
ইসরাইলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা দেয়ার হুমকির মধ্যেই তারা গাজায় ভয়াবড় সামরিক অভিযান চালাচ্ছে। অবশিষ্ট ফিলিস্তিনিকে তারা গাজা ছাড়তে বাধ্য করছে। গাজা জুড়ে আরও কমপক্ষে ৮৩ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে তারা। তার মধ্যে ৬১ জন নিহত হয়েছে গাজা সিটিতে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন আল জাজিরা। সাংবাদিক হানি মাহমুদ জানিয়েছেন, ইসরাইলি সেনারা উত্তর গাজায় বসবাসরত লাখ লাখ মানুষকে জোর করে মধ্য ও দক্ষিণ গাজায় ঠেলে দিতে ‘চরম চাপ’ প্রয়োগ করছে। কাতারে ইসরাইলি হামলা থেকে বেঁচে যাওয়া এক সিনিয়র হামাস কর্মকর্তা জানিয়েছেন, কিভাবে হামাসের শীর্ষ নেতারা একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা থেকে অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে গেছেন। ইসরাইলের অতি-ডানপন্থী অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচ গাজাকে একটি সম্ভাব্য রিয়েল এস্টেটের ‘সোনার খনি’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
তিনি জানিয়েছেন, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে গাজা ভাগাভাগি করা নিয়ে সরাসরি আলোচনা করছেন। ২০২৩ সালের অক্টোবরে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ইসরাইলের গাজা আক্রমণে কমপক্ষে ৬৫,০৬২ জন নিহত এবং ১,৬৫,৬৯৭ জন আহত হয়েছেন। আরও হাজার হাজার মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছে বলে ধারণা করা হয়। এ পরিস্থিতিতে ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট আন্তোনিও কস্তা ইউরোপীয় কমিশনের প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছেন। ওই প্রস্তাবে ইসরাইলের মন্ত্রীদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ এবং ইসরাইলের বিশেষ বাণিজ্য সহযোগী মর্যাদা প্রত্যাহারের বিষয় রয়েছে। তিনি এক্সে এক পোস্টে লিখেছেন, এই পদক্ষেপগুলো ইসরাইলি জনগণের বিরুদ্ধে নয়। এর লক্ষ্য হলো দেখানো যে ইউরোপ ইসরাইলি সরকারের গাজা ও পশ্চিম তীরে নেয়া পদক্ষেপ মেনে নিতে পারে না। কারণ তা আত্মরক্ষার বৈধ অধিকারের বহু সীমা অতিক্রম করেছে। এখন সিদ্ধান্ত নেয়া ইইউ সদস্য রাষ্ট্রগুলোর হাতে, যেখানে ২৫ দেশের মধ্যে ১৭টি দেশ সমর্থন দিলে পদক্ষেপ কার্যকর হবে।
ওদিকে ইসরাইলি সেনারা গাজাজুড়ে ৮০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে। এর মধ্যে কেবল গাজা সিটিতেই নিহত হয়েছে ৬১ জন। সেনারা সেখানে দখল ও দমনমূলক অভিযান চালাচ্ছে। আল-শিফা হাসপাতালের কাছে এক হামলায় কমপক্ষে ১৩ জন নিহত হয়েছে। ইউরো-মেড হিউম্যান রাইটস মনিটরের তথ্যমতে, ইসরাইলি বাহিনী ফাঁদ পাতা সাঁজোয়া যান ব্যবহার করছে, যেগুলো বিস্ফোরকে ভরে আবাসিক এলাকা উড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। প্রভাবশালী মার্কিন সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স ইসরাইলের গাজা হামলাকে ‘গণহত্যা’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। তিনি আবারও আহ্বান জানিয়েছেন ওয়াশিংটন যেন ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে হত্যাযজ্ঞে সহযোগিতা বন্ধ করে। ওদিকে লেবাননের বালবাকে এক গাড়ি লক্ষ্য করে ইসরাইলি সেনারা হামলা চালায়। সেখানে কমপক্ষে দুজন নিহত হয়েছে। অভিযানকারীরা ইউরোপীয় ফুটবল ফেডারেশনগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, ইসরাইলি জাতীয় দলকে বয়কট করার এবং ইসরাইলি খেলোয়াড়দের ঘরোয়া প্রতিযোগিতা থেকে নিষিদ্ধ করার জন্য।