Image description

সম্প্রতি স্ত্রীর পরকীয়া হাতেনাতে ধরেছে এক যুবক। এরপর স্ত্রীর প্রেমিকের হাতে তাকে ‘সমর্পণ’ করে গরু ও টাকা নিয়েছেন তিনি। শতাব্দীপ্রাচীন উপজাতীয় রীতি অনুসারে মর্যাদা রক্ষার প্রতীকী প্রয়াসে একটি গরু ও কিছু নগদ অর্থ গ্রহণ করেন তিনি।

ঘটনাটি ঘটেছে ইন্দোনেশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলের একটি গ্রামে। এক প্রতিবেদনে এই তথ্য প্রকাশ করেছে দেশটির স্থানীয় গণমাধ্যম ট্রিবুননিউজ সুলত্রা।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কোনায়ে রিজেন্সির পুডোম্বি গ্রামের বাসিন্দা এসআরএইচ নামের ওই ব্যক্তির সঙ্গে স্ত্রী এনএসের বিয়ে হয়েছিল পাঁচ বছর আগে। এই অঞ্চলটি মূলত টোলাকি জনগোষ্ঠীর বসবাস, যারা ঐতিহ্যবাহী পোশাক ও শান্তি–ঐক্যের গভীর মূল্যবোধের জন্য পরিচিত।


গত সেপ্টেম্বর মাসে এসআরএইচ তার স্ত্রীকে অন্য এক পুরুষের সঙ্গে স্থানীয় এক বোর্ডিং হাউসে আপত্তিকর অবস্থায় ধরে ফেলেন। পরে তিনি বিষয়টি স্থানীয় পুলিশকে জানান এবং প্রমাণস্বরূপ মোটরসাইকেলসহ কিছু সামগ্রী জমা দেন। 

পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে দুজনেই পরকীয়ার কথা স্বীকার করেন। পরে জানা যায়, ওই প্রেমিক একটি খনির কোম্পানিতে কর্মরত। ঘটনার পর এসআরএইচ স্থানীয় প্রবীণদের সহায়তা চান বিষয়টি ‘মোয়েয়া সারাপু’ নামের প্রাচীন টোলাকি প্রথা অনুযায়ী মীমাংসা করার জন্য। 

 
এই আচারটির অর্থ ‘ত্যাগ ও শান্তি স্থাপন’। শতাব্দীপ্রাচীন এই রীতিতে দাম্পত্য কলহ ও সম্পর্কভঙ্গের ক্ষেত্রে পারস্পরিক ক্ষমা ও পুনর্মিলনের প্রতীকী আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে এসআরএইচ তার স্ত্রীকে প্রেমিকের হাতে তুলে দেন—এর মাধ্যমে তিনি নিজের সম্মান রক্ষা ও দ্বন্দ্বের শান্তিপূর্ণ অবসান ঘটাতে চেয়েছিলেন। টোলাকি সংস্কৃতিতে বিশ্বাস করা হয়, সমাজে ভারসাম্য পুনঃস্থাপন না হলে অমঙ্গল নেমে আসতে পারে।

অনুষ্ঠান চলাকালে স্বামী ও স্ত্রী পাশাপাশি বসে নিজেদের ভুল স্বীকার করেন এবং প্রবীণ, আত্মীয় ও গ্রামবাসীর উপস্থিতিতে একে অপরের কাছে ক্ষমা চান। 

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে দেখা যায়, এসআরএইচ চোখ মুছতে মুছতে স্ত্রীর প্রেমিকের কাঁধে হাত রেখে বলেন, ‘তাকে ভালোভাবে রাখবেন। কখনও কষ্ট দেবেন না। সে আমার সঙ্গে কখনও সুখে থাকতে পারেনি।’