Image description

শরিফ ওসমান হাদির হত্যাকাণ্ডের পেছনে অন্যতম মাস্টারমাইন্ড হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন কেরানীগঞ্জ উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান শাহীন আহমেদ, যিনি ‘শাহীন চেয়ারম্যান’ হিসেবে পরিচিত। গোয়েন্দা সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, হত্যার জন্য অর্থ এবং অস্ত্র সরবরাহকারী ছিলেন তিনি। এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে আরও কয়েকজনের সংশ্লিষ্টতার বিষয়েও তদন্ত চলছে, যাদের মধ্যে কিছু নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ নেতার নাম উঠে এসেছে।

গোয়েন্দা সূত্র জানায়, হত্যাকাণ্ডের পর গোপালগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আব্দুল হামিদকে খুঁজছে পুলিশ। হামিদকে সন্দেহ করা হচ্ছে, কারণ তিনি হত্যাকাণ্ডের পর ঘাতকদের ঢাকার সীমান্ত এলাকা পর্যন্ত পালিয়ে যেতে সাহায্য করেছিলেন। এ হত্যাকাণ্ডের পেছনে বড় একটি রাজনৈতিক কারণে ছিল- শরিফ ওসমান হাদি ছিল আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে একাধিক পদক্ষেপের অংশ, বিশেষ করে ২০২২ সালের জুলাইয়ে তার অবদানের পর দলের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছিল। আওয়ামী লীগ তাকে তাদের জন্য বড় বিপদ মনে করে, এবং হত্যার পরিকল্পনা তৈরি করা হয়।

শাহীন আহমেদ ঢাকা দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি হলেও, তার নাম মাফিয়া ডন হিসেবে বেশি পরিচিত। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুর ডানহাত ছিলেন। তার নাম পুলিশ রেকর্ডে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত হিসেবে বহুবার তালিকাভুক্ত হয়েছে। তবে তিনি প্রশাসনের চোখে ধুলো দিয়ে অনেকবার উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। স্থানীয়দের মতে, গত বছর ৫ আগস্টের পর তিনি ভারতে পালিয়ে গিয়েছিলেন, তবে সম্প্রতি

বর্তমানে তিনি বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপের মাধ্যমে দেশে থাকা স্লিপার সেলের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছেন, যাতে আওয়ামী লীগের হিটলিস্ট বাস্তবায়ন করা যায়। গোয়েন্দা সূত্র জানায়, হত্যার আগে এবং পরে হোয়াটসঅ্যাপ কল ও এসএমএসের মাধ্যমে তার এবং আব্দুল হামিদের একাধিক যোগাযোগের প্রমাণ পাওয়া গেছে। এই ঘটনার তদন্তে সন্দেহভাজন আরও কয়েকজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের নাম উঠে এসেছে এবং গোয়েন্দা সংস্থা তাদের বিরুদ্ধে তথ্য সংগ্রহ করছে।

ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) শফিকুল ইসলাম জানান, মামলাটি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে এবং আশা করা যাচ্ছে শিগগিরই হত্যার মূল পরিকল্পনাকারীসহ সমস্ত দোষীদের চিহ্নিত করা সম্ভব হবে।

এই হত্যাকাণ্ডের তদন্তের সঙ্গে জড়িত গোয়েন্দা এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী কেরানীগঞ্জের ছাত্রলীগ নেতাদের গ্রেফতার করার জন্য অভিযান চালাচ্ছে।