Image description

৫ আগস্টের পর বিভিন্ন কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন অন্তত ১২ জন শীর্ষ সন্ত্রাসী। নিয়ম মেনে মুক্তি পেলেও আধিপত্য বিস্তার ও রাজনৈতিক স্বার্থ প্রতিষ্ঠায় তাদের অনেককেই সক্রিয় দেখা যাচ্ছে। গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের তথ্য বলছে, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এসব চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের ছত্রছায়ায় বড় ধরনের নাশকতার আশঙ্কা রয়েছে। যদিও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দাবি, সবাই নজরদারির মধ্যেই রয়েছে।

 

নির্বাচনি তফসিল ঘোষণার ঠিক পরদিন ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী শরীফ ওসমান হাদিকে গুলি করে পালিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনার পর থেকেই জনমনে প্রশ্ন উঠেছে- ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কতটা শান্তিপূর্ণ হবে।

তথ্য অনুযায়ী, ৫ আগস্টের পরপরই বিভিন্ন কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পায় ১২ জন শীর্ষ সন্ত্রাসী। এদের মধ্যে রয়েছে সুইডেন আসলাম, কিলার আব্বাস, ফ্রিডম রাসু, পিচ্চি হেলাল ও ইমন। মুক্তির পর থেকেই রাজধানীতে হত্যা, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপরাধের নেপথ্যে তাদের নাম উঠে আসছে। এছাড়া কারাগার থেকে পালিয়ে যাওয়া শীর্ষ ১৩ জঙ্গিও এখনো ধরা পড়েনি।

কারা অধিদপ্তরের এআইজি ফরহাদ হোসেন বলেন, কোনো বন্দি কারাগারে আসার সময় কে শীর্ষ সন্ত্রাসী আর কে সাধারণ অপরাধী—তা আলাদাভাবে চিহ্নিত থাকে না। তবে তথ্য সংগ্রহের সুবিধার্থে মামলার ধরন ও অভিযোগ অনুযায়ী কিছু শনাক্তকরণ রাখা হয়। সে হিসেবে ৫ আগস্টের পরবর্তী সময়ে প্রায় ১২ জন বন্দি জামিনে মুক্তি পেয়েছেন।

পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, গত এক বছরে সারা দেশে গড়ে প্রতিদিন ১১ জন করে মানুষ হত্যার শিকার হয়েছেন। পাশাপাশি ৫ আগস্টের আগে ও পরে বিভিন্ন থানা থেকে লুট হওয়া এক হাজার ৩০০ এর বেশি অস্ত্র এবং আড়াই লাখেরও বেশি গোলাবারুদ এখনো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি, যা বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে ব্যবহৃত হচ্ছে।

নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) আ ন ম মনিরুজ্জামানের মতে, এসব ঘটনাপ্রবাহ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে একটি ঘোলাটে পরিস্থিতির ইঙ্গিত দিচ্ছে। তিনি বলেন, সামগ্রিক নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা নতুন করে সমীক্ষা করতে হবে। যেসব প্রার্থী বা রাজনৈতিক নেতা হুমকির মুখে রয়েছেন, প্রয়োজনে তাদের জন্য বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা দরকার।

তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দাবি, জামিনে মুক্তি পাওয়া শীর্ষ সন্ত্রাসীরা নজরদারিতেই রয়েছে এবং নির্বাচন সামনে রেখে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

ডিএমপির মুখপাত্র তালেবুর রহমান বলেন, যাদের নামে একাধিক মামলা রয়েছে এবং যারা বিভিন্ন গুরুতর অপরাধে জড়িত থাকার তথ্য রয়েছে, তাদের বিষয়গুলো পুলিশ গুরুত্বের সঙ্গে নজরে রাখছে। ইতোমধ্যে জামিনে মুক্তি পাওয়া ব্যক্তিদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট যেসব ঘটনার তথ্য পাওয়া যাচ্ছে, সেগুলো গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

তিনি আরও জানান, ৫ আগস্টের পর বিভিন্ন কারাগার থেকে পালিয়ে যাওয়া ২ হাজার ২৫০ জন আসামির মধ্যে এখনো সাড়ে ৬শ জন গ্রেপ্তার হয়নি। তাদের গ্রেপ্তার ও খোয়া যাওয়া অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।