জাতির উদ্দেশে দেওয়া প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ভাষণের বিষয়ে গণঅধিকার পরিষদের প্রতিক্রিয়া দলীয় ফোরামে আলোচনা করে জানানো হবে। আগামীকাল শুক্রবার এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া দেবে দলটি।
বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় যুগান্তরকে একথা জানান গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান। তিনি বলেন, এ বিষয়ে দলীয় ফোরামে আলোচনা করে আমরা শুক্রবার আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া দেব। তাৎক্ষণিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া আমরা দিচ্ছি না।
সংসদ নির্বাচনের দিন গণভোট আয়োজন করা হবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি এ তথ্য জানান।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন গণভোট অনুষ্ঠিত হবে। অর্থাৎ জাতীয় নির্বাচনের সঙ্গে মিলিয়ে ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে একই দিনে গণভোট আয়োজন হবে। এতে কোনোভাবেই সংস্কারের লক্ষ্য ব্যাহত হবে না। নির্বাচন আরও উৎসবমুখর ও সাশ্রয়ী হবে। গণভোটের আয়োজনের জন্য প্রয়োজনীয় আইন উপযুক্ত সময়ে প্রণয়ন করা হবে।
তিনি আরও জানান, গত ৯ মাস ধরে রাষ্ট্র গঠনের জন্য জাতীয় ঐকমত্য কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করেছে। সংবিধানের গুরুত্বপূর্ণ ৩০টি বিষয়ে দলগুলো একমত হয়েছে। এটি ভবিষ্যত রাজনীতির জন্য আশাব্যঞ্জক। এজন্য কমিশন ও রাজনৈতিক দলগুলোকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
ড. ইউনূস বলেন, জুলাই সনদের আলোকে আমরা গণভোটের ব্যালটে উপস্থাপনীয় প্রশ্নও নির্ধারণ করেছি। তিনি প্রশ্নটি পাঠ করে শোনান। প্রশ্নটি হবে:
আপনি কি জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ, ২০২৫ এবং জুলাই জাতীয় সনদে লিপিবদ্ধ সংবিধান সংস্কার সম্পর্কিত নিম্নলিখিত প্রস্তাবগুলোর প্রতি আপনার সম্মতি জ্ঞাপন করছেন?
ক) নির্বাচনকালীন সময়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার, নির্বাচন কমিশন এবং অন্যান্য সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান জুলাই সনদে বর্ণিত প্রক্রিয়ার আলোকে গঠন করা হবে।
খ) আগামী সংসদ হবে দুই কক্ষ বিশিষ্ট। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলগুলোর প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতে ১০০ জন সদস্য বিশিষ্ট একটি উচ্চকক্ষ গঠিত হবে এবং সংবিধান সংশোধন করতে হলে উচ্চকক্ষের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের অনুমোদন প্রয়োজন হবে।
গ) সংসদে নারীর প্রতিনিধি বৃদ্ধি, বিরোধী দল থেকে ডেপুটি স্পিকার ও সংসদীয় কমিটির সভাপতি নির্বাচন, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ সীমিতকরণ, রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা বৃদ্ধি, মৌলিক অধিকার সম্প্রসারণ, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও স্থানীয় সরকার-সহ বিভিন্ন বিষয়ে যে ৩০টি প্রস্তাবে জুলাই জাতীয় সনদে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্যমত হয়েছে সেগুলো বাস্তবায়নে আগামী নির্বাচনে বিজয়ী দলগুলো বাধ্য থাকবে।
ঘ) জুলাই সনদে বর্ণিত অন্যান্য সংস্কার রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিশ্রুতি অনুসারে বাস্তবায়ন করা হবে। গণভোটের দিন এই চারটি বিষয়ের ওপর একটিমাত্র প্রশ্নে ভোটাররা ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ ভোট দিয়ে তাদের মতামত জানাবেন।
এর আগে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশে স্বাক্ষর করেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে তিনি এ আদেশে স্বাক্ষর করেন।
বিএনপিও এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া দেয়নি। তাদের স্থায়ী কমিটির জরুরি বৈঠক ডাকা হয়েছে। সেখানে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
জাতীয় নাগরিক পার্টিও জরুরি বৈঠকে বসেছে। এরপর তারা প্রধান উপদেষ্টার ভাষণের আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া দেবে।
-6908db367bdc7-691477392461d-6915a94734f73.jpg)