Image description

তিনটি দলকে কেন্দ্র করেই সবকিছু করা হচ্ছে। এমনকী জুলাই সনদ নিয়ে যেটা করার কথা ছিল, তা হয়নি। বরং আগামী নির্বাচনে এটি নিয়ে অনেকেই তর্কের ক্ষেত্র তৈরি করতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী সাইয়েদ আবদুল্লাহ। এক বেসরকারি টকশোতে জুলাই সনদ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মতভেদ ও দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে কথা বলেন তিনি।

সাইয়েদ আবদুল্লাহ বলেন, ‘দিনশেষে এটার ভেতরে কি সাবস্ট্যান্স আছে তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হলো সামনের ইলেকশনকে কেন্দ্র করে এইটা নিয়ে বার্গেনিং টুল বানানো। আমরা ডানে বামে অনেক কথা বলতে পারতাম। আমি একদম স্ট্রেট ফরওয়ার্ড একটা লাইনেই এটার জবাবটা দিয়ে দিলাম। দেখবেন এইটাকে কেন্দ্র করে মূলত জুলাই সনদকে নিয়ে যেটা দেখা যাচ্ছে, প্রত্যেকেরই ভিশন আছে এইটা নিয়ে ইলেকশনকে কেন্দ্র করে রেখে ওই অনুপাতে কমেন্ট করা যাতে ইলেকশনের জন্য যে লেভারেজটা পাওয়ার সম্ভব বা দরকার তাদের নিজ নিজ স্বার্থে, সেটার কথাটা তারা যাতে বলতে পারে।

ওই বলার অপশনটাকে তারা সিলেক্ট করবে জুলাই সনেদে। এটা পছন্দ হয়েছে অথবা হয় নাই অথবা একটা দল পছন্দ করছে আরেকটা দল পছন্দ করছে না। প্রত্যেকটা দলের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে যদি দেখেন কিছু কিছু জায়গায় আপত্তি তোলার অবশ্যই জায়গা আছে। আমি যখন পড়েছি বিভিন্ন এঙ্গেল থেকে পড়ার চেষ্টা করেছি।

জুলাই সনদ নিয়ে  প্রতিটি দলের আলাদা আলাদা দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে জানিয়ে সাইয়েদ আবদুল্লাহ বলেন, ‘প্রথমবার আমি যখন পড়েছি আমার কাছে মনে হয়েছে এটা সরকারের এঙ্গেলটা কি? আরেকবার যখন পড়েছি এনসিপির এঙ্গেল থেকে, ওরা যারা যারা কথা বলে ওই কথার সাথে মিলিয়ে পড়ার চেষ্টা করেছি। বিএনপি যা কথা বলে, জামাত যা যা কথা বলে, পরবর্তী সময়গুলোতে তাদের ওই স্টেটমেন্ট তাদের স্ট্যান্ড এবং ওইটার সাথে মিলিয়ে জুলাই সনদটাকে দেখার চেষ্টা করেছি। আমার কাছে কেন যেন মনে হয় যে ড্রাফটটা করা হয়েছে ড্রাফটা তো পাবলিক করা হয়েছে, এইটা নিয়ে যদি আপনি বাংলাদেশের চোখ দিয়ে দেখেন প্রত্যেকেরই কিছু না কিছু অবজারভেশন থাকাটা উচিত। আমার কাছে কেন যেন মনে হচ্ছে এই জায়গায় কিছু কিছু অবজারভেশন থাকবে। প্রত্যেকটা দলেরই হয়তোবা বিএনপির থাকবে এনসিপির থাকবে জামায়াতের থাকবে, এক্স ওয়াই জেড অনেক দলেরই থাকতে পারে।

বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি, সবকিছু তিনটি রাজনৈতিক দলকে কেন্দ্র করেই হচ্ছে উল্লেখ করে সাইয়েদ আবদুল্লাহ বলেন, ‘সবকিছু শুধুমাত্র এই তিনটা দলকেই প্রাধান্য দিয়ে করতে হবে, আমি কিন্তু এটাও মনে করি না। প্রত্যেকটা সভা সেমিনার, বিভিন্ন জায়গায় রাষ্ট্রীয়ভাবে দেখবেন যখনই আলোচনাটা করা হচ্ছে এই তিনটা দলকেই প্রায়োরিটি দিয়ে একটা জায়গায় বসানো হচ্ছে। অন্যান্য দল কোথায়? বাংলাদেশে নিবন্ধিত দল সংখ্যা কত? প্রায় ৫০টার মতো। সেই জায়গায় যখন আপনি এই তিনজনকে নিয়েই সব কাজটা করছেন, তার ভিতরে একটা কিন্তু এখন পর্যন্ত নিবন্ধিত না। তার মানে অন্য আরো অনেকগুলা দল তারা আপত্তি তুলতেই পারে। আমরা তো নিবন্ধিত দল। আমরা কই? তার মানে আমাদের এই যে প্ল্যান দেখেন শুধু তিনটা এঙ্গেল ধরছি আমরা। এঙ্গেল কিন্তু আরো অনেকগুলা দাঁড়াইতে পারে।’

জুলাই সনদ নিয়ে প্রত্যাশা সেভাবে পূরণ হয়নি জানিয়ে সাইয়েদ আবদুল্লাহ বলেন, ‘আমি যেটা শঙ্কিত সেটা হলো গভমেন্টের টাইম ফ্রেমটা। এই জুলাই সনদ সবার ভেতরে ঘোষণা দিব অথবা ৩৬শে জুলাই মানে যেটাকে আমরা বলছি ৫ আগস্ট তার ভেতরে ঘোষণা দিব, অমুক তমুক! এইটা খুবই দুরহ একটা ব্যাপার হয়ে যেতে পারে। সেক্ষেত্রে প্রথমেই বলেছি, অনেক আগে থেকেই যেটা করা সম্ভব ছিল, কেন না কেন রশি টানাটানি করতে করতে হয়তো বা যেটা হওয়ার কথা ছিল তার চেয়েও বড় একটা ব্যাকগ্রাউন্ড নিয়ে কাজ করার চেষ্টা করা হয়েছে। আল্টিমেটলি অনেক কিছুই হয় নাই।’