Image description

দেশের শীর্ষস্থানীয় জাতীয় পত্রিকায় সোমবার (২৪ নভেম্বর) প্রকাশিত কিছু খবর নিচে তুলে ধরা হলো।

এই প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে বড় ধরনের ভূমিকম্প বা দুর্যোগে উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় আধুনিক সরঞ্জামের ঘাটতি গুরুতর আকার ধারণ করেছে। গত ১৯ বছরে কেনা উদ্ধার সরঞ্জামের অর্ধেকই মেয়াদোত্তীর্ণ বা অচল হয়ে গেছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর ২০২১ সালে ১ হাজার ৮৫১ কোটি টাকার যন্ত্রপাতি সংগ্রহ প্রকল্প নিলেও চার বছরে লক্ষ্য মাত্রার মাত্র ২০ শতাংশ সরঞ্জাম কেনা সম্ভব হয়েছে।
এর আগে ২০০৬ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত দুই ধাপে ২১২ কোটি টাকার সরঞ্জাম কেনা হলেও সেগুলোর বড় অংশ অচল অবস্থায় আছে।
 
মন্ত্রণালয়ের এক প্রতিবেদনে দেখা যায়, সশস্ত্র বাহিনীকে দেওয়া ২০ শ্রেণির ৮০৭টি সরঞ্জাম সম্পূর্ণ অচল, এবং ১৯১টি সরঞ্জাম মেরামতের প্রয়োজন। স্প্রেডার, র‍্যাম জ্যাক, কংক্রিট কাটার, ব্রিদিং অ্যাপারেটাস, ক্রেন, এক্সকাভেটরসহ গুরুত্বপূর্ণ উদ্ধার যন্ত্রপাতি অকেজো হয়ে পড়ায় বড় দুর্ঘটনার সময় উদ্ধার কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের মতে, আধুনিক উদ্ধার সরঞ্জামের পাশাপাশি বিভিন্ন সুরক্ষা স্যুট, ড্রোন, হাই-প্রেশার হোস, হাইড্রোলিক কাটারসহ ৩৫ ধরনের যন্ত্রপাতি তাদের জরুরি প্রয়োজন।
 
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সাবেক মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আলী আহমদ খান বলেন, পাওয়া সরঞ্জামগুলোর অনেকই এখন পুরোনো এবং সেগুলো ব্যবহারের মতো প্রশিক্ষিত জনবলও নেই। ফায়ার সার্ভিসের কোনো পূর্ণাঙ্গ প্রশিক্ষণ একাডেমি না থাকায় আন্তর্জাতিক মানের উদ্ধার তৎপরতার সঙ্গে সমন্বয় করাও কঠিন। তার মতে, প্রতিটি ওয়ার্ডে সরঞ্জাম রাখা এবং কমিউনিটি পর্যায়ে প্রশিক্ষিত স্বেচ্ছাসেবক তৈরির উদ্যোগ জরুরি।
 
সরঞ্জাম সংগ্রহে ধীরগতির কারণ হিসেবে প্রকল্প পরিচালক জানান, শুরুতে সরাসরি ক্রয়ের অনুমতি থাকলেও পরে উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতি গ্রহণ করায় অনুমোদন প্রক্রিয়া দীর্ঘ হয়েছে। দুর্যোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরঞ্জামের পাশাপাশি সংরক্ষণব্যবস্থা ও প্রশিক্ষিত জনবল গড়ে তোলাই এখন সবচেয়ে বড় প্রয়োজন।

এনসিপি জুলাই সনদে স্বাক্ষর করছে না কেন?- দৈনিক মানবজমিনের প্রথম পাতার সংবাদ এটি।

এই প্রতিবেদনে বলা হয়, জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে অস্পষ্টতা রয়েছে বলে জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। দলটির মতে, সনদে স্বাক্ষর করার আগে সরকারকে স্পষ্ট ব্যাখ্যা দিতে হবে। বিশেষ করে গণভোটের জন্য প্রস্তাবিত ‘ক’ প্রশ্নে বলা হয়েছে—তত্ত্বাবধায়ক সরকার, নির্বাচন কমিশন এবং অন্যান্য সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান জুলাই সনদের আলোকে গঠিত হবে; কিন্তু কোন প্রতিষ্ঠানগুলোকে সাংবিধানিক হিসেবে ধরা হচ্ছে, তা পরিষ্কার করা হয়নি।
 
উদাহরণ হিসেবে এনসিপি বলছে, বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী দুর্নীতি দমন কমিশন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান নয়। সনদে নোট অব ডিসেন্ট রাখা হবে কি না—এ বিষয়েও কোনো ব্যাখ্যা নেই।
 
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ঘোষণা দিয়েছেন যে সংসদ নির্বাচন ও গণভোট একই দিনে অনুষ্ঠিত হবে। রাষ্ট্রপতি ইতোমধ্যে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি করেছেন, যেখানে পিআর পদ্ধতিতে উচ্চকক্ষ গঠন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার তৈরি ও অন্যান্য কাঠামোগত পরিবর্তনসহ চারটি বিষয়ের ওপর একই প্রশ্নে ‘হ্যাঁ/না’ ভোটগ্রহণের কথা বলা হয়েছে। বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল আদেশটিকে স্বাগত জানালেও সতর্ক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে এনসিপি।
 
দলীয় সূত্র জানায়, সরকার সনদের ব্যাখ্যা, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান নির্ধারণ, গণভোটের প্রশ্নের স্পষ্টতা—এসব বিষয়ে পরিষ্কার ব্যাখ্যা দিলে তবেই এনসিপি স্বাক্ষর করার সিদ্ধান্ত নেবে। না হলে তাদের পক্ষে অগ্রসর হওয়া সম্ভব নয়। এনসিপি নেতাদের মতে, জনগণেরও জানার অধিকার আছে তারা কোন বিষয়ে ভোট দিচ্ছেন, তাই সরকারের উচিত ব্যাখ্যা পরিষ্কার করা।
 
উল্লেখ্য, ১৭ অক্টোবর জুলাই সনদে ২৫টি রাজনৈতিক দল স্বাক্ষর করলেও আইনি ভিত্তি ও বাস্তবায়ন আদেশ অসম্পূর্ণ মনে করে এনসিপি স্বাক্ষর অনুষ্ঠান থেকে বিরত ছিল। বামপন্থি চার দলও কয়েকটি নীতিগত আপত্তির কারণে সনদে স্বাক্ষর করেনি।
 
দুই বছরেও ২২৯টি ভবন নিয়ে ব্যবস্থা নেই-দৈনিক ইত্তেফাকের প্রথম পাতার প্রতিবেদন এটি।
 
এই প্রতিবেদনে বলা হয়, রাজউক ২০২৩ সালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হল ও আল বেরুনী হলকে অতি ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে তিন মাসের মধ্যে ভেঙে ফেলার সুপারিশ করলেও ভবনগুলো এখনো ব্যবহৃত হচ্ছে। শুধু এই দুই হল নয়—রাজধানীতে আরও ৪২টি ভবন ভেঙে ফেলার এবং ১৮৭টি ভবনকে রেট্রোফিটিং করার সুপারিশ করা হলেও দুই বছরেও বাস্তবায়ন হয়নি।

বিশেষজ্ঞদের মতে, সরকারি ভবনগুলোরই যখন এমন পরিস্থিতি, তখন বেসরকারি ভবনগুলো আরও নাজুক।
 
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন জানায়, সাম্প্রতিক ভূমিকম্পের পর পরিদর্শনে বড় কাঠামোগত ক্ষতি না পাওয়া গেলেও ভবনগুলো পুরোনো হওয়ায় রেট্রোফিটিংয়ের বিষয়টি বিবেচনায় নেওয়া হচ্ছে। ইউজিসি ও বুয়েটের বিশেষজ্ঞদের দিয়ে পূর্ণ কাঠামোগত মূল্যায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
 
রাজউকের ‘আরবান রেজিলিয়েন্স’ প্রকল্পের আওতায় ২০২৩ সালের জরিপে ২,৭০৫ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ২০৭ হাসপাতালসহ মোট প্রায় ৩,০০০ ভবন মূল্যায়ন করা হয়। এতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনটি, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের চারটি এবং পিজি হাসপাতালের তিনটি ভবনসহ ৪২টি ভবন ভেঙে ফেলার সুপারিশ করা হয়। রেট্রোফিটিং তালিকায় ছিল শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের ১৫৪টি ভবনসহ মোট ১৮৭টি স্থাপনা।
 
জরিপে দেখা যায়, ঢাকায় মোট ২১ লাখ ৪৫ হাজার ভবনের মধ্যে ৪০ শতাংশ—অর্থাৎ সাড়ে ৮ লাখ ভবন—৭ মাত্রার ভূমিকম্পে ধসে পড়তে পারে। নতুন নির্মিত ভবনের ৩৭ শতাংশকেও ঝুঁকিপূর্ণ ধরা হয়েছে।
 
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় জানায়, গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন চেয়ে রাজউককে একাধিকবার চিঠি দিলেও সাড়া মেলেনি, ফলে বুয়েটের পরীক্ষাও আটকে আছে।
 
রাজউকের সাবেক প্রকৌশলী আব্দুল লতিফ হেলালীর মতে, ভবন নির্মাণে ন্যূনতম মান বজায় না রাখায় বিপর্যয়ের ঝুঁকি ভয়াবহ। রেট্রোফিটিং করতে প্রয়োজন ৬২ মিলিয়ন ডলার। রাজউক চেয়ারম্যান বলেন, সাম্প্রতিক ভূমিকম্পগুলো বড় দুর্ঘটনার সতর্কবার্তা এবং দ্রুত সমন্বিত উদ্যোগের প্রয়োজনীয়তা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে।
 
তফশিলের দ্বারপ্রান্তে ইসি-দৈনিক যুগান্তর পত্রিকার প্রধান সংবাদ এটি।

এই প্রতিবেদনে বলা হয়, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফশিল ঘোষণার দ্বারপ্রান্তে রয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বর্তমান কমিশনের দায়িত্ব নেওয়ার এক বছর পূর্তির দিনে তফশিল ঘোষণার তারিখ জানানো হতে পারে। নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে তফশিল ঘোষণার পরিকল্পনা আছে; আলোচনায় রয়েছে ৪, ৭ ও ৮ ডিসেম্বর। ভোটগ্রহণ হতে পারে ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে—বিশেষভাবে ৮ ফেব্রুয়ারি রোববারকে সম্ভাব্য তারিখ মনে করা হচ্ছে।
 
ইসির প্রস্তুতির অংশ হিসেবে পর্যবেক্ষক সংস্থার সঙ্গে সংলাপ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বৈঠক, সচিবদের সঙ্গে সমন্বয় বৈঠক এবং ভোটকেন্দ্র প্রস্তুতকরণ—সবকিছু দ্রুত সম্পন্ন করা হচ্ছে। মাঠ পর্যায়ের অভিজ্ঞতা নিতে রাজধানীর নিকটবর্তী একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ‘মক ভোটিং’ আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে, যেখানে ভোটকেন্দ্রের ব্যবস্থাপনা, ভোটার প্রবেশ–সমস্যা এবং বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ভোটারদের সহায়তা মূল্যায়ন করা হবে।
 
ইসির বড় প্রস্তুতির মধ্যে রয়েছে ছবিসহ ভোটার তালিকা হালনাগাদ, নির্বাচনি সামগ্রী সংগ্রহ, দল নিবন্ধন, পর্যবেক্ষক সংস্থা নিবন্ধন, দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ এবং প্রবাসীদের পোস্টাল ব্যালট অ্যাপ চালু।
 
বেশিরভাগ কাজ শেষ হলেও আসন সীমানা পুনর্নির্ধারণ নিয়ে মামলা চলছে।
 
এদিকে গণভোটের অধ্যাদেশের খসড়া ইসিতে পৌঁছেছে এবং দু-এক দিনের মধ্যে অধ্যাদেশ জারি হবে। এরপর ইসি গণভোটের বিধিমালা তৈরি করবে, যেখানে ব্যালটের রং, ভোটগ্রহণ ও গণনার নিয়ম নির্ধারণ করা হবে। সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের ব্যালট আলাদা রঙে করার পরিকল্পনা আছে—যেমন সবুজ বা গোলাপি।
 
একই সিল নাকি পৃথক সিল ব্যবহার করা হবে, সেই সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি।
 
একই দিনে নির্বাচন ও গণভোট হওয়ায় প্রতিটি ভোটারের ব্যালট দিতে সময় বাড়বে, ফলে ভোটকক্ষের সংখ্যা ও ব্যয় বৃদ্ধি পেতে পারে। মক ভোটিংয়ের অভিজ্ঞতা থেকে এসব সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হবে।