
শাফিন রহমানঃ (Shafin Rahman )
"এনবিআরের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‛সেন্ট্রাল ইন্টিলিজেন্স সেল'- সিআইসি'র ডাইরেক্টর জেনারেল আহসান হাবিব স্যারের বক্তব্যটা শুনেছেন.?
এই একটা বক্তব্যের ডিপ ইনসাইট উপলব্ধি করার মাধ্যমে আপনি ক্লিয়ার হতে পারবেন, কেনো বর্তমানে ক্যাম্পাস গুলোতে এত দাঙ্গা হাংগামা, কো পা কু পি হচ্ছে কিংবা এদের পেছনে স্ট্রং ব্যাকআপ হিসেবে কারাই বা দাঁড়িয়ে আছে..?
সিআইসির ডিজি জনাব হাবিব স্যার তার বক্তব্যে অত্যন্ত স্পষ্ট করে বলেছেন “মানবসভ্যতার ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ব্যাংক স্ক্যামিং এর ঘটনা ঘটেছে বাংলাদেশে এবং সেটা করেছে এস আলম গ্রূপ”
এস আলম এত হাজার হাজার লক্ষ কোটি টাকা লুট করেছে যে, স্যারের দশ জনের স্পেশাল টিম টুয়েন্টি ফোর স্যাভেন কাজ করেও কুলিয়ে উঠতে পারছে না।
আহসান হাবিব স্যার আরও একটি কথা স্পষ্ট করে বলেছেন “ডিসেম্বরে নির্বাচনের কানাঘুষা শোনা যাচ্ছে; এর ভেতরেই যদি এসব করাপ্টেড অলিগার্কদের আটকানো না যায় তবে এরা ইলেক্টেড পলিটিক্যাল পার্টির সাথে আঁতাত করে আবারও ফিরে আসবে” এবং এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট।
সিআইসি ডিজির বক্তব্য থেকে একটা বিষয় স্পষ্ট- আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের ইন্ডিমেনিটি দেওয়া এস আলম সহ অন্যান্য অলিগারক, সাংস্কৃতিক কর্মী, রাজনীতিবিদ, খেলোয়াড়, সংবাদকর্মী, সামরিক কর্মকর্তা― এরা সবাই এই মুহূর্তে সার্ভাইবাল মুডে আছে। প্রত্যেকেই কোনো না কোনোভাবে সাফার করছে। কেউ অর্থনৈতিকভাবে, কেউ রাজনৈতিকভাবে, কেউ সামাজিকভাবে। কিন্তু কতকাল আর তারা এভাবে সার্ভাইবাল মুডে থাকতে চাইবে.? অবশ্যই বেশিদিন নয়। কারন তাদের প্রত্যেকের পাওয়ার আছে। একেকজনের পাওয়ারের প্যারামিটার একেকটা। কারো টাকা, কারো পদমর্যাদা, কারো অস্ত্র।
ইংরেজিতে একটা কথা আছে “Power isn't binary. It's fluid and multifaceted”.
আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের ইন্ডিমেনিটি দেওয়া নানান পেশার ওই ব্যক্তিরা এখন নতুন এক ফ্যাসিস্টের জন্ম দিতে চায়; কারন নতুন বাংলাদেশে আওয়ামী ফ্যাসিজম গন কেইস। কোনো বুদ্ধিমান শয়তান গন কেইসকে রিকল করতে চাইবে না।
ফ্যাসিজমের ল্যাস্পেন্সার এই অলিগার্করা সাইকোলজিক্যালি স্লেভরি মুডে থাকতে পছন্দ করে; তাই তারা যত দ্রুত সম্ভব বর্তমান সার্ভাইবাল মুড থেকে মুক্তি পেতে এমন একটি পলিটিক্যাল ফর্মেশনকে পাওয়ারে দেখতে চাইবে; যারা তাদের অতীত অন্যায়কে লাইমলাইটে না এনে বরং সেটাকে টাকার অঙ্কে নেগোসিয়েট করবে এবং তাদের জন্য কমফোর্ট জোন তৈরি করবে।
আপনাদের কি মনে হয়না, সেইসব অলিগার্করা এমন একটি পলিটিক্যাল ফর্মেশনকে ইতিমধ্যেই খুঁজে পেয়েছে; নয়ত গত পনেরো বছরে যারা ঘর থেকে বের হতে পারেনি আজ তাদের হাতে রামদা দেখা যায় কীভাবে?
আপনাকে বুঝতে হবে, ছয় মাস পরে এসে রামদা হাতে তোলার রাজনীতি করার সাহস কারা জুগিয়েছে? এর পেছনে বড় ক্যালকুলেশন আছে।
আরেকটা উদাহরণ দেই...
‛আয়নাঘর’― আমরা খুব করে চেয়েছিলাম আয়নাঘর রিভিল হোক। কিন্তু আয়নাঘরের প্ৰকৃত সত্য, ছবি, ভিডিও ক্লিপ রিভিল হয়েছে কি?
- হয়নি।
- কেনো হয়নি.?
সহজ উত্তর- ওয়াকার স্যার চান নাই।
* ওয়াকার স্যার কেনো চান নাই?
* কারন বাংলাদেশ আর্মড ফোর্সেস সহ ল এনফোর্সমেন্ট টিমের মোর দ্যান ৮০% অফিসার আয়নাঘরের সাথে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যুক্ত। কয়জনের বিচার করবে?
জনাব ওয়াকার স্যার সহ ওই সমস্ত অফিসার সারভাইভাল মুডে আছে। তারা প্রত্যেকেই ভীত সন্ত্রস্ত, না জানি কখন কি হয়ে যায় এবং জেনারেল ওয়াকারের সেই গাটস নেই যে পনেরো বিশটাকে ঝুলিয়ে দেবে। তাই তিনি সবাইকে ডিফেন্ড করার জন্য টেকনিক্যালি খেলছেন।
খেলাটা কি ?
দ্রুত ইলেকশন। কারন ইলেকশন হয়ে যত দ্রুত একটা পলিটিক্যাল পার্টিকে টেক ওভার করানো যাবে তত দ্রুত এসব অফিসারদের স্লেভরি মুডে পাঠানো যাবে এবং তাদের সাথে আঁতাত করে নিজেও সেফ জোনে থাকা যাবে। ঠিক যে কথাটা এনবিআরের গোয়েন্দা সংস্থার ডিজি বলেছেন।
আর এটার একচুয়ালাইজেশন ঘটাতেই জেনারেল ওয়াকার স্যার লন্ডন প্রবাসীকে ফোন করে বাংলাদেশে আসার এপ্রোচ করেছেন।
কিন্তু আশার কথা হলো, আমাদের ডক্টর মোহাম্মদ ইউনুস এই খেলায় ব্রেকথ্রু দিয়েছেন।
জেনারেল ওয়াকার যাদের বাঁচানোর মাধ্যমে একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলকে এডভেন্টেজ দিতে চাচ্ছেন, ডক্টর ইউনুস খুব গোপনে তাদের ব্যাপারে আন্তর্জাতিকভাবে লিগ্যাল নোটিশ জারি করাবেন। তখন ওয়াকার স্যারের কিছুই করার থাকবে না। লিগ্যালি'ই ফেস করতে হবে, আর সেটা অসম্ভব।
আপনাদের নিশ্চয়ই মনে আছে ডক্টর ইউনুস রাজনৈতিক দল গুলোকে বলেছিল “আপনারা কি কি সংস্কার চান এবং কি কি সংস্কার চান না স্পষ্ট করে বলুন; আমি সব ওয়েবসাইটে দিয়ে দিব”― এটা তিনি সমস্ত রাজনৈতিক দলের উদ্দেশ্যে বললেও মুলত নির্দিষ্ট একটি রাজনৈতিক দলকেই ইন্ডিকেট করেই বলেছেন এবং ম্যাসেজটা ওয়াকার স্যারকেই দিতে চেয়েছেন।
সেদিন ডক্টর ইউনূসের ওই বোল্ড স্টেটমেন্টে চেকমেট খাওয়ার পর গতকাল এনবিআরের গোয়েন্দা সংস্থ্যার ডিজির বক্তব্যের চেকমেট খেয়েছেন তারা।
যাদের ভরসায় হাতে রামদা ওঠে, তাদেরকেই যদি ফেলে দেওয়া যায় তাহলেই সব ঠান্ডা হবে।
রিমেম্বার, ট্রিগারে কে চাপ দিলো- এটা ম্যাটার করে না। বরং খুঁজে দেখুন, বুলেটের ফান্ডিং কে করেছে।"