Image description
 

দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিতব্য জি–২০ সম্মেলনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা পুনর্ব্যক্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউস স্পষ্ট জানিয়েছে, এ সম্মেলনের কোনো ধরনের আনুষ্ঠানিক আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্র অংশ নেবে না।

 

হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট বলেন, যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ আফ্রিকার জি-২০ বৈঠকের কোনো আনুষ্ঠানিক আলোচনায় অংশ নিচ্ছে না।

তিনি আরও দাবি করেন, দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা যুক্তরাষ্ট্র ও প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে উদ্দেশ্য করে যে মন্তব্য করেছেন, তা মার্কিন প্রশাসন মোটেও প্রশংসা করছে না। 

এর আগে রামাফোসা জানান, শেষ মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্র অবস্থান বদলেছে এবং তাদের অংশগ্রহণকে তিনি ‘ইতিবাচক’ বলে উল্লেখ করেন। তবে যুক্তরাষ্ট্র তা নাকচ করে দিয়ে বলে, তাদের রাষ্ট্রদূত শুধু একটি আনুষ্ঠানিক হস্তান্তর অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন, কারণ আগামী বছর যুক্তরাষ্ট্রই জি–২০ সম্মেলনের আয়োজক—ট্রাম্পের মালিকানাধীন ফ্লোরিডার একটি গলফ ক্লাবে।

দক্ষিণ আফ্রিকার দাবি নাকচ করল ওয়াশিংটন

রামাফোসা দাবি করলেও যুক্তরাষ্ট্রের প্রিটোরিয়া দূতাবাস আগেই জানিয়ে দেয় যে তারা বৈঠকে যোগ দেবে না। দূতাবাসের বার্তায় বলা হয়, দক্ষিণ আফ্রিকার জি–২০ অগ্রাধিকারগুলো মার্কিন নীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক এবং কোনো যৌথ নথিতে যুক্তরাষ্ট্র সম্মতি দিতে পারবে না। 

 

আলোচ্যসূচিতে ছিল—

  • নিম্ন আয়ের দেশগুলোর ঋণ টেকসই করা
  • ন্যায্য জ্বালানি রূপান্তরের জন্য অর্থায়ন
  • অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধির জন্য গুরুত্বপূর্ণ খনিজসম্পদ ব্যবহারের কৌশল।

বিশ্ব বৈঠক থেকে সরে দাঁড়াচ্ছে ট্রাম্প প্রশাসন

২০০৮ সালের আর্থিক সংকটের পর থেকে জি-২০ বৈশ্বিক নেতৃত্বের অন্যতম বড় মঞ্চ হলেও এবার তা বর্জন করছে যুক্তরাষ্ট্র। শুরুতে ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সকে পাঠানোর সিদ্ধান্ত থাকলেও পরবর্তীতে সেটিও বাতিল করা হয়।

জি-২০-এর মতোই ব্রাজিলে চলমান জলবায়ু সম্মেলন (কপ-৩০) থেকেও যুক্তরাষ্ট্র দূরে রয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসন জীবাশ্ম জ্বালানির পক্ষে অবস্থান নিয়ে বৈশ্বিক উষ্ণতা সংক্রান্ত বৈজ্ঞানিক মতকে প্রত্যাখ্যান করে আসছে।  

দক্ষিণ আফ্রিকাকে ট্রাম্পের সমালোচনা

ক্ষমতায় ফেরার পর থেকেই দক্ষিণ আফ্রিকা নিয়ে কড়া অবস্থান নিচ্ছেন ট্রাম্প। দেশটিতে শ্বেতাঙ্গ কৃষকদের ‘হত্যা করা হচ্ছে’—এমন খণ্ডিত দাবি তিনি আবারও তুলেছেন। এ অভিযোগে দক্ষিণ আফ্রিকার রাষ্ট্রদূত ট্রাম্পকে বর্ণবাদী বললে, ওয়াশিংটন তাকে বহিষ্কারও করে।

দক্ষিণ আফ্রিকার ওপর ৩০ শতাংশ বাণিজ্য শুল্ক আরোপ করেছে ট্রাম্প প্রশাসন, যা উপ-সাহারান আফ্রিকার মধ্যে সর্বোচ্চ।

ব্যবসায়িক প্রভাব কম নয়

যদিও জি-২০ বয়কট করা হয়েছে, তবে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়িক স্বার্থ রয়ে গেছে অটুট। জোহানেসবার্গে অনুষ্ঠিত ব্যবসায়িক সম্মেলন (বি-২০)-এ যুক্তরাষ্ট্রের বড় করপোরেট প্রতিনিধিরা অংশ নেন। 

ইউএস চেম্বার অব কমার্সের প্রধান সুজান ক্লার্ক দক্ষিণ আফ্রিকার নেতৃত্বে সদস্য দেশগুলোর ‘গঠনমূলক সহযোগিতা’ তুলে ধরেন।

দক্ষিণ আফ্রিকার ওয়াশিংটন দূতাবাসের তথ্য অনুযায়ী, দেশটিতে বর্তমানে ৬ শতরও বেশি মার্কিন কোম্পানি কার্যক্রম পরিচালনা করছে।