Image description
 

যুক্তরাষ্ট্রের বিদেশী সহায়তা সংস্থা ইউএসএইড-এর ২১ মিলিয়ন ডলারের অর্থ বরাদ্দ ভারত নাকি বাংলাদেশের জন্য ছিলো এই বিতর্কের মাঝে তৃতীয় দিনও একই দাবি করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি জানিয়েছেন, ভারতের ভোটার উপস্থিতি বাড়ানোর জন্যই সেই বরাদ্দ করা হয়েছিলো। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম নিউজ ১৮ এই খবর জানিয়েছে।

এর আগে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয় ২০২২ সালের এই ২১ মিলিয়ন ডলারের সহায়তা বরাদ্দ ভারত নয় বরং বাংলাদেশের জন্য ছিলো। এই দাবির প্রেক্ষিতে ট্রাম্পের এই মন্তব্য সামনে আসে।

ভারতের বিরোধী দল কংগ্রেসের দিকে এই বিষয়ে ভারতের নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় বিদেশী হস্তক্ষেপ আনার অভিযোগের আঙ্গুল তুলেছিলো বিজেপি। তাই ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদনে এমন দাবি উঠার পর তারা সেটির বরাতে বিজেপির অভিযোগকে প্রত্যাখ্যান করে।

 

অর্থ বরাদ্দ নিয়ে ট্রাম্প তার দাবি পুনর্ব্যক্ত করে তিরস্কারের সুরে মজা করে বলেন, “২১ মিলিয়ন ডলার আমার বন্ধু প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং ভারতের জন্য ভোটার উপস্থিতি বাড়ানোর লক্ষ্যে যাচ্ছে। আমরা ২১ মিলিয়ন ডলার দিচ্ছি ভারতের ভোটার উপস্থিতি বাড়ানোর জন্য। প্রতিদানে আমরা কী পাবো? আমিও ভোটার উপস্থিতি বাড়াতে চাই।”

ট্রাম্প আরও স্পষ্ট করে বলেন যে, "বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিবেশ শক্তিশালী করার জন্য ২৯ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ করা হয়েছিলো”, যা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদনে করা দাবির সাথে দ্বান্দ্বিক।

বিজেপি ট্রাম্পের এই বক্তব্যের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে শেয়ার করে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে আক্রমণ করেছে। কারণ তারা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের সেই প্রতিবেদনের বরাতে তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে বিজেপির বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙ্গুল তুলেছিলো।

বিজেপির অমিত মালভিয়া টুইট করেছেন, “তৃতীয় দিনেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতের ভোটার উপস্থিতি বাড়ানোর জন্য ইউএসএইডের অর্থায়ন নিয়ে তার দাবি পুনরাবৃত্তি করেছেন। কিন্তু ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস এবং পাগল বামপন্থীরা মনে করেন নিজের দেশের ব্যয়ের ব্যাপারে তার (ট্রাম্প) তুলনায় তারা বেশি ভালো জানেন!"

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের দাবি এবং বিতর্ক

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে প্রকাশিত ইউএসএইডের ফান্ডিং নিয়ে একটি ফ্যাক্ট-চেক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছিল, ২০২২ সালের এই ২১ মিলিয়ন ডলারের সহায়তা বরাদ্দ ভারত নয় বরং বাংলাদেশের জন্য ছিলো। রিপোর্টে আরও বলা হয় যে, এর মধ্যে ১৩.৪ মিলিয়ন ডলার ইতোমধ্যেই বিতরণ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে দাবি করা হয় এই অর্থ মূলত বাংলাদেশে ছাত্রদের মধ্যে রাজনৈতিক এবং নাগরিক কার্যক্রমের জন্য ব্যবহার করা হয়েছে, যারা ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসের নির্বাচনের আগে বিক্ষোভে অংশগ্রহণ করেছিলো।

কংগ্রেস এই প্রতিবেদনের বরাতে বিজেপিকে আক্রমণ করে বলেছে যে তারা নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় বিদেশী হস্তক্ষেপের জন্য কংগ্রেসকে অভিযুক্ত করার আগে সঠিক তথ্য যাচাই করেনি।

তবে ক্ষমতাসীন বিজেপি তাদের নিজস্ব গবেষণার ভিত্তিতে এবং ট্রাম্পের তার দাবি পুনরায় নিশ্চিত করার পর সংবাদ প্রতিবেদনটিকে অসত্য বলে অভিহিত করেছে।

বিজেপির নেতা অমিত মালভিয়া বলেন, “কংগ্রেসের তাড়াহুড়ো করে প্রতিবেদনটির প্রতি তাদের প্রতিক্রিয়া জানানো এটি পরিষ্কার করে দিয়েছে যে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ জোট ভারত বিরোধী বাহিনীকে দেশের প্রতিষ্ঠানগুলিতে অনুপ্রবেশ করতে সাহায্য করেছে।”

ভারত সরকার এই বিষয়টিকে গম্ভীরভাবে উদ্বেগজনক বলে আখ্যায়িত করেছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিদেশী হস্তক্ষেপ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।