Image description

শহীদ ওসমান হাদির বড় ভাই শরিফ ওমর বিন হাদি বলেন, গত ১৬ বছরে মানুষের বাকস্বাধীনতা, মৌলিক অধিকার ও জীবনের নিরাপত্তা ক্ষুণ্ন হয়েছে। সামনে নির্বাচন নিয়ে ভয়ভীতির রাজনীতি তৈরি করা হচ্ছে। সামনে কোন সরকার ক্ষমতায় আসবে, সে সিদ্ধান্ত জনগণই দেবে। শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) রাজধানীর বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সদস্য সম্মেলন-২০২৫–এ অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

শরিফ ওমর বিন হাদি বলেন, শহীদ ওসমান হাদি শাহবাগে রাজপথে দাঁড়িয়ে চোখে চোখ রেখে ‘নারায়ে তাকবীর’ স্লোগান দিতেন। এ কারণে তাদের পরিবারকে নিয়মিত হুমকি দেওয়া হতো। হোয়াটসঅ্যাপ ও মেসেঞ্জারে কাফনের ছবি পাঠানো হতো বলেও জানান তিনি। শুরুতে এসব বিষয় পরিবারকে জানালেও পরে ওসমান আর শেয়ার করতেন না, যাতে পরিবারের ভয় না বাড়ে।

তিনি বলেন, আমি যদি আবার বিচারের দাবিতে রাজপথে নামি, আমাকেও হত্যা করা হবে—এই ভয় আমার মায়ের মধ্যে কাজ করছে। মা ইতোমধ্যে এক সন্তান হারিয়েছেন, আরেকটাকেও হারানোর আশঙ্কায় ভীত।

নিজের পারিবারিক ও রাজনৈতিক জীবনের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ২০১২ সালে বাবার মৃত্যুর পর দুই ভাই একই এলাকায় বসবাস করতেন। জুলাই আন্দোলনের সময় থেকে ব্যক্তিগত ব্যবসা ছেড়ে ওসমানের সঙ্গে আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন তিনি। ওসমান তাকে বারবার বলতেন, যদি তিনি শহীদ হন তবে আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে এবং আড়ালে থাকতে হবে।

শরিফ ওমর বিন হাদি বলেন, আমি কখনো সামনে আসতে চাইনি। কিন্তু আজ আমার ভাই শহীদ হওয়ায় বিচারের দাবিতে আপনাদের সামনে দাঁড়াতে বাধ্য হয়েছি।সবাইকে ওসমান হাদির আদর্শ সারা দেশের ৫৬ হাজার বর্গমাইলে ছড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান।

হত্যাকাণ্ডের বর্ণনায় তিনি বলেন, ঘটনার দুই সপ্তাহ আগে থেকেই খুনি পরিকল্পিতভাবে তাদের আশপাশে ঘোরাফেরা করছিল। একাধিকবার হত্যাচেষ্টা ব্যর্থ হলেও শেষ পর্যন্ত শুক্রবার জুমার নামাজের পর ওসমানকে গুলি করা হয়। পরবর্তী শুক্রবার রাতে তিনি সিঙ্গাপুরে শহীদ হন।

 

তিনি আরও বলেন, যদি আল্লামা সাঈদ সাক্ষীকে ভারতের কারাগারে পাওয়া যায় আর ওসমানের খুনি ছয় ঘণ্টার মধ্যে দেশ ছাড়তে পারে, তাহলে এই দেশের সার্বভৌমত্ব কোথায়?

বক্তব্যের শেষ অংশে তিনি বলেন, গত ১৬ বছরে মানুষের বাকস্বাধীনতা, মৌলিক অধিকার ও জীবনের নিরাপত্তা ক্ষুণ্ন হয়েছে। সামনে নির্বাচন নিয়ে ভয়ভীতির রাজনীতি তৈরি করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।