Image description

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে প্রচার-প্রচারণায় সরগরম ফরিদপুর। জেলার চারটি সংসদীয় আসনে প্রচার চলছে পুরোদমে। স্বতন্ত্র প্রার্থীরাও চালাচ্ছেন প্রচার। জেলাজুড়ে এখন উৎসবের আমেজ। চারটি সংসদীয় আসনে বিএনপি, জামায়াত ও খেলাফত মজলিসের প্রার্থীরা প্রচারে এগিয়ে রয়েছেন।

ফরিদপুর-১ (বোয়ালমারী-আলফাডাঙ্গা-মধুখালী) আসনে কৃষক দলের সহসভাপতি সাবেক এমপি খন্দকার নাসিরুল ইসলাম, যুবদলের সাবেক সহসভাপতি মনিরুজ্জামান মনির, বোয়ালমারী উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্মসম্পাদক শামসুদ্দিন মিয়া ঝুনু, ছাত্রদল নেতা জয়দেব রায়সহ কয়েকজন মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন। কেন্দ্র থেকে ঘোষিত প্রথম দফার তালিকায় এ আসনের মনোনয়ন স্থগিত রাখা হয়। দ্বিতীয় দফার তালিকায় ফরিদপুর-১ আসনে প্রার্থী হিসেবে খন্দকার নাসিরুল ইসলামের নাম ঘোষণা করা হয়। এর পরই দলের নেতা-কর্মীরা একজোট হয়ে শুরু করেছেন প্রচারণা। আসনটিতে বিএনপি, খেলাফত মজলিস ও জামায়াতের প্রার্থীর মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই আশা করছেন ভোটাররা। জামায়াত ও খেলাফত মজলিস জোট হলে জোটের প্রার্থী হতে পারেন খেলাফত মজলিসের মুফতি শারাফাত হোসাইন। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জোর প্রচার চালাচ্ছেন শিল্পপতি আবুল বাশার খান। সাংবাদিক আরিফুর রহমান দোলনও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করবেন বলে শোনা যাচ্ছে।

বিএনপির প্রার্থী খন্দকার নাসিরুল ইসলাম বলেন, ‘ভোটাররা ধানের শীষের প্রার্থীকেই বেছে নেবেন।’ জামায়াতের প্রার্থী প্রফেসর ড. ইলিয়াস মোল্লা বলেন, ‘এবারের নির্বাচনে এ অঞ্চলের মানুষ দাঁড়িপাল্লায় ভোট দেবেন।’

খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব মুফতি শারাফাত হোসাইন বলেন, ‘ফরিদপুর-১ আসনের মানুষ এবার ইসলামপ্রিয় একজনকে ভোট দেবেন।’

ফরিদপুর-২ (নগরকান্দা-সালথা) আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছেন ফরিদপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ ইসলাম রিংকু। জামায়াতের প্রার্থী সোহরাব হোসেন। খেলাফত মজলিসের শায়খুল হাদিস আল্লামা আকরাম আলী। এ আসনে বিএনপির সঙ্গে খেলাফত মজলিস প্রার্থীর লড়াই হবে বলে জানান ভোটাররা।

এ আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী, কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুলকে অন্য আসনে সরিয়ে নেওয়ায় বর্তমানে তেমন একটা গ্রুপিং নেই। বরং বিএনপির অবস্থান বেশ শক্তিশালী। সাংগঠনিকভাবে যে কোনো সময়ের চেয়ে দলটির অবস্থান সুদৃঢ়। ফলে শামা ওবায়েদ রয়েছেন ভালো অবস্থানে। শামা ওবায়েদ বলেন, ‘এবার মানুষ বিএনপির ধানের শীষে ভোট দেবেন।’ বিপুল ভোটের ব্যবধানে তিনি এমপি নির্বাচিত হবেন বলে আশা করছেন। আসনটিতে খেলাফত মজলিসের প্রার্থী আকরাম আলী প্রচার চালাচ্ছেন বেশ জোরেশোরে। তিনি বলেন, ‘মানুষ ইসলামি দলকে এবার ক্ষমতায় দেখতে চায়।’

ফরিদপুর-৩ (সদর) আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছেন দলটির সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফের মেয়ে চৌধুরী নায়াব ইউসুফ। জামায়াতের প্রার্থী কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরার সদস্য আবদুত তাওয়াব। জেলার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এ আসনে বিএনপি-জামায়াতের মধ্যে লড়াই হবে বলে ভোটারদের ধারণা।

বিএনপির ভোটব্যাংক এবং সাবেক মন্ত্রী মরহুম চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফের জনপ্রিয়তা কাজে লাগিয়ে আসনটি দখলে নিতে মরিয়া চৌধুরী নায়াব ইউসুফ। চৌধুরী নায়াব ইউসুফ বলেন, ‘আসনটি বিএনপির ঘাঁটি। বিগত দিনে আওয়ামী লীগ বিতর্কিত নির্বাচন করে আসনটি তাদের দখলে রাখলেও এবার মানুষ বিএনপিকেই ভোট দেবে।’

এ আসনে দীর্ঘদিন ধরে জামায়াতের প্রার্থী প্রচার চালাচ্ছেন। ফলে জামায়াত প্রার্থী লড়াইয়ে থাকবেন বলে মনে করছেন ভোটাররা। আবদুত তাওয়াব বলেন, ভোটাররা এবার তাঁকেই ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবেন।

ফরিদপুর-৪ (ভাঙ্গা-সদরপুর-চরভদ্রাসন) আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছেন কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল। খেলাফত মজলিসের প্রার্থী মাওলানা মিজানুর রহমান মোল্লা। জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী মাওলানা সারোয়ার হোসাইন। বিএনপির প্রার্থীর সঙ্গে খেলাফত মজলিস প্রার্থীর তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে মনে করেন ভোটাররা।

বিএনপি প্রার্থী শহিদুল ইসলাম বাবুল বলেন, এবার বিএনপি চমক দেখাবে। মানুষ ধানের শীষে ভোট দিয়ে তাঁকে সংসদে পাঠাবেন। খেলাফত মজলিসের মাওলানা মিজানুর রহমান মোল্লা বলেন, এ আসনের মানুষ রিকশা প্রতীকে ভোট দিয়ে তাঁকে নির্বাচিত করবেন।

এ আসনে খেলাফত মজলিসের সঙ্গে জামায়াতের জোট হলে জোটের একক প্রার্থী হিসেবে সারোয়ার হোসাইনকে দেখা যেতে পারে।