জুলাই মাসের গণ–অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত হত্যাকাণ্ডসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের এক মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল–১ সোমবার সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে। একই মামলায় রাজসাক্ষী হিসেবে থাকা পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুনকে পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপচারিতায় প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার হুসাইন তামীম জানান, রায় ঘোষণার ৩০ দিনের মধ্যে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের আপিল করার সুযোগ রয়েছে। ট্রাইব্যুনাল আইনের ২১(৩) ধারায় স্পষ্ট বলা আছে, রায় ঘোষণার দিন থেকে ৩০ দিনের মধ্যে আপিল দাখিল করতে হবে। এই সময় পার হয়ে গেলে আর কোনো আপিল গ্রহণযোগ্য নয়। ২১(৪) ধারায় রয়েছে, আপিল হওয়ার পর ৬০ দিনের মধ্যেই তার নিষ্পত্তি করতে হবে।
এক সাংবাদিক জানতে চাইলে—যদি শেখ হাসিনা ৩০ দিনের মধ্যে দেশে না ফেরেন এবং তিন মাস পরে ফিরে আসেন, তখন কি আপিল করা যাবে?—প্রসিকিউটর জানান, সাধারণ ফৌজদারি আইনে সময়সীমা পার হয়ে গেলে ‘ডিলে কন্ডোনেশন’ বা বিলম্ব মওকুফের সুযোগ থাকলেও বিশেষ আইন যেমন ট্রাইব্যুনাল আইনে সময়সীমা নির্ধারিত থাকলে সে সুযোগ নেই। তাই ৩০ দিন পেরোলে আপিলের সুযোগ আর থাকবে না; তারা গ্রেফতার হলে রায় কার্যকর হবে।
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আইন অনুযায়ী দণ্ডপ্রাপ্তদের যা করার, তা এই ৩০ দিনের ভেতরেই করতে হবে। সময়সীমা শেষ হয়ে গেলে তাদের বিরুদ্ধে রায় কার্যকর হবে।
তিনি আরও বলেন, আপিল বিভাগ ‘কমপ্লিট জাস্টিস’ নিশ্চিত করার ক্ষমতা রাখলেও বিশেষ আইনের নির্ধারিত সময়সীমা অতিক্রম করলে বিলম্ব মওকুফের কোনো বিধান নেই।
সাবেক আইজিপি মামুন এখন জামিন চাইতে পারবেন কি না—এমন প্রশ্নে গাজী মোনাওয়ার জানান, ট্রাইব্যুনাল থেকে দণ্ড ঘোষণার পর এই আদালতে তাদের আর কোনো আবেদন করার সুযোগ নেই। তারা শুধু রায়ের বা সাক্ষ্য–নথির সার্টিফাইড কপি সংগ্রহ করতে পারবেন এবং এই নথি নিয়ে আপিল বিভাগে আপিল করার সময় জামিন আবেদন করতে পারবেন।
জুলাই যোদ্ধা ও তাদের পরিবার মামুনের পাঁচ বছরের সাজাকে অপ্রতুল বলে মন্তব্য করে আপিল করতে ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। প্রসিকিউটর জানান, তারাও চাইলে আইন অনুযায়ী ৩০ দিনের মধ্যে আপিল বিভাগে যেতে পারবেন।