আওয়ামী লীগের যারা সন্ত্রাসী, তাদের বিরুদ্ধে মামলা না থাকলেও আইনের আওতায় নিয়ে আসতে পুলিশকে নির্দেশনা দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
আইনের আওতায় না আনলে পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
আজ বুধবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জে এক অনুষ্ঠান শেষে পুলিশকে এ নির্দেশনা দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।
এর আগে দুপুর আড়াইটার দিকে বিকেএমইএর পক্ষ থেকে জেলা পুলিশ ও শিল্প পুলিশকে তিনটি করে মোট ছয়টি গাড়ি উপহার দেওয়া হয়। এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।
ফেরার পথে তার পথ আটকায় ছাত্রনেতারা। তারা জুলাই অভ্যুত্থানের সময় লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার, আওয়ামী লীগ, ওসমান পরিবারের সদস্য এবং তাদের সহযোগীদের গ্রেপ্তার, সীমান্তে নিরাপত্তা বাড়ানো, ওসমান হাদির উপর হামলার মূল আসামিকে গ্রেপ্তার, থানা ও আদালতকে রাজনৈতিক বলয়মুক্ত রাখাসহ ৭ দফা দাবি জানান।
এ সময় জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, বৈষম্যবিরোধী জাতীয় ছাত্রশক্তি, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন-এনজিবি এবং ওয়ারিয়র্স অব জুলাই নামে সংগঠনগুলোর নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
দাবিগুলো 'যৌক্তিক' উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, 'এসব দাবি বাস্তবায়নে ইতোমধ্যে কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।'
পুলিশ 'মামলা নেই' বলে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করছে না বলে দাবি করেন ছাত্রনেতারা।
ওই দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ঘটনাস্থলে উপস্থিত জেলা পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান মুন্সীকে ডেকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নির্দেশ দেন, 'আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসী, তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা আছে কি না ওইটা দেখার কোনো ব্যাপার নাই। তাদের সাথে সাথে আইনের আওতায় নিয়ে আসবা। আর আইনের আওতায় না আনতে পারলে তোমাদের বিরুদ্ধেও কিন্তু ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
ওসমান হাদির সুস্থতা কামনায় দোয়া চেয়ে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, 'মূল অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব না হলেও তার ব্যবহৃত হাতিয়ার উদ্ধার করা হয়েছে।'
তিনি আরও বলেন, 'ওর সাথে যে আরেকজন ছিল তাকে গ্রেপ্তার করেছি, রিমান্ডেও নিয়েছি। বাকি কাজও আমরা আস্তে আস্তে করতে পারব।'
সম্প্রতি লুট হওয়া এবং অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের প্রশ্নে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার 'আলু-পেঁয়াজ নিয়ে বক্তব্য' প্রসঙ্গেও প্রশ্ন রাখেন ছাত্রনেতারা। উত্তরে উপদেষ্টা বলেন, 'ওটা কৃষি মন্ত্রণালয়ের অনুষ্ঠান ছিল বলে ওই মন্ত্রণালয়ের সমস্যাগুলো এবং কৃষকদের ব্যাপারে জানতে চেয়েছিলাম। অন্যান্য যেসব সমস্যা তা নিয়ে প্রতি সপ্তাহে আমরা সাংবাদিকদের নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বসি।'
এ সময় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বখস চৌধুরী, শিল্প পুলিশের প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি গাজী জসিম উদ্দিন, ঢাকা রেঞ্জ ডিআইজি রেজাউল করিম মল্লিক ও শিল্প পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি মো. আসাদুজ্জামানও উপস্থিত ছিলেন।
আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারের বিষয়ে জানতে চাইলে মুঠোফোনে জেলা পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান মুন্সী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমাদের অভিযান অলরেডি চলছে, চেকপোস্ট রয়েছে।'