কিশোরগঞ্জ-২ আসনে রাজনৈতিকভাবে ভিন্নমতের দুই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী—একজন বিএনপি থেকে এবং অন্যজন জামায়াতে ইসলাম—একই ওয়াজ মাহফিলের মঞ্চে সৌহার্দ্যপূর্ণ আচরণ প্রদর্শন করে সাধারণ মানুষের নজর কেড়েছেন।
একই মঞ্চে পাশাপাশি বসা, পরস্পরের প্রতি সম্মানজনক আচরণ এবং হাসিমুখে শুভেচ্ছা বিনিময়ের দৃশ্য উপস্থিত মানুষের মাঝে ইতিবাচক বার্তা ছড়িয়ে দেয়। রাজনৈতিক উত্তেজনার সময়েও এ ধরনের ভদ্রতা ও সহনশীলতা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক প্রশংসা পাচ্ছে। অনেকেই এটিকে দেশের গণতান্ত্রিক চর্চায় বিরল ইতিবাচক দৃষ্টান্ত হিসেবে দেখছেন।
ঘটনাস্থলে দেখা যায়, কিশোরগঞ্জ-২ আসনের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী মো. জালাল উদ্দিন মঞ্চে বসে ছিলেন। এসময় জামায়াতে ইসলামের মনোনীত প্রার্থী মাওলানা শফিকুল ইসলাম মোড়ল একই মঞ্চে উঠলে বিএনপি প্রার্থী তাৎক্ষণিক উঠে দাঁড়িয়ে মাইক্রোফোন হাতে তাঁর নাম ঘোষণা করেন। পরে সম্মান জানিয়ে বক্তব্য দেওয়ার জন্য তাঁর হাতে মাইক্রোফোন তুলে দেন।
দুই ভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রার্থীর এই আন্তরিক ও ভদ্র আচরণ দেখে উপস্থিত ওলামায়ে কেরামসহ সাধারণ মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। স্থানীয়রা বলছেন, বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতায় এমন সৌহার্দ্যপূর্ণ দৃশ্য খুব একটা দেখা যায় না।
ওয়াজ শুনতে আসা মনির হোসেন জানান, এটাই প্রকৃত রাজনৈতিক চর্চা। আমরা সাধারণ ভোটাররা চায়ের দোকানে আড্ডায় অনেক সময় তর্কে জড়িয়ে পড়ি। অথচ নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রার্থীদের আচরণই হওয়া উচিত অনুসরণযোগ্য। যার ব্যবহার ভালো, আমরা তাকেই ভোট দিতে চাই। আগে প্রার্থীরা প্রায়ই কটূক্তি করতেন, কিন্তু আজ তাঁদের সম্মানজনক আচরণ দেখে ভালো লেগেছে।
কয়েকদিন পূর্বে এক জানাযার মাঠে উভয় প্রার্থীর দেখা হলে হাসিমুখে এগিয়ে এসে কোলাকুলি করে কোশল বিনিময় করেন।
এসব ঘটনার ভিডিও ও ছবি মুহূর্তেই সামাজিক যোগাযোগ-মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। অনেকেই মন্তব্য করেন, দুই প্রার্থীর বক্তব্য ও আচরণ সত্যিই অনুকরণ-যোগ্য। রাজনৈতিক ব্যক্তিদের আচরণ এমন হলে দেশ ও জাতি উপকৃত হবে।
ভোটার মো. রফিকুল ইসলাম জানান,কিশোরগঞ্জ-২ আসন দেশে সৌহার্দ্যপূর্ণ রাজনীতির রোল মডেল হতে পারে। জানাজা ও ওয়াজ মাহফিলে ভিন্নমতের প্রার্থীদের মধ্যে আমরা সম্মানজনক আচরণ দেখছি—যা আগে দেখা যেত না। আমরা প্রতিহিংসা নয়, সৌহার্দ্যপূর্ণ রাজনীতি চাই।