
ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের প্রভাবে এরই মধ্যে অস্থির হয়ে উঠেছে বিশ্বের জ্বালানি তেলের বাজার। যুদ্ধের তীব্রতা বাড়লে বিশ্বের জ্বালানি তেল সরবরাহের খুবই গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক সমুদ্র রুট হরমুজ প্রণালি বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এর আগে এমন হুমকি দিয়েছে ইরান। এতে বিশ্ব জ্বালানি তেলের বাজারে আরো অস্থিরতা দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন জ্বালানি খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
গত শুক্রবার ইরানে ইসরায়েলের হামলার পরপরই জ্বালানি তেলের দাম এক লাফে ৭ শতাংশের বেশি বেড়েছে। গত শনি ও রবিবার জ্বালানির বাজার বন্ধ থাকায় নতুন পরিস্থিতি বোঝা যাবে আজ সোমবার।
জ্বালানি বিশ্লেষকরা বলছেন, ইরান যদি হরমুজ প্রণালি দিয়ে জাহাজ চলাচল বন্ধ করে দেয়, তাহলে বাংলাদেশের জ্বালানি তেল আমদানি খাতে বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) চেয়ারম্যান (সচিব) মো. আমিন উল আহসান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে গেলে সেটার কিছুটা প্রভাব পড়লেও হরমুজ প্রণালি নিয়ে যতটা আতঙ্ক তৈরি হয়েছে ততটা ঝুঁকি আমরা দেখছি না।
বাজারসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং ইকোনমিকস জানায়, ইরান-ইসরায়েল হামলা-পাল্টাহামলা শুরু হওয়ার পর গত শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের ডব্লিউটিআই অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম ৭.২৬ শতাংশ বেড়ে প্রতি ব্যারেল হয় ৭২.৯৮ ডলার। এক সপ্তাহে এই তেলের দাম বেড়েছে ১৩.০১ শতাংশ।
এ বছরের শুরুর পর থেকে বৈশ্বিক সমুদ্রপথে বাণিজ্যকৃত জ্বালানির ৩৪ শতাংশ হরমুজ দিয়েই চলেছে, যা বন্ধ হলে বিশ্বব্যাপী জ্বালানিসংকট দেখা দিতে পারে। এর প্রভাবে এরই মধ্যে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দামে বেড়েছে। ব্রিটিশ মেরিটাইম সিকিউরিটি কম্পানি অ্যামব্রে হুঁশিয়ারি দিয়ে জানিয়েছে, সামরিক সংঘর্ষের আশঙ্কায় জাহাজগুলো যেন হরমুজ প্রণালি ও ইরানি জলসীমা এড়িয়ে চলে। তারা বিকল্প রুট বেছে নেওয়ারও পরামর্শ দিয়েছে। সেই সঙ্গে জাহাজ মালিকদের তাদের জাহাজের সঙ্গে কোনো ইসরায়েলি সংশ্লিষ্টতা আছে কি না, তা যাচাই করার পর আরব সাগর, ওমান উপসাগর কিংবা পারস্য উপসাগরে প্রবেশের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ ওশান গোয়িং শিপ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান আজম যে চৌধুরী বলেন, ‘হরমুজ প্রণালি বন্ধ হয়ে গেলে জাহাজ ঘুরপথে বিকল্প রুটে আসতে হবে। এতে স্বাভাবিকভাবেই পণ্য পরিবহন ব্যয় বেড়ে যাবে। এতে বাংলাদেশসহ যেসব দেশ পুরোপুরি তেল আমদানিনির্ভর, সেসব দেশ মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’