Image description

বিএনপি জামায়াতের সাথে জোটের কোন সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দিচ্ছে না এনসিপি এমন মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম।

 

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পঞ্চগড় জেলা শহরের শেরে বাংলা পার্ক এলাকায় জুলাই স্মৃতিস্তম্ভের পাদদেশে এনসিপির সুপারিশে উন্নয়ন বরাদ্দ পাওয়া বিভিন্ন মসজিদের মন্দিরের তালিকা প্রকাশ ও প্রতিনিধিদের সাথে মতবিনিময় শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের এ কথা বলেন তিনি।  

এসময় সারজিস বলেন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা এখনো চলছে। যারা সংস্কারের পক্ষে থাকবে, জুলাইয়ের আকাঙ্খার পক্ষে থাকবে, ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে মুসলিম সেন্টিমেন্ট ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির রাজনীতি যারা ধারণ করতে পারবে তাদের সাথে এলায়েন্সের পথ এখনো খোলা আছে। খুব শিগগিরই এটার আমরা সুন্দর সমাধান দেখতে পাবো। মাঝে আমাদের জোট ঘোষণার কথা ছিলো।  কিন্তু এই জোট ঘোষণার যে রূপরেখা ও বিস্তৃতি আরও বড় হওয়া প্রয়োজন মনে করি।  আশা করছি শিগগিরই বড় আকারে জোট প্রকাশিত হবে।

 

তিনি আরও বলেন, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই তিনশ আসনে এনসিপির মনোনয়ন চূড়ান্ত করবে আগামী শনিবারের মধ্যে। সেই সাথে ডিসেম্বরের মধ্যে তা প্রকাশ হবে। এনসিপি সৎ, যোগ্য, যারা বাংলাদেশের পরিবর্তন করতে চায়, সচ্ছ্ব ধারার রাজনীতি করতে চায় বাস্তবায়নের মানুষের জন্য কথা বলতে সংসদে গিয়ে কথা বলতে চায় কাজ করতে চায়। আমরা তাদেরকে মনোনয়ন দিতে পারব এবং জনগণের ভোটের মাধ্যমে তারা বিজয়ী হয়ে আগামীতে জনগণের প্রতিনিধিত্ব করবে। 

 

সারজিস বলেন, বাংলাদেশের তিনটি বৃহৎ রাজনৈতিক দল রয়েছে।  তার মধ্যে বিএনপির জামায়াত এবং এনসিপি রয়েছে। বিএনপি এবং এনসিপি মধ্য পন্থার রাজনীতি করে। আর জামায়াত তাদের জায়গা থেকে ধর্ম ভিত্তিক করে, ইসলামিক রাজনীতি করে কোন সমস্যা নেই। আলাদা আলাদা আইডিওলজি থাকতে পারে এটা নিয়েও কোন সমস্যা নেই। কিন্তু কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে।  আমরা যাতে নিজের আদর্শটা অন্যের উপর চাপিয়ে দিতে চেষ্টা না করি। চেষ্টার ফল ভয়াবহ। এই চেষ্টা যদি আমরা করতে চাই অনেক দীর্ঘ মেয়াদে বাংলাদেশের দৃশ্য দেখতে পাচ্ছি না। যেভাবে শেখ হাসিনা দেখে নাই। মনে করেছিল আমৃত্যু তাকে কেউ সরাতে পারবে না। কিন্তু যেই কয়েকটা ছেলে বা শিক্ষার্থীদেরকে তারা হিসেবেই করে নাই তাদের দিয়েই তাদের পতন হয়েছে। 

সদ্য ঘোষিত পঞ্চগড় জেলা কমিটিতে বিএনপি, জাতীয় পার্টির নেতাদের অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে সারজিস বলেন, আমরা চেষ্টা করেছি যেই মানুষগুলোর ভালো ইমেজ আছে, যারা মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য এবং ভালো রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা ও সচেতনতা আছে আমরা তাদের নেয়ার চেষ্টা করেছি। একটা শর্ত সব সময় আমাদের ছিলো যারা গণ অভ্যুত্থান চলাকালীন সময়ে আওয়ামী লীগের যে কোন ইউনিটে রানিং পদধারী ছিলো তাদেরকে আমাদের আহ্বায়ক বা সমন্বয় কমিটিতে শুধু পঞ্চগড়ে নয় বাংলাদেশের কোথাও রাখি নাই। আবার রানিং ছিলো না বাট লোকটার ইমেজ ভালো।  আমাদের এখানে বেশ কয়েকজন মানুষ আছেন যারা পূর্বে বিএনপি, জাগপা ও জাতীয় পার্টির সাথে সম্পৃক্ততা ছিলো। কিন্তু চব্বিশে তারা রানিং কোন পদ পদবিতে ছিলেন না।  তারা বলেছে ওই সময়ে তারা রাজনৈতিক রীতিনীতি, নেতাকর্মীদের শৃঙ্খলাসহ সমাগ্রিক বিষয়ে তারা বিরক্ত হয়ে  ওই আদর্শের সাথে মেলাতে না পেরে তারা রাজনীতি থেকে দূরে সরে গিয়েছিল। এখন তারা দেখছে এনসিপি দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, সিন্ডিকেট, টেন্ডারবাজি থেকে শুরু করে সকল অপকর্মের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে এবং নতুন রাজনীতির চর্চা করছে এবং লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে।  তাই তারা এনসিপিতে আসার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। আমরাও তাদের খোঁজ খবর নিয়ে তাদের এনসিপিতে নিয়ে এসেছি। আমরা একসাথে কাজ করে আগামীর প্রত্যাশিত পঞ্চগড়কে গড়ে তুলবো। 

তিনি আরও বলেন, আমরা গত তিন মাসে দুইশো মসজিদ মন্দিরের জন্য প্রায় ৪ কোটি টাকা বরাদ্দ এনেছি।  যা গত বিশ বছরে বড় বড় এমপি মন্ত্রীরা আনতে পারেনি।  

এ সময় এনসিপির জেলা ও উপজেলার নেতাকর্মী ও জাতীয় যুব শক্তির নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন মসজিদ মন্দিরের কমিটির লোকজন উপস্থিত ছিলেন।