Image description

গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের মিত্র দলগুলোর জোট জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট (এনডিএফ) মঙ্গলবার রাজধানীর একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলনে ১২২ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে। তালিকায় আছেন শেখ হাসিনার আমলের জাতীয় পার্টি থেকে এমপি-মন্ত্রী হওয়া ১৭ জন। রয়েছেন সাবেক মন্ত্রী জেপি চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু।
 
তিনি এবং শেখ হাসিনার আরেক মন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদের নেতৃত্বে গত ৮ ডিসেম্বর ১৮ দলীয় জোট এনডিএফ গঠিত হয়। এতে ছয়টি নিবন্ধিত দল রয়েছে। এই জোট থেকে মোট ২০ জন সাবেক এমপি প্রার্থী হচ্ছেন।
 
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের শরিক ছিল জেপি। নিবন্ধিত অপর পাঁচ দল বিএনএম, সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট, গণফ্রন্ট, মুসলিম লীগ, তৃণমূল বিএনপি ৭ জানুয়ারির ‘ডামি নির্বাচনে’ অংশ নেয়। বিএনপির দলছুট নেতাদের বিএনএম এবং তৃণমূল বিএনপি তখন কিংস পার্টি হিসেবে পরিচিতি পেয়েছিল।
 
প্রার্থী তালিকায় থাকা ৮৭ জন ব্যারিস্টার আনিসের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টির।  জি এম কাদেরের সঙ্গে নেতৃত্ব নিয়ে বিরোধে গত আগস্টে তিনি এবং এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার এই দল গঠন করেন। ব্যারিস্টার আনিস জোটেরও চেয়ারম্যান। আনোয়ার হোসেন মঞ্জু প্রধান উপদেষ্টা।

সংবাদ সম্মেলনে ঘোষিত তালিকা অনুযায়ী, জাতীয় পার্টির (আনিস) চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম চট্টগ্রাম-৫, মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদার পটুয়াখালী-১, নির্বাহী চেয়ারম্যান মুজিবুল হক চুন্নু কিশোরগঞ্জ-৩, জ্যেষ্ঠ কো-চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশিদ ঢাকা-১০, নাসরিন জাহান রতনা বরিশাল-৬, লিয়াকত হোসেন খোকা নারায়ণগঞ্জ-৩, ফখরুল ইমাম ময়মনসিংহ-৮, জিয়াউল হক মৃধা ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২, নুরুল ইসলাম মিলন কুমিল্লা-৮, নুরুল ইসলাম ওমর বগুড়া-৬, ইয়াহ ইয়া চৌধুরী সিলেট-২, মেজর (অব.) রানা মোহাম্মদ সোহেল নীলফামারী-৩, পনির উদ্দিন আহম্মেদ কুড়িগ্রাম-২ নাজমা আক্তার ফেনী-১ এবং ইঞ্জিনিয়ার মামুন অর রশীদ জামালপুর-৪ আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন। তাঁদের অধিকাংশ ২০১৪ সালের একতরফা এবং ২০১৮ সালের রাতের ভোটখ্যাত নির্বাচনে এমপি হয়েছিলেন। 

ওই নির্বাচনের এমপি জেপির আনোয়ার হোসেন মঞ্জু পিরোজপুর-২ আসন থেকে নির্বাচন করবেন। ২০১৪ সালের নির্বাচনে এই দলটি থেকে এমপি হওয়া মো. রুহুল আমিন কুড়িগ্রাম-৪ আসনে প্রার্থী হবেন। শেখ হাসিনার খালাত ভাই জেপির মহাসচিব শেখ শহিদুল ইসলাম মাদারীপুর-৩ আসনের প্রার্থী।

বিএনপির সাবেক এমপি এবং ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে তৃণমূল বিএনপিতে যোগ দেওয়া শাহ মো. আবু জাফর ফরিদপুর-২ আসনে প্রার্থী হবেন। সম্প্রতি তিনি জাপায় (আনিস) যোগ দিয়েছেন। জি এম কারের নেতৃত্বাধীন অংশ ছেড়ে এই দলে এসেছেন ব্যবসায়ী এস আলমের বেয়াই সোলায়মান আলম শেঠ। তিনি চট্টগ্রাম-৯ আসনে প্রার্থী হবেন। ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে তিনি এ আসনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোটের প্রার্থী ছিলেন।

জাতীয় পার্টি (আনিস) থেকে এ জোটে প্রার্থী হবেন চট্টগ্রাম-১২ আসনের সাবেক এমপি সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী এবং চট্টগ্রাম-৭ আসনের সাবেক এমপি  নজরুল ইসলাম। জিয়াউর রহমানের শাসনামলে এমপি ছিলেন নজরুল। আরেক সাবেক এমপি ডেমোক্রেটিক পার্টির আতাউর রহমান বিল্লাহ গাইবান্ধা-৪ আসনে জোটের প্রার্থী হবেন।

জেপিকে সংলাপে না ডাকায় নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করে আনোয়ার হোসেন মঞ্জু বলেন, তারা নিজেরা নিজেরা নির্বাচন করছে। কী মনে করেন দেশটাকে? রাস্তাঘাটে চলবেন না?

জুলাইযোদ্ধা শরিফ ওসমান হাদীর মৃত্যুর পর আনিসুল ইসলাম মাহমুদের চট্টগ্রামের বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়। তিনি বলেন, এসব ঘটনা হঠাৎ মব নয়। 

গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা রক্ষায় আওয়ামী লীগ আমলে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন বলে দাবি করে তিনি বলেন, গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি বলেই এবারও নির্লজ্জের মতো নির্বাচনে যাচ্ছি। নির্বাচন করতে চাই। সরকার মব বন্ধ করুক।