবর্তী দু’দিনের বৈঠকে বিষয়টি চূড়ান্ত হতে পারে।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে স্থানীয় সময় দুপুর সাড়ে ১২টায় এই বৈঠক শুরু হয়, যা চলে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত। তিন দিনের এই আলোচনা বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
আলোচনায় বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। সেই সঙ্গে বৈঠকে আরও রয়েছেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান, বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নাজনীন কাউসার চৌধুরী। এছাড়াও বৈঠকে ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাসের শীর্ষ কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন। অন্যদিকে বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দপ্তরের কর্মকর্তারা ভার্চুয়ালি বৈঠকে অংশ নেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত ২ এপ্রিল বাংলাদেশসহ ৬০টি দেশের জন্য পাল্টা শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন। পরবর্তীতে ৯ এপ্রিল সবার জন্য ১০ শতাংশ বাড়তি শুল্ক রেখে সব দেশের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপ ৩ মাসের জন্য স্থগিত করে ট্রাম্প প্রশাসন। তবে স্থগিতাদেশের সময় শেষ হওয়ার আগেই ৮ জুলাই ট্রাম্প নতুন করে ঘোষণা দিয়ে জানান, বাংলাদেশের জন্য পাল্টা শুল্ক হার হবে ৩৫ শতাংশ। দেশভিত্তিক পাল্টা শুল্ক কার্যকরের পর সবার জন্য বাড়তি ১০ শতাংশ তার সঙ্গে সমন্বয় হবে।
ট্রাম্পের ঘোষণা অনুযায়ী আগামী ১ আগস্ট থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশের পণ্যে ৩৫ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপ কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে। এর অংশ হিসেবে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে পণ্য আমদানি বাড়ানো এবং তাদের পণ্যে শুল্ক কমানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে পাল্টা শুল্ক কমানোর চেষ্টা করছে। ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন শুল্কনীতির আগে দেশটিতে বাংলাদেশের পণ্যে গড়ে সাড়ে ১৫ শতাংশ শুল্ক ছিল। বর্তমানে যা ২২ থেকে ২৩ শতাংশ।
উল্লেখ্য, ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় ভিয়েতনাম ২০ শতাংশ, ইন্দোনেশিয়া ও ফিলিপাইন ১৯ শতাংশ, জাপান ১৫ শতাংশ, যুক্তরাজ্য ১০ শতাংশ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ১৫ শতাংশ শুল্ক হারে সমঝোতা করতে পেরেছে।
অন্যদিকে বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে বাংলাদেশ ইতোমধ্যে আগামী কয়েক বছরে যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানি বোয়িংয়ের কাছ থেকে ২৫টি উড়োজাহাজ কেনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এছাড়া সম্প্রতি দেশটি থেকে পাঁচ বছর মেয়াদে প্রতিবছর ৭ লাখ টন করে গম আমদানি করতে এমওইউ সই করেছে। এর পাশাপাশি সয়াবিন, এলএনজি, তুলা, সামরিক সরঞ্জামসহ বিভিন্ন পণ্য আমদানি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।