Image description

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য ইশতেহার চূড়ান্ত করছে জামায়াতে ইসলামী। দলীয় ফোরাম ছাড়াও বিশেষজ্ঞ বিভিন্ন মহলের প্রস্তাবের আলোকে প্রস্তুত করা হচ্ছে ইশতেহারটি। এতে নেওয়া হবে সাধারণ জনগণের মতামতও। এজন্য শিগগিরই প্রকাশ করা হবে ‘অ্যাপস’। জাতীয় ও এলাকাভিত্তিক নানা বিষয়ে মতামত প্রদানের জন্য সপ্তাহখানেক সময় দেওয়া হবে। সব মিলিয়ে নির্বাচনি মাঠে ভোটারদের আকৃষ্ট করতে ‘জনতার ইশতেহার’ শিরোনামে ইশতেহারটিতে ব্যাপক চমক দেখাতে চায় জামায়াত।

ইশতেহারে জনগণের মতামত নেওয়ার বিষয়টি প্রকাশ করেছেন দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান। গতকাল মঙ্গলবার তিনি নিজের ফেসবুক পেজে দেওয়া স্ট্যাটাসে লিখেছেন—‘আপনার একটি সুন্দর পরামর্শ বদলে দিতে পারে বাংলাদেশের আগামী। তাই, আপনার মতামতকে সঙ্গে নিয়েই তৈরি হবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ইশতেহার, ইনশাআল্লাহ।’ স্ট্যাটাসটির সঙ্গে ইশতেহার বিষয়ে মতামত পাঠানোর আহ্বানসম্বলিত একটি ফটোকার্ডও জুড়ে দেওয়া হয়। এতে বলা হয়েছে— আসছে...জনতার ইশতেহার।

এদিকে জামায়াত আমিরের স্ট্যাটাসের কমেন্ট অপশনে ইশতেহার বিষয়ে মতামত দিয়ে অসংখ্য পোস্ট করা হয়েছে। এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন অনেকে।

ফাহিমা আকতার সুমি তার কমেন্টে লিখেছেন—সবার আগে সব মানুষের মনকে সংস্কার করতে হবে। প্রতিহিংসা, অহমিকা, রেষারেষি সবকিছুকে পিছনে ফেলে সবাই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দেশ ও দশের জন্য এগিয়ে যেতে হবে।

মমিন নামে একজন আনঅফিসিয়াল পেজ থেকে বলেছেন—আপাতত দাবি একটাই চাঁদাবাজ আর দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ চাই, ডা. শফিকুর রহমান লিডার। এ কাজটা সবচেয়ে কষ্টসাধ্য হবে, তবুও করতে হবে তাওয়াক্কালতু আলাল্লাহী।

মাসুম বিল্লাহ লিখেছেন—বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশিদের রেমিট্যান্স বৈধ পথে প্রেরণে উৎসাহিত করা ও তাদের বিনিয়োগের জন্য বিশেষ সুরক্ষা নিশ্চিত করা।

আবুল হাসনাত সেলিম বলেছেন—স্বল্পমেয়াদি (মিশন) এবং দীর্ঘমেয়াদি (ভিশন) ইশতেহার দুই ভাগে প্রণয়ন করা উচিত। এক্ষেত্রে বেশকিছু প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি।

তবে ফেসবুকের এসব কমেন্ট আমলে নেওয়ার সম্ভাবনা নেই জানিয়ে জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এবং কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের প্রধান অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের বলেছেন, ইশতেহার বিষয়ে মতামত নেওয়ার বিষয়ে জামায়াত আমির প্রাথমিক ঘোষণা দিয়েছেন। এ বিষয়ে কয়েকদিনের মধ্যে আনুষ্ঠানিক ব্রিফিং করে একটি অ্যাপস উদ্বোধন করা হবে। সেখানে মতামত দিতে সপ্তাহখানেক সময় দেওয়া হবে। নির্ধারিত বিভিন্ন বিষয়ে জাতীয় ও এলাকাভিত্তিক মতামত প্রদান করা যাবে।

তিনি আরো জানান, আমাদের দলীয় ইশতেহার তৈরির প্রাথমিক পর্ব শেষে দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ চলছে। জনগণের মতামত নিয়ে তা শিগগিরই চূড়ান্ত করা হবে। এক্ষেত্রে দলীয় প্রার্থী এবং স্থানীয় ভোটারদের মতামত সংগ্রহ করে তা পর্যালোচনা করা হচ্ছে। সব মতামত সংরক্ষণে আর্কাইভ থাকবে। সামর্থ্য অনুযায়ী তা বাস্তবায়নের টাইমলাইন তথা স্বল্পমেয়াদি, মধ্যমেয়াদি এবং দীর্ঘমেয়াদি বিষয়গুলো সাজানো হবে।

ইশতেহারের নাম ‘জনতার ইশতেহার’ দেওয়ার কারণ প্রসঙ্গে অ্যাডভোকেট জুবায়ের বলেন, ইশতেহার তো জনগণের জন্য। তাদের পরামর্শ নিয়েই এটা করা হবে। তাই এটা জনতার ইশতেহার।

তিনি জানান, ইশতেহার দ্রুত চূড়ান্ত করা হলেও তা প্রকাশ করা হবে তফসিল ঘোষণার পর নির্ধারিত একটি সময়ে। আমরা নির্বাচন কমিশনে দাবি জানিয়েছি যে, সব দল যেন একই তারিখে ইশতেহার ঘোষণা করে। এ বিষয়ে ইসি সিদ্ধান্ত জানাবে। সে অনুযায়ীই আমাদের ইশতেহার প্রকাশ করা হবে। সব মিলিয়ে এবারের ইশতেহার খুব আকর্ষণীয়, বুদ্ধিদীপ্ত ও বিচক্ষণতার সঙ্গে প্রস্তুত করা হচ্ছে বলেও জানান এই নেতা।