Image description
 

গাজায় যুদ্ধ-পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবিলা ও হামাসের বিকল্প শাসন কাঠামো গড়ে তুলতে সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারের প্রস্তাবে সমর্থন জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। 

বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে টাইমস অব ইসরাইল।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাকে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সঙ্গে আলোচনার অনুমোদন দিয়েছেন। এই প্রস্তাবে গাজায় একটি অন্তর্বর্তীকালীন প্রশাসন গঠন করে তা ধীরে ধীরে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের (পিএ) কাছে হস্তান্তরের কথা বলা হয়েছে।

ব্লেয়ারের পরিকল্পনা অনুযায়ী জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের মাধ্যমে ‘গাজা ইন্টারন্যাশনাল ট্রানজিশনাল অথরিটি (জিটা)’ গঠন করা হবে, যা হবে গাজার সর্বোচ্চ রাজনৈতিক ও আইনগত কর্তৃপক্ষ। সাত থেকে দশ সদস্যের একটি বোর্ড এই কাঠামো পরিচালনা করবে। বোর্ডে অন্তত একজন ফিলিস্তিনি প্রতিনিধি, একজন জাতিসংঘ কর্মকর্তা, আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞ ব্যক্তিত্ব এবং মুসলিম সদস্যরা থাকবেন। গাজায় স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে একটি আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বাহিনী নিয়োজিত হবে, যারা সীমান্ত রক্ষা, মানবিক সহায়তা এবং পুনর্গঠন কার্যক্রমে সহায়তা দেবে এবং হামাসের পুনরুত্থান ঠেকাবে।

ধ্বংস্তূপের গাজা। 

পরিকল্পনায় বলা হয়েছে, হামাসকে অ-সামরিক উপায়ে নিষ্ক্রিয় করতে ‘ডিসআর্মামেন্ট, ডিমোবিলাইজেশন ও রিইন্টিগ্রেশন (ডিডিআর)’ প্রক্রিয়া কার্যকর করা হবে। গাজায় স্বাধীন টেকনোক্র্যাটদের সমন্বয়ে একটি প্যালেস্টাইনিয়ান এক্সিকিউটিভ অথরিটি (পিইএ) গঠন করা হবে, যা স্বাস্থ্য, শিক্ষা, অর্থনীতি, অবকাঠামো ও কল্যাণ খাত পরিচালনা করবে। একই সঙ্গে একটি সম্পত্তি অধিকার সংরক্ষণ ইউনিট গড়ে তোলা হবে, যাতে গাজার জনগণকে বাস্তুচ্যুত করার কোনো পরিকল্পনা কার্যকর না হয় এবং তাদের মালিকানার অধিকার অক্ষুণ্ন থাকে।

 

 

 

ব্লেয়ারের এই উদ্যোগ যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চপর্যায়ে আলোচিত হয়েছে। আগস্টে হোয়াইট হাউসের বৈঠকে ট্রাম্প স্পষ্ট করে দেন, তিনি ব্লেয়ারের প্রস্তাব সমর্থন করছেন, তথাকথিত ‘স্বেচ্ছা-অভিবাসন’ পরিকল্পনা নয়। ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ সরাসরি নিয়ন্ত্রণ চাইলেও প্রস্তাবনায় তাদের ভূমিকা সীমিত রেখে সমন্বয়মূলকভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে দীর্ঘমেয়াদে সমগ্র ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডকে পিএ-এর অধীনে একীভূত করার দিকনির্দেশনা রাখা হয়েছে।

আঞ্চলিক রাজনীতিতে সৌদি আরবকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় হিসেবে দেখা হচ্ছে, কারণ দেশটি পুনর্গঠন তহবিল গড়ে তুলতে পারে এবং অন্য আরব দেশগুলোকেও সঙ্গে আনতে সক্ষম। যদিও আরব দেশগুলো পরিকল্পনায় ভবিষ্যৎ ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠনের একটি অপরিবর্তনীয় পথ অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানাচ্ছে।

গাজা শহরে হামলা তীব্র করেছে ইসরাইল। ছবি: সংগৃহীত

তবে পরিকল্পনা বাস্তবায়নে নানা চ্যালেঞ্জ রয়েছে। দোহায় হামাস নেতাদের ওপর ইসরাইলি বিমান হামলার ফলে ব্লেয়ারের প্রচেষ্টা ব্যাহত হয়েছে। এছাড়া ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ডানপন্থি জোট এই উদ্যোগ আটকে দিতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা।

ব্লেয়ারের ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো বলছে, সময় খুব সীমিত। তাদের ভাষায়, ‌‌‌‘আমাদের হাতে মাস নয়, সপ্তাহও নয়, কেবল কয়েকদিনই আছে।’