দীর্ঘদিন ধরেই পবিত্র আল-আকসা মসজিদ ভেঙে ফেলার ষড়যন্ত্র করছে ইসরাইল। পরিকল্পনার অংশ হিসাবে মসজিদের আশপাশে খননকাজ চালাচ্ছে দখলদাররা। এমন ঘটনায় ঐতিহ্যবাহী এই মসজিদের ধসে পড়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে। সম্প্রতি ফিলিস্তিনি সংবাদসংস্থা ওয়াফা এজেন্সিতে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এমনটাই জানিয়েছে জেরুজালেম গভর্নরেটের উপদেষ্টা মারুফ আল-রিফাই।
আল-রিফাই অভিযোগ করেন, এই সুড়ঙ্গ খনন জেরুজালেমের পুরোনো শহরের ঐতিহাসিক ও ইসলামি স্থাপনাগুলোকে ‘ইহুদিকরণের’ একটি বৃহত্তর পরিকল্পনার অংশ। বিষয়টি ইসলামি আইনের পরিপন্থী।
তিনি ব্যাখ্যা করেন, সুড়ঙ্গগুলো ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ ‘সিটি অব ডেভিড’ নামে ডাকে। ফলে এখানে একাধিক পরিবর্তন আনতে চাচ্ছেন তারা। মসজিদের পাশে পুরোনো জলপথ শুকিয়ে সুড়ঙ্গ, জাদুঘর ও সিনাগগে (ইহুদি উপাসনালয়) রূপান্তরিত করা হয়েছে। ‘জাব্বানা মার্কেট’ নামে পরিচিত একটি সুড়ঙ্গকে এখন ইহুদি পর্যটন পথে পরিণত করা হয়েছে।
এটি আল-আকসা মসজিদের নিচের অবকাঠামোকে হুমকির মুখে ফেলেছে। জেরুজালেম প্রশাসন জানায়, ইসরাইল ‘ধর্মীয় গল্পগাঁথার’ অজুহাতে ওই এলাকায় নতুন করে দখল বাস্তবতা তৈরি করছে। যাতে করে ফিলিস্তিনি উপস্থিতি মুছে ফেলে বসতি স্থাপনকারীদের আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করা যায়।
পাশাপাশি এটি মূলত পুরোনো জেরুজালেমের আরব-ইসলামি চরিত্র মুছে ফেলার একটি পরিকল্পিত পদক্ষেপ। আন্তর্জাতিক তদারকির আড়ালে গোপনে বা আধা-গোপনে এই খননগুলো হচ্ছে। ফলে বিষয়টি আল-আকসা মসজিদের স্থাপত্যিক স্থিতিশীলতাকে দুর্বল করার হুমকি দিচ্ছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই প্রচেষ্টা ‘জেরুজালেমকে একটি ইহুদি শহর’ প্রমাণ করার ইহুদিকরণ প্রকল্পের অংশ। তবে এ ঘটনা ছাড়াও দখলদার ইসরাইল ‘মিথ্যা ধর্মীয় দাবির’ অজুহাতে শেখ জাররাহ মহল্লাায় ইহুদি বসতি সম্প্রসারণ ও দখল জোরদার করছে। ওই এলাকায় কঠোর সামরিক অবরোধ জারি করে স্থানীয় বাসিন্দাদের চলাচল সীমিত করা হয়েছে।
বিশেষ বিশেষ সময়ে (খেয়াল-খুশিমতো) এলাকাজুড়ে ইসরাইলি সামরিক যান মোতায়েন করা হয়। বসানো হয় একাধিক তলা বিশিষ্ট চৌকি এবং বন্ধ করে দেওয়া হয় প্রধান সড়কগুলো। এতে স্থানীয় বাসিন্দাদের দৈনন্দিন জীবন প্রায় অচল হয়ে পড়ে।