Image description
 

আগামী ১২ ফেব্রুয়ারির ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দ্রুত বদলাচ্ছে ভোটের সমীকরণ। রাজনীতির মাঠে অবস্থান শক্ত করতে দীর্ঘ ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনের বিভিন্ন মিত্র রাজনৈতিক দলের একাধিক শীর্ষ নেতা সম্প্রতি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলে (বিএনপি) যোগ দিয়েছেন। নির্বাচন ঘনিয়ে আসার প্রাক্কালে এই যোগদানে বিএনপি’র সংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধির পাশাপাশি রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

জোটবদ্ধ হলেও নির্বাচন করতে হবে নিজ দলীয় প্রতীকে- এমন বিধান যুক্ত করে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধন অধ্যাদেশ জারি করে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার। আর এতেই বিপাকে পড়ে ছোট রাজনৈতিক দলগুলো। কারণ, নির্বাচনে প্রতীক একটা বড় ফ্যাক্ট। আর তাইতো দীর্ঘদিনের শরিক দলের শীর্ষ নেতাদের কেউ রাজনৈতিক দল বিলুপ্ত করে আবার কেউ নিজ দল থেকে পদত্যাগ করে বিএনপিতে যোগ দিয়েছেন। তারা এখন লড়বেন ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে। এটি মূলত নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার একটি কৌশল।

গত কয়েক দিনে বিএনপিতে যোগ দেওয়া নেতাদের মধ্যে রয়েছেন গণঅধিকার পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) মহাসচিব ড. রেদোয়ান আহমেদ, বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা এবং এলডিপির একাংশের চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের (এনডিএম) চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ।

গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান গত ২৭ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপিতে যোগ দেন। তিনি ঝিনাইদহ-৪ আসন থেকে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। যুগপৎ আন্দোলনে থাকা শরিকদের সঙ্গে আসন সমঝোতার অংশ হিসেবে বিএনপি ঝিনাইদহ-৪ আসনটি রাশেদ খানকে এবং পটুয়াখালী-৩ আসনটি গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরকে ছেড়ে দেয়।

নির্বাচন কমিশনের নতুন বিধিমালা অনুযায়ী জোটভুক্ত প্রার্থীদের নিজ নিজ দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করার কথা থাকলেও, নির্বাচনি কৌশলের অংশ হিসেবে রাশেদ খান ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করবেন। বিষয়টি ব্যাখ্যা করে ফেসবুকে পোস্ট দেন নুরুল হক নুর।

এদিকে নিজ দল থেকে পদত্যাগ করে বিএনপিতে যোগ দিয়েছেন এলডিপির মহাসচিব, সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. রেদোয়ান আহমেদ। তিনি গত ২৪ ডিসেম্বর বিএনপিতে যোগ দেন এবং কুমিল্লা-৭ আসন থেকে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করবেন।

বাংলাদেশ জাতীয় দল বিলুপ্ত করে বিএনপিতে যোগ দিয়েছেন দলটির চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদাও। গত ২২ ডিসেম্বর বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে তিনি বিএনপিতে যোগদানের ঘোষণা দেন। এ সময় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান তাকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন। কিশোরগঞ্জ-৫ আসনে বিএনপির শরিক হিসেবে প্রার্থী হতে আগ্রহী ছিলেন সৈয়দ এহসানুল হুদা। তবে ওই আসনে বিএনপি প্রার্থী ঘোষণা করায় তিনি দল বিলুপ্ত করে বিএনপিতে যোগ দেন।

এছাড়া এলডিপির একাংশের চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিমও নিজের দল বিলুপ্ত করে বিএনপিতে যোগ দিয়েছেন। তিনি লক্ষ্মীপুর-১ আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করবেন। গত ৮ ডিসেম্বর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর হাতে ফুলের তোড়া দিয়ে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপিতে যোগ দিয়েছেন।

অন্যদিকে, গত ২৪ ডিসেম্বর এনডিএমের চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ নিজ দল ত্যাগ করে বিএনপিতে যোগ দেন। আজ (২৯ ডিসেম্বর) ঢাকা-১৩ আসনের মনোনয়নপত্র জমা দেন তিনি। ববি হাজ্জাজ শীর্ষ নিউজ ডটকমকে বলেন, কৌশলগত কারণে এনডিএম থেকে পদত্যাগ করে বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করছি। আরপিও সংশোধনের কারণে এই কৌশল নিতে হয়েছে। তিনি বলেন, শুধু এনডিএম নয়, বিএনপির সমর্থনও তার সঙ্গে আছে এবং জয়ের ব্যাপারেও শতভাগ আশাবাদী।


শীর্ষনিউজ