করোনা মহামারি, জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি ও ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশজুড়ে মানুষ ব্যাপক সংকটের মধ্যে পড়েছে। এ পরিস্থিতিতে ২০২০ সাল থেকে বিশ্বের সাড়ে ১৬ কোটি মানুষ নতুন করে দরিদ্র হয়েছে।
শুক্রবার জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে এমনটাই জানা গেছে। এ তথ্য প্রকাশ করে জাতিসংঘের উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) উন্নয়নশীল দেশগুলোর ঋণ পরিশোধ কার্যক্রম সাময়িক স্থগিতের আহ্বান জানিয়েছে।
ইউএনডিপি পরিচালিত এক গবেষণায় উঠে এসেছে, করোনা মহামারি, জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাওয়া এবং ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে ২০২০ থেকে ২০২২ সালের শেষ নাগাদ বিশ্বের প্রায় সাড়ে ৭ কোটি মানুষ অতিদরিদ্র হয়েছে। তাদের প্রতিদিন ২ ডলার ১৫ সেন্ট বা এর কম আয়ে জীবনযাপন করতে হচ্ছে। একই সময়ে ৯ কোটির বেশি মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমেছে। তাদের দৈনিক ৩ ডলার ৬৫ সেন্টের কম আয়ে জীবন কাটাতে হচ্ছে। সবচেয়ে দরিদ্র মানুষই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বেশি।
চলতি বছর এসব মানুষের আয় করোনা মহামারির আগের আয়ের অবস্থায় ফিরতে পারবে না। এক বিবৃতিতে ইউএনডিপির প্রধান আখিম স্টেইনার জানান, তিন বছর ধরে যেসব দেশ সামাজিক সুরক্ষা খাতে বিনিয়োগ করেছে, সেসব দেশ বিশালসংখ্যক জনগোষ্ঠীকে দারিদ্র্যসীমায় অবনমন থেকে রক্ষা করতে পেরেছে। তুলনামূলকভাবে উচ্চমাত্রায় ঋণগ্রস্ত দেশগুলো তাদের জনগোষ্ঠীর সামাজিক সুরক্ষা খাতে ততটা ব্যয় করতে পারেনি। কারণ উচ্চমাত্রায় ঋণের সঙ্গে সামাজিক খাতে অপ্রতুল অর্থ ব্যয়ের একটি সম্পর্ক রয়েছে। এ কারণেই উচ্চ মাত্রায় ঋণগ্রস্ত দেশগুলোতে নতুন করে দারিদ্র্যসীমায় নেমে যাওয়া জনগোষ্ঠীর হার আশঙ্কাজনক বেশি।
প্রতিবেদনে এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় স্বল্পোন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য ঋণ পরিশোধ সাময়িক স্থগিত রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে। বলা হয়েছে, বহুপক্ষীয় উপায়ে সমস্যা সমাধানের কৌশল আমাদের নাগালের বাইরে নয়। গত তিন বছরে দারিদ্র্যের শিকার সাড়ে ১৬ কোটি মানুষকে এ অবস্থা থেকে উত্তরণে ১ হাজার ৪০০ কোটি ডলার প্রয়োজন বলেও প্রতিবেদনে জানিয়েছে ইউএনডিপি।
বুধবার জাতিসংঘের প্রকাশিত অন্য এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বের প্রায় ৩৩০ কোটি মানুষ এমন দেশে বাস করে, যেসব দেশ বাজেটে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতের চেয়ে ঋণের সুদ পরিষদে বেশি অর্থ বরাদ্দ করে।
সময়ের আলো/আরএস