Image description

ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পরপরই যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএআইডি বন্ধের ঘোষণা দেওয়া হয়। এই বৈদেশিক সহায়তা প্রায় বন্ধ করে দেওয়ার ফলে আগামী পাঁচ বছরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা এক কোটি ৪০ লাখেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হতে পারে বলে এক গবেষণায় আশঙ্কা করা হয়েছে, যাদের মধ্যে এক-তৃতীয়াংশই শিশু। গবেষণায় ১৩৩টি দেশের তথ্য পর্যালোচনা করে এই ভয়াবহ ভবিষ্যৎ-চিত্র তুলে ধরা হয়।

বিশ্বজুড়ে সহায়তা কার্যক্রমকে পুনরুজ্জীবিত করার লক্ষ্যে স্পেনে জাতিসংঘের একটি সম্মেলনের প্রাক্কালে সোমবার বিশ্ববিখ্যাত চিকিৎসা সাময়িকী ল্যানসেটে গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে। খবর এএফপির।

এএফপির খবরে বলা হয়েছে, গত জানুয়ারিতে ডোনাল্ড ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে ফিরে আসার আগ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএআইডি বিশ্বব্যাপী মানবিক সহায়তা তহবিলের ৪০ শতাংশের বেশি সরবরাহ করত। ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার দুই সপ্তাহের মাথায় তার ধনকুবের উপদেষ্টা ইলন মাস্ক ইউএসএআইডি বন্ধ করার ঘোষণা দেন।

গবেষণাপত্রটির সহ-লেখক বার্সেলোনা ইনস্টিটিউট ফর গ্লোবাল হেলথের (আইএসগ্লোবাল) গবেষক ডেভিড রাসেল্লা সতর্ক করে বলেছেন, অর্থ সহায়তা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিপদগ্রস্থ জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবায় গত দুই দশকে যে অগ্রগতি হয়েছে তা এখন ঝুঁকিতে আছে। এই ঘটনাকে একটি হমামারির সঙ্গে তুলনা করেন তিনি।

১৩৩টি দেশের তথ্য পর্যালোচনা করে আন্তর্জাতিক গবেষক দলটি অনুমান করেছে, ২০০১ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে ৯ কোটি ১০ লাখ মানুষের অকালমৃত্যু প্রতিরোধ করেছিল ইউএসএআইডি।

মার্কিন সরকার এ বছরের শুরুতে সহায়তার পরিমাণ ৮৩ শতাংশ কমানোর ঘোষণা দেয়। এর প্রভাবে মৃত্যুর হার কীভাবে প্রভাবিত হতে পারে, তা জানতে গবেষকেরা মডেলিং পদ্ধতি ব্যবহার করেছেন।

এ থেকে গবেষকদের অনুমান, যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্তের ফলে ২০৩০ সালের মধ্যে ১ কোটি ৪০ লাখের বেশি মানুষের মৃত্যু হতে পারে, যা প্রতিরোধযোগ্য। এর মধ্যে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুর সংখ্যা ৪৫ লাখের বেশি, অর্থাৎ বছরে প্রায় ৭ লাখ শিশুর মৃত্যু হতে পারে। এর ব্যাপকতা বোঝার জন্য প্রথম বিশ্বযুদ্ধের কথা ধরা যায়। ওই যুদ্ধে চার বছরে প্রায় এক কোটি মানুষের প্রাণহানি হয়েছিল।