Image description

২০২৫ সালের আলিম পরীক্ষায় মাত্র তিনজন শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিয়ে তিনজনই ফেল এমন বিব্রতকর ফলাফলের পর আলোচনায় এসেছে ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়া উপজেলার ভবানীপুর বেতবাড়ী মহিলা ফাজিল মাদরাসা।

১৯৮৪ সালে প্রতিষ্ঠিত এই মাদরাসার চিত্র এখন জরাজীর্ণ ভবন। আগাছায় ভরা মাঠ, মাদরাসার মাঠে জমে আছে পুরাতন ইট ও আগাছার জঞ্জাল। মাঠ ব্যবহার অনুপযোগী, বাউন্ডারি দেয়াল জোড়াতালি দেওয়া পুরনো টিনে ঘেরা। একতলা একাডেমিক ভবনে মাত্র দুটি শ্রেণিকক্ষ ব্যবহারযোগ্য, বাকিগুলো পুরনো টিনসেট ঘরে। শ্রেণিকক্ষের অবস্থাও নাজুক।

প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ মাওলানা মাহবুবুল আলম তোতা জানান, অল্প বয়সেই মেয়েদের বিয়ে হয়ে যায়, তাই শিক্ষার্থী কম। 

কাগজে-কলমে এবতেদায়ি থেকে ফাজিল পর্যন্ত শিক্ষার্থী সংখ্যা ২৭১ জন, শিক্ষক ২১ জন ও কর্মচারী ৩ জন। তবে আলিম শ্রেণিতে গিয়ে দেখা গেছে, মাত্র একজন শিক্ষার্থী আঁখি আক্তার উপস্থিত ছিলেন।

অধ্যক্ষের দাবি, আমাদের আন্দোলন চলছে, তাই ক্লাস হয় না। শিক্ষার্থীরাও আসে না। 

কিন্তু অভিভাবকরা বলছেন, বিদ্যালয়ে নিয়মিত কোনো ক্লাস হয় না। শিক্ষকরা এলেও শিক্ষার্থীরা আসে না। ১৫ বছর ধরে বাউন্ডারি দেয়াল ভাঙা অবস্থায় পড়ে আছে।

 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, পড়াশোনার মতো কোনো পরিবেশ নেই। প্রশাসন থেকেও কোনো তদারকি নেই। তাঁদের মতে, প্রশাসনিক উদ্যোগ নিলে হয়তো শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনা সম্ভব।

অধ্যক্ষ মাহবুবুল আলম তোতা আরও জানান, ইউএনও অফিস থেকে ১২ হাজার টাকা পেয়ে বারান্দার পুরোনো টিন নতুন করে লাগানো হয়েছে। আমরা মাদরাসার পরিবেশ ঠিক করার চেষ্টা করছি।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ফাজিল মাদরাসাগুলো জেলা প্রশাসক কার্যালয় তদারকি করেন। আমি কখনও সেখানে যাইনি। তবে যারা খারাপ ফল করেছে, তাদের এমপিও স্থগিত করা হবে। তারপরও খোঁজ নিয়ে বিষয়টি দেখা হবে।

এদিকে মাত্র তিন পরীক্ষার্থীও পাস না করায় স্থানীয়দের প্রশ্ন ২১ শিক্ষক মিলে যদি তিনজনকেও উত্তীর্ণ করতে না পারেন, তবে সেখানে শিক্ষার আসল অবস্থা কতটা ভয়াবহ, তা সহজেই অনুমেয়।