Image description

আওয়ামী লীগের মাঠের রাজনীতিতে সক্রিয় না থাকলেও টকশোর গাল বাজি আর জয়ের বন্ধু হওয়ার সুবাদে আওয়ামী লীগের সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত বাগিয়ে নেন মন্ত্রীর পদ। মন্ত্রী হওয়ার আগে আরাফাত সুচিন্তা ফাউন্ডেশন নামে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। মূলত এই প্রতিষ্ঠানকে ব্যবহার করে তিনি আওয়ামী লীগের প্রচারণা চালাতেন। থেমে থাকেনি তাঁর চাঁদাবাজি।

এই ব্যানার ব্যবহার করে তিনি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মোটা অংকের চাঁদা আদায় করতেন। এছাড়া ইয়ুথ বাংলা সামাজিক সংগঠনের ব্যানারে টাকা পাচারের অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে৷ শুধু কি তাই জয়ের প্রভাব খাটিয়ে আইসিটি মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন প্রকল্পের টাকাও লুট নিতেন আরাফাত। জুলাই ছাত্র আন্দোলন দমনে যে কজন মন্ত্রী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন, মোহাম্মদ আলী আরাফাত তাদের অন্যতম।

৫ জুলাই সরকার পতনের মাত্র দুদিন আগেও দেশের ব্যবসায়ীদের নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ মিটিংয়ে নেতৃত্ব দেন আরাফাত। নির্দেশ দেন ছাত্রদের আন্দোলন দমনের। তিনি বলেন, সরকারকে টিকিয়ে রাখতে অবশ্যই আপনাদের শেখ হাসিনার পাশে থাকতে হবে।

আরাফতের চক্রান্তের তীরে বিদ্ধ হয়েছে দেশের মিডিয়া শিল্প। জুলাই আন্দোলনের ভিডিও প্রচার করায় চারটি গণমাধ্যমে সম্প্রচার সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেন তিনি। এছাড়া মিডিয়ায় তার পছন্দমতো ব্যক্তিদের নিয়ে তৈরি করেন সিন্ডিকেট। তাঁর বিরুদ্ধে কোনো সংবাদ প্রচার হলে কর্তাব্যক্তিদের ডেকে শাসানোর ঢের অভিযোগ রয়েছে।

আওয়ামী লীগের সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত। বলা হয় আওয়ামী লিগের সবচেয়ে সুযোগসন্ধানী স্বল্প সময়ের নেতা জয়ের বন্ধু হওয়ার কারণে অনেক ত্যাগী নেতাদের পিছনে ফেলে জয়ের আশীর্বাদে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বনে জানা আরাফাত। জানা যায়, জয়ের বন্ধু হওয়ার দাপটে আরাফাত অন্য সিনিয়র মন্ত্রীদের পাত্তাই দিতেন না।আরাফাতের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। তার শাসনামলে সরকারি তহবিলের অপব্যবহার প্রকল্পগুলোর জন্য বরাদ্দ অর্থের লোপাট এবং ব্যক্তিগত স্বার্থের জন্য ক্ষমতার অপব্যবহার করার অভিযোগ প্রচলিত।

জুলাই পরবর্তী অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আরাফাত ও তাঁর স্ত্রীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট জব্দের নির্দেশ দেয় ক্ষমতায় থাকাকালীন আরাফাত। ২০২২ সালে জামায়াত সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ তুলে মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ড ভেঙে দিয়ে পরে ঢাকা উত্তরের মেয়র আতিকুল কে চেয়ারম্যান ও নিজে নবগঠিত ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে দখলের পাঁয়তারা করেন।এ ছাড়া মন্ত্রীর দায়িত্বে থাকার সময় বিভিন্ন সরকারি প্রকল্প এবং কার্যক্রমের স্বজনপ্রীতি এবং অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। যার ফলে সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এসব কর্মকাণ্ড দেশের রাজনৈতিক পরিবেশে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছিল। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা তাঁকে দুর্নীতির জন্য দায়ী করেন। এই ধরনের কর্মকাণ্ড দেশের শাসন ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতি আঘাত হিসেবে দেখা হয়েছে।