Image description
 

ঢাকার ডাকসুর ভিপি সাদিক কায়েম দেশের সব ছাত্রসংগঠনকে ইসলামী ছাত্রশিবিরের ‘নতুন ধারার রাজনীতি’ অনুসরণের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, অতীতে আওয়ামী লীগ সরকার ছাত্রশিবিরের ওপর প্রচণ্ড নির্যাতন চালিয়েছে এবং সংগঠনটিকে নিষিদ্ধও করেছিল। তা–সত্ত্বেও শিবির মানুষের মনে জায়গা করে রেখেছে, আর শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। তাঁর দাবি, শিবির সবসময় ন্যায়ের পক্ষে থেকেছে এবং স্বাধীনতার পক্ষে লড়াই চালিয়ে গেছে। একই সঙ্গে শিবির কোনো ভুল করলে প্রতিবাদ করারও আহ্বান জানান তিনি।

শনিবার (১৫ নভেম্বর) রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ইসলামী ছাত্রশিবিরের নবীনবরণ অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে যোগ দিয়ে এসব কথা বলেন সাদিক কায়েম। তিনি আওয়ামী লীগকে “সন্ত্রাসী গোষ্ঠী” আখ্যা দিয়ে বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারকে শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে এবং তার ফাঁসি নিশ্চিত করতে হবে। তাঁর মতে, বিচার বিভাগ ও প্রশাসনে এখনো ফ্যাসিবাদী শক্তির প্রভাব রয়ে গেছে, যাদের প্রতিরোধ করতে হবে।

 

তিনি আরও বলেন, স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরও দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা পরিবর্তন হয়নি, কারণ এটি এখনও ব্রিটিশ ও ভারতের প্রভাব বহন করছে। রাবি শিক্ষার্থীদের ত্যাগের ইতিহাস উল্লেখ করে তিনি দাবি করেন—পূর্ববর্তী সময়ে এখানে ভয়াবহ নির্যাতন, গণরুম সংস্কৃতি এবং ধর্মীয় স্বাধীনতার ওপর দমন–পীড়ন ছিল। নবীন শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ঐক্যবদ্ধ থাকলে দেশে নতুন কোনো ফ্যাসিস্ট শক্তি মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারবে না।

 

রাবি শিবির সভাপতি ও রাকসুর ভিপি মোস্তাকুর রহমান জাহিদ ১৯৮২ সালের ১১ মার্চ নবীনবরণ অনুষ্ঠানে চারজন শিবির কর্মীর শাহাদাতের কথা স্মরণ করেন। তাঁর ভাষায়, চার শিক্ষার্থীর সেই আত্মত্যাগ আজও সংগঠনের ইতিহাসে গভীর আবেগের জায়গা দখল করে আছে। এত বছর পর এবার ক্যাম্পাসের ভেতরে বড় আকারে নবীনবরণ আয়োজন করতে পারায় তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

চাকসুর ভিপি ইব্রাহিম রনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে বিভিন্ন সময় শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। তিনি জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া শিক্ষার্থীদের সরব উপস্থিতির কথা উল্লেখ করে বলেন, নির্বাচন হলেও প্রত্যাশিত শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ এখনো তৈরি হয়নি। তাঁর অভিযোগ—বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও রাষ্ট্রীয় কাঠামো শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিত্বমূলক কাজকে বাধাগ্রস্ত করছে।

তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য শিক্ষার্থীদের দাবির কথাও তুলে ধরেন—আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থা, হলে আবাসনের সুযোগ, মিলের ভর্তুকি বৃদ্ধি এবং ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা।

অনুষ্ঠানে প্রায় তিন হাজার শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন। প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম। আরও উপস্থিত ছিলেন রাবি শিবিরের সাবেক সভাপতি আব্দুল মোহাইমিন, কেন্দ্রীয় শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক ইব্রাহিম হোসেন এবং প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাবির উপ–উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মাঈন উদ্দীন।