Image description
 

জেন–জি আন্দোলনের সময় নেপালের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি স্থাপনায় ব্যাপক ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট হয়। বড় বড় সুপারস্টোর থেকে শুরু করে ছোট দোকান পর্যন্ত ভাঙচুর ও চুরি হয়। তবে আন্দোলনের কয়েক দিন পর এখন অনেক স্থানীয় মানুষ চুরি বা লুট করা জিনিস ফিরিয়ে দিতে শুরু করেছেন।

 

সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে নেপালি ভাষার সংবাদমাধ্যম ‘সেতুপাতি’।

সবচেয়ে আলোচিত ঘটনা হলো— কেউ সিজি-র বিশালনগর শোরুম থেকে নেওয়া একটি রাইসকুকার ভাতসহ ফিরিয়ে দিয়েছেন। 

সিজি শোরুমের খুচরা ব্যবস্থাপক বসন্ত পাল বলেন, ‘আমরা স্থানীয়দের সহযোগিতায় মাইকিং করে অনুরোধ করেছিলাম। এক ব্যক্তি আমাদের রাইসকুকারে ভাত রান্না করছিলেন। পরে তিনি সেটি ভাতসহ ফেরত দেন।’

 

এমনই আরেকটি ঘটনা ঘটেছে ভাটভাটেনি সুপারস্টোরে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়ানো একটি ভিডিওতে দেখা যায়, এক যুবক দোকানে মদের বোতল নিয়ে আসেন। কর্মীরা ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘ধন্যবাদ, বোতল খোলা হয়নি।’ তখন যুবকটি হেসে উত্তর দেন, ‘সেদিন নেওয়া বোতল তো শেষ হয়ে গেছে। এটা নতুন কিনে নিয়ে এলাম।’

 

ভাটভাটেনির একজন প্রতিনিধি জানান, ‘কেউ কেউ বুঝতে পেরেছেন সবাই জানে তারা জিনিস নিয়েছে। তাই ফেরত দিচ্ছেন। কেউ খাওয়া শেষ করা ব্ল্যাক লেবেল মদও নতুন কিনে ফেরত দিয়েছে।’

স্থানীয় সমাজও লুট হওয়া সামগ্রী উদ্ধার করে ব্যবসায়ীদের ফিরিয়ে দিচ্ছে। কাঠমান্ডুর হাডিগাঁও এলাকায় সম্প্রতি স্থানীয়রা সিজি কোম্পানির কর্মীদের নিয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে জিনিস উদ্ধার করেছেন। 

ত্রিরত্ন ডংগোল নামে এক বাসিন্দা বলেন, ‘আমরা হাডিগাঁওবাসীর মান রক্ষা করতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে খোঁজ করেছি। এতে প্রায় ২০ শতাংশ জিনিসপত্র ইতোমধ্যে ফিরিয়ে আনা হয়েছে।’

ফ্রিজ, ওয়াশিং মেশিন, ফ্যান, প্রেসার কুকার, রাইসকুকারসহ বহু সামগ্রী ইতোমধ্যে ফেরত এসেছে। এমনকি কিছু লোহালক্কড় বিক্রেতাও নিয়ে যাওয়া জিনিস ফিরিয়ে দিয়েছেন।

 

 

 

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘সামগ্রী ফিরিয়ে দিই’ প্রচারণার ভিডিও ছড়িয়ে পড়ছে। এতে অনুপ্রাণিত হয়ে অন্য এলাকাতেও একই উদ্যোগ শুরু হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির তুলনায় ফেরত পাওয়া জিনিস অতি সামান্য হলেও, ব্যবসায়ীরা এ নিয়ে আশাবাদী।

সিজি শোরুমের প্রতিনিধি বসন্ত পাল বলেন, ‘আমরা এখন বুঝেছি, একটি কোম্পানি ও সম্প্রদায়ের মধ্যে মজবুত সম্পর্ক থাকা জরুরি। ভবিষ্যতে আমাদের কৌশল হবে স্থানীয়দের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করা।’

ভাটভাটেনির কর্মকর্তারাও জানান, বিশেষ করে কাঠমান্ডুর বাইরে থাকা শাখাগুলোতে তুলনামূলকভাবে বেশি পণ্য ফেরত এসেছে। সবচেয়ে বেশি ফেরত এসেছে বীরতমোড শাখায়।

এই প্রচারণাকে অনেক বিদেশি প্রশংসা করেছেন। তারা বলেছেন, নেপালি জনগণ সৎভাবে লুট করা জিনিস ফেরত দিয়ে বিরল উদাহরণ তৈরি করেছেন।