Image description

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম সদস্যসচিব এস এম সাইফ মোস্তাফিজ বলেছেন, অবশ্যই আমাদের (এনসিপি) লিমিটেশনস আছে। আমাদের ভুল আছে। কিন্তু সেই ভুল এমন না যে সেটা সংশোধন করার মতো না। আমরা বারবারই বলছি যে আমাদের দ্বারা অনেক ভুলই হয়েছে।

আমাদের নতুন একটি রাজনৈতিক দল। সবেমাত্র সাত আট মাস হয়েছে। সেই জায়গা থেকে কিছু ভুল আমাদের হয়েছে। কিন্তু উনাদের (সাংবাদিক মঞ্জুরুল আলম) মতো যারা অনেকদিন ধরে সাংবাদিকতা করছেন বা মিডিয়া হাউজগুলোতে আছেন, তারা সেই ছোট ভুলটাকে এত বড় করে দেখানোর চেষ্টা করে, যেখানে আসলে মনে হয় যে আমরা আসলে অনেক বড় পাপ, অনেক বড় অন্যায় করে ফেলছি।

মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) কালের কণ্ঠের ‘কালের সংলাপ’ অনুষ্ঠানে এক টক শোতে এসব কথা বলেন তিনি।

সাইফ মোস্তাফিজ বলেন, আমরা বারবার বলছি যে এই সময়টাতে আসলে তরুণরা যতটুকু পজিটিভ এনার্জি নিয়ে রাজনীতিতে এসেছে, কোনো সময় এরকমটা আর হয়নি। এখানে অনেক তরুণদের সুযোগ ছিল আসলে, নিজেদের আরো ভালো লাইফস্টাইল লিড করার জন্য দেশের বাইরে চলে যাওয়া, পড়াশোনা করার জন্য অথবা দেশে অনেকে আরো অনেক ভালো পেশায় যুক্ত হতে পারতেন, কিন্তু সবকিছু ছেড়ে রাজনীতিতে যুক্ত হওয়ার ইনটেনশনই ছিল যে একটা পজিটিভ পরিবর্তন আনার জন্য।

এ সময় উপস্থাপক প্রশ্ন করেন, পজিটিভ পরিবর্তন আনতে পেরেছেন কি না আপনারা? 

জবাবে তিনি বলেন, এত বছরের একটা সিস্টেম্যাটিক জায়গা আপনি তো রাতারাতি বদলে ফেলতে পারবেন না।

আমরা তো চেষ্টা করে যাচ্ছি। রাজনৈতিক জায়গা থেকে এর আগে কবে এরকম ওপেনলি নমিনেশন ফর্মের জন্য মানুষকে আহ্বান করা হয়েছে যেখানে সব রকম শ্রেণিপেশার মানুষ যুক্ত হচ্ছে? এর আগে কোন রাজনৈতিক দল ক্রাউড ফান্ডিং চালু করেছে? এর আগে কোন রাজনৈতিক দল নিজেদের আয়-ব্যয়ের জায়গাটা, স্বচ্ছতার জায়গাটা নিশ্চিত করার কথা বলেছেন? আমরা বারবার বলছি যে আমরা প্রত্যেকটা জায়গায় স্বচ্ছ থাকার চেষ্টা করছি, কিন্তু আমাদের রাজনৈতিক যে বন্দোবস্তের জায়গা সেখানে অনেক কিছুতে আমাদের দেখা যাচ্ছে যে পুরনো কায়দায় যুক্ত হওয়ার সুযোগ তৈরি হচ্ছে। কিন্তু তারপরও আমরা সেই জায়গা থেকে বের হয়ে নিজেরাই নতুন জায়গা তৈরি করছি। আমরা দেখলাম যে বিএনপির থেকেও নতুন করে ক্রাউড ফান্ডিং মডেলটা ফলো করছে। তো এই পরিবর্তনগুলো তো বড় বড় রাজনৈতিক দলগুলোকেও নতুন পথ দেখাচ্ছে।

সাইফ মোস্তাফিজ বলেন, তুষার ভাই (সংলাপের আরেকজন অতিথি) অনেকগুলো কথা বললেন যে শ্রমিক ইউনিয়ন আছেন বা তা আমি তো এটাই বললাম যে আমাদের যারা রিপ্রেজেন্টেটিভ থাকে স্পেশালি শ্রমিকদের, তারা আসলে ওইভাবে আমাদের যারা শ্রমিকদের যে জায়গাগুলো থাকে বা তাদের যে চাওয়া-পাওয়া থাকে, সেটা কিন্তু তারা ওইভাবে রিপ্রেজেন্ট করতে পারে না, বরং দেখা যায় যে শোষক শ্রেণির জন্যই তারা একরকম আশীর্বাদ বয়ে আনার চেষ্টা করে। আমরা তো বলছি যে জনগণের হাতে সে ক্ষমতাটা থাকবে। তারা যদি মনে করে যে এই মানুষটার দ্বারা পরিবর্তন সম্ভব তাহলে তারা সেটা চুজ করবে। তার হাতে তো অপশন দেওয়া উচিত। এখন আমি তো বললাম যে সংসদে শুধুমাত্র আইন প্রণয়নও না, সংসদে তো ৩০০ জনই যে রিকশাওয়ালা বা শ্রমিক হবে- সেটা না। একজন দুইজনের জায়গা যদি থাকে, তারা তাদের জায়গাটা নিয়ে কথা বলতে পারবে। হ্যাঁ। তার (রিকশাওয়ালা) লিমিটেশনস অবশ্যই আছে যে সে সংবিধান হয়ত বুঝবে না, সে আইন প্রণয়নের জায়গাগুলো বুঝবে না, কিন্তু সেই আইন প্রণয়ন, সংবিধানের জায়গা বুঝানোর জন্য তার ক্ষেত্রে কিছু লোকবল তার সঙ্গে কাজ করতেই পারে। সেই কণ্ঠস্বর তো সংসদে থাকা উচিত। আমরা গুটিকয়েক মানুষই কেন সবার ভাগ্য নির্ধারণ করে দেব যেখানে ২০ কোটি মানুষ বাংলাদেশে বসবাস করেন।

তিনি আরো বলেন, আমরা দেখছি যে একটা শ্রেণির কাছেই বারবার রাজনীতিটা আমরা বর্গা দিয়ে দিচ্ছি, পরিবারতান্ত্রিক জায়গা থেকে বর্গা দিয়ে দিচ্ছি এবং তুষার ভাইয়ের সঙ্গে আমি এটা এগ্রি করি যে রাজনীতিটা মূলত ওই টপ কয়েকজন নেতার হাতেই সবসময় থাকে। তারাই আসলে বারবার করে ব্যবসায়ীদের কাছে হয়ত বর্গা দিয়ে দেয়, বিভিন্ন এজেন্সির কাছে বর্গা দিয়ে দেয়। এই জায়গাগুলো আসলে তাদের সদিচ্ছার জায়গাটা যদি না থাকতো, তাহলে এই জায়গায় পৌঁছাতো না। আমরা সেই জায়গায় তরুণরা চেষ্টা করছি যেন আমাদের রাজনীতির জায়গাটা কারো হাতে বর্গা দিতে না হয়।