Image description

রাজধানীর মোহাম্মদপুরের চাঁদ উদ্যানে যৌথ বাহিনীর সঙ্গে ‘গোলাগুলি’র ঘটনায় দুটি মামলা হয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার মোহাম্মদপুর থানায় হত্যা ও অস্ত্র আইনে মামলা দুটি হয়। উভয় মামলার বাদী পুলিশ। অস্ত্র আইনের মামলায় গ্রেপ্তার পাঁচজনের রিমান্ড চেয়েছে পুলিশ।

গত বুধবার মধ্যরাতে চাঁদ উদ্যানে যৌথ বাহিনীর সঙ্গে ‘গোলাগুলি’র সময় দুই ব্যক্তি নিহত হন। নিহত ব্যক্তিরা হলেন জুম্মন (২৫) ও মিরাজ হোসেন (২৬)। এ সময় অস্ত্র-গুলিসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁরা হলেন মো. মিরাজ (২৫), আল আমিন (২৪), মোহাম্মদ হোসেন (২৩), মোমিনুল (২০) ও মেহেদি হাসান (১৯)।

পুলিশ ও যৌথ বাহিনী বলেছে, চাঁদ উদ্যান এলাকায় ছিনতাইয়ের প্রস্তুতির তথ্যের ভিত্তিতে এই অভিযান চালানো হয়েছিল। নিহত, গ্রেপ্তার ও পালিয়ে যাওয়া ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে।

আজ শুক্রবার মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী ইফতেখার হাসান প্রথম আলোকে বলেন, হত্যা মামলায় বলা হয়েছে, বুধবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে যৌথ বাহিনী চাঁদ উদ্যান এলাকায় অভিযান চালায়। এ সময় একতলা একটি বাড়ির টিনের চালার ওপর থেকে সন্ত্রাসীরা যৌথ বাহিনীকে লক্ষ্য করে গুলি চালান। আত্মরক্ষার্থে যৌথ বাহিনী পাল্টা গুলি চালায়। পরে বাড়িটিতে তল্লাশি চালিয়ে টিনের চালার ওপর থেকে জুম্মন ও মিরাজের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

অন্য মামলা প্রসঙ্গে ওসি ইফতেখার হাসান বলেন, চাঁদ উদ্যানের বাড়িটি থেকে একটি পিস্তল, চারটি গুলি, একটি চাপাতিসহ পাঁচজনকে আটক করা হয়। অন্যরা পালিয়ে যান। এই ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা হয়েছে। আটক পাঁচজনকে এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আজ ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে পাঠানো হয়েছে। তাঁদের প্রত্যেকের সাত দিন করে রিমান্ডের আবেদন জানানো হয়েছে।

 
মোহাম্মদপুরের চাঁদ উদ্যান এলাকায় যৌথ বাহিনীর অভিযানে উদ্ধার হওয়া পিস্তলছবি: আইএসপিআর

জুম্মন ও মিরাজের লাশ উদ্ধার করে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছিল। মর্গ সূত্র জানায়, দুজনের পেটে একাধিক গুলির চিহ্ন ছিল। গতকাল সন্ধ্যায় মরদেহ দুটি স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করেছে পুলিশ।

পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, জুম্মনের দুটি স্থায়ী ঠিকানা পাওয়া গেছে। একটি শরীয়তপুরের গোসাইরহাট, আরেকটি মোহাম্মদপুরের শাহজালাল হাউজিং। তাঁর বাবার নাম আবদুস সাত্তার। আর মিরাজের বাড়ি ভোলার চরফ্যাশনে। বাবার নাম মো. শাহজাহান।

 

পুলিশের মোহাম্মদপুর অঞ্চলের সহকারী কমিশনার মেহেদী হাসান প্রথম আলোকে বলেন, নিহত, গ্রেপ্তার ও পালিয়ে যাওয়া ব্যক্তিরা একতলা বাড়িটির ছোট খুপরি ভাড়া নিয়ে থাকতেন। অভিযানের বিষয়টি টের পেয়ে কয়েকজন টিনের চালার ওপর উঠে গিয়েছিলেন। যৌথ বাহিনী হাতমাইকে আত্মসমর্পণের জন্য আহ্বান জানিয়েছিল। কিন্তু আত্মসমর্পণ না করে টিনের চালায় উঠে যাওয়া ব্যক্তিরা যৌথ বাহিনীর ওপর গুলি করেন। তখন যৌথ বাহিনীও পাল্টা গুলি চালায়।

নিহত জুম্মনের বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুর থানায় ৯টি মামলা রয়েছে। আর একই থানায় মিরাজের বিরুদ্ধে আছে চারটি মামলা। এই তথ্য জানিয়ে পুলিশের মোহাম্মদপুর অঞ্চলের অতিরিক্ত উপকমিশনার জুয়েল রানা বলেন, যৌথ বাহিনীর ওপর হামলাকারী প্রত্যেকের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা আছে।