
সিলেটে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সক্রিয় কর্মী ও সিলেট মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের বিমানবন্দর থানা ইউনিটের যুগ্ম আহ্বায়ককে মাথা ন্যাড়া করে লাঞ্ছিত, নির্যাতন ও বহিষ্কার করা হয়েছে। তিনি ৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির ছাত্রবিষয়ক সম্পাদকও। ইমদাদুল ইসলাম মিজান নামের এই জুলাই যোদ্ধাকে 'ছিনতাইকারী' অপবাদ দিয়ে এসব করা হয়েছে। এ ঘটনায় তোলপাড় শুরু হয়েছে।
শুক্রবার (৪ জুলাই) রাতে সিলেট মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি মাহবুবুল হক চৌধুরী ও সদস্য সচিব আফছার খান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তাকে বহিষ্কারের খবর জানানো হয়।
মিজান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন এবং মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন। এখন তাকে ছিনতাইকারী সাজিয়ে সামাজিক মাধ্যমে ভিডিও ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে, যা ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা সৃষ্টি করেছে।
মিজান নিজেকে ষড়যন্ত্রের শিকার হিসেবে দাবি করে বলেন, ‘আমার এলাকার এক ব্যাটারিচালিত রিকশাড্রাইভারকে দিয়ে নাটক সাজানো হয়। আমাকে ২ জুলাই সন্ধ্যায় পিস্তল ও চাকু দিয়ে আম্বরখানা সাহেদের কলোনিতে ডেকে নিয়ে চরম নির্যাতন চালানো হয়।’
তিনি অভিযোগ করেন, তদন্ত ছাড়াই, কোনো কারণ দর্শানোর নোটিশ না দিয়েই কেন্দ্রের নির্দেশনায় তাকে বহিষ্কার করা হয়।
মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মাহবুবুল হক চৌধুরী জানান, কেন্দ্রের নির্দেশে মিজানকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে থাকলেই চরিত্র সঠিক থাকে, তা বলা যায় না।’
মিজানের অভিযোগ, তিনি ছাত্রলীগের ডেভিলদের ব্যাপারে প্রতিবাদ করায় নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।
অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘প্রভাবশালী মঞ্জুরুল করিম তুহিনের আহ্বানে সাড়া না দেয়ার কারণে আমাকে নির্যাতন করা হয়েছে।’
তিনি জানান, দু’লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয় এবং নির্যাতনের পর মোটরসাইকেলও ছিনিয়ে নেয়া হয়।
এদিকে, এই ঘটনাটি নিয়ে দলের ভেতরেই নানা আলোচনা হচ্ছে। কেউ এটিকে দলীয় কোন্দলের বহিঃপ্রকাশ বলছেন, আবার কেউ বলছেন, এটি শৃঙ্খলা রক্ষার আড়ালে প্রতিশোধের রাজনীতি।
বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে অনেকেই এ বিষয়ে মন্তব্য করেছেন। একজন মন্তব্য করেছেন, ‘মিজান নিজের জীবন বাজি রেখে দলের জন্য সংগ্রাম করে গেল, গুলিবিদ্ধ হয়ে আজ নোংরা গ্রুপিংয়ের স্বীকার হয়ে রাজনীতির মাঠে বলির পাঠা হয়ে গেল।’