Image description

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদিকে গুলি করে হত্যাচেষ্টার প্রতিবাদে সর্বদলীয় প্রতিরোধ সমাবেশ করেছে সংগঠনটি। এতে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো অংশ নিলেও যোগ দেয়নি বিএনপি। এ নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। সামাজিকমাধ্যম ও গণমাধ্যমে বিএনপিকে নিয়ে বিভিন্ন মন্তব্য এবং বিশ্লেষণ করছেন অনেকে। িেবভিন্ন মন্তব্য এবং বিশ্লেষণ করেছে অনেকে । 

গত সোমবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ইনকিলাব মঞ্চ আয়োজিত সমাবেশে জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন, এনসিপি, এবি পার্টি, গণঅধিকার পরিষদ, খেলাফত মজলিসসহ ফ্যাসিবাদবিরোধী বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের নেতাকর্মীরা যোগ দেন।


তবে বিএনপির কোনো নেতাকর্মী এই সমাবেশে উপস্থিত হননি। বিএনপি নেতাদের অনুপস্থিতি নিয়ে উপস্থিত দলগুলোর নেতাকর্মীদের মাঝে তখন বেশ কৌতূহল দেখা যায়। পর্যায়ক্রমে তা সামাজিকমাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়ে। গতকাল মঙ্গলবার বিভিন্ন সামাজিকমাধ্যম ও গণমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে অনেক আলোচনা ও বিশ্লেষণ হয়।

একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে, ইনকিলাব মঞ্চের পক্ষ থেকে বিএনপিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল এবং দলটি আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করেনি। যদিও দলটির কেউ সভায় উপস্থিত হননি। অবশ্য ইনকিলাব মঞ্চের সদস্যসচিব আবদুল্লাহ আল জাবের জানান, ওই সমাবেশে সংহতি জানিয়েছে বিএনপি।
সোমবার সমাবেশে উপস্থিত বক্তারা বলেন, আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী ভারত বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অঘোষিত যুদ্ধ শুরু করেছে এবং এর বিরুদ্ধে অবিলম্বে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ ও নিরাপত্তা পরিষদে যেতে হবে। সমাবেশের সভাপতি আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান উপস্থিত ছাত্র-জনতাকে শপথবাক্য পাঠ করান।


সমাবেশে দেওয়া বক্তাদের বক্তব্যের বিষয়ে বিএনপি নেতারা আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে দলটির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেছেন, রাজনৈতিকভাবে উত্তেজনা বা উস্কানিতে যেন জড়াতে না হয়; সেজন্যই তারা ওই সভায় যাননি।
তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস যেভাবে অপ্রীতিকর পরিস্থিতিতে পড়েন; সেটি সোমবারের সভায় দলটির নেতাদের না যেতে ভূমিকা রেখেছে।
বিশ্লেষকদের মতে, অভিজ্ঞতা থেকে দলটির নেতারা হয়তো আঁচ করেছেন যে বিভিন্ন ধরনের বিতর্কিত কিংবা উসকানিমূলক বক্তব্য আসতে পারে, যার দায় বিএনপি নিতে চায়নি।


এ বিষয়ে সাংবাদিক মোস্তফা ফিরোজ বলেন, ওসমান হাদির হত্যাচেষ্টার ঘটনাটি আস্তে আস্তে রাজনৈতিক ইস্যুতে পরিণত হয়েছে। একই সঙ্গে, এতে  রাজনৈতিক বিভাজনের একটি ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে। কারণ সর্বদলীয় সমাবেশে বিএনপি সংহতি জানালেও তাদের নেতারা উপস্থিত হননি।


তিনি বলেন, হাদিকে গুলির ঘটনার পর প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে যখন তিনটি দল সাক্ষাৎ করতে যায়, তখন সেখানে বলা হয় যে ইনকিলাব মঞ্চ একটি প্রতিবাদ সমাবেশ করবে। কিন্তু পরে হয়তো বিএনপি বুঝতে পারে, এ ধরনের সমাবেশে যদি যোগ দেয় তাহলে বক্তারা যেসব কথাবার্তা বলবে, সেটা তাদের জন্য এখন স্বস্তিকর হবে না। কারণ বিএনপি কোনোভাবেই অনুসন্ধানের আগে ভারত বা আওয়ামী লীগের ওপর এটা চাপাতে চায় না।
তিনি আরো বলেন, ভারতকে এখন টার্গেট করে বিএনপি এ ধরণের বক্তব্য দিতে চায় না। বিএনপি মনে করে, ভারতের সঙ্গে একটি সম্মানজনক ভারসাম্যমূলক সম্পর্ক থাকবে। হয়তো সেসব কারণেই বিএনপি নেতারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে, তারা সেখানে যাবেন না।

বিশ্লেষক মহিউদ্দিন আহমদ বলেন, মির্জা আব্বাস ও বিএনপির দিকে ওসমান হাদির সহকর্মীদের কেউ কেউ যে আঙুল তুলেছেন; তা দলটি ভালোভাবে নেয়নি। এছাড়া, বিএনপি কোনো অস্থির পরিস্থিতি চায় না, যা নির্বাচনকে হুমকিতে ফেলতে পারে। এ কারণে রাজপথ গরম করার পক্ষপাতী নয় তারা। আমার ধারণা, এসব কারণেই তাদের কেউ শহীদ মিনারে যায়নি।

তিনি আরো বলেন, ভারতকে এখন টার্গেট করে বিএনপি এ ধরণের বক্তব্য দিতে চায় না। বিএনপি মনে করে, ভারতের সঙ্গে একটি সম্মানজনক ভারসাম্যমূলক সম্পর্ক থাকবে। হয়তো সেসব কারণেই বিএনপি নেতারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে, তারা সেখানে যাবেন না।
এ বিষয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষক মহিউদ্দিন আহমদ বলেন, মির্জা আব্বাস ও বিএনপির দিকে ওসমান হাদির সহকর্মীদের কেউ কেউ যে আঙুল তুলেছেন; তা দলটি ভালোভাবে নেয়নি। এছাড়া, বিএনপি কোনো অস্থির পরিস্থিতি চায় না, যা নির্বাচনকে হুমকিতে ফেলতে পারে। এ কারণে রাজপথ গরম করার পক্ষপাতী নয় তারা। আমার ধারণা, এসব কারণেই তাদের কেউ শহীদ মিনারে যায়নি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক মোহাম্মদ মজিবুর রহমান বলেন, অভিজ্ঞতা থেকেই বিএনপি নেতারা হয়তো ধারণা করেছিলেন, ওই সভায় কী ধরনের বক্তব্য আসতে পারে। সে কারণেই হয়তো বিএনপি সতর্ক পদক্ষেপ নিয়েছে।