Image description

পলাতক আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের নগরের চশমা হিলের বাড়িতে ১৩ নভেম্বরকে কেন্দ্র করে নাশকতা চালানোর মহাপরিকল্পনা করা হয়েছে। ১৫ দিন ধরে বাড়িটিতে যুবলীগ ও নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের কয়েকটি গ্রুপ অবস্থান করে এ পরিকল্পনা করে। গতকাল অভিযান চালিয়ে তাদের মধ্যে সাতজনকে আটক করা হয়ছে।

জানা গেছে, চশমা হিলের বাড়িতে আওয়ামী লীগ ঘোষিত ‘ঢাকা লকডাউন’কর্মসূচি সফল করতে ভিডিওকলে নির্দেশনা দেন নওফেলসহ আরো কয়েকজন সন্ত্রাসী। গত মঙ্গলবার রাতে কয়েকটি গাড়িতে প্রায় ২৫০ জন ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়।

একটি গোয়েন্দা সংস্থার সূত্রে জানা যায়, নওফেলের নগরের চশমা হিলের বাড়িতে গত কয়েক রাত ধরে অনলাইনে জুম মিটিং করা হয়েছে। এসব মিটিংয়ে যুবলীগ-ছাত্রলীগের নগর ও জেলা এবং উপজেলা পর্যায়ের শীর্ষ নেতারা অংশ নিতেন।

তাদের সঙ্গে ভার্চুয়ালি যোগ দিতেন নওফেল, যুবলীগের সন্ত্রাসী হেলাল আকবর বাবর ও ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী নুরুল আজিম রনি। কীভাবে মাঠে অস্থিরতা তৈরি করা যায় তারা সেই দিকনির্দেশনা দিতেন। নগরের কোন পয়েন্টে কখন, কতজন নিয়ে মিছিল করা হবে, মিছিলের ধরন কেমন হবে, কে ভিডিও করবে এসব বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হতো। এছাড়াও শহরকে বিভিন্ন জোনে ভাগ করে দেয়ালিকা বা চিকা মারার ও পোস্টার লাগানোর কাজও ভাগ করে দেওয়া হয়। এমনকি কোন প্রেসে পোস্টার ছাপানো হবে এবং পোস্টারে কী কী লেখা থাকবে তাও বলে দেন নওফেল।

এ বক্তব্যের মিল পাওয়া গেছে নওফেলের ফেসবুক পেজেও। নগরে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের পরিচালিত কর্মকাণ্ড প্রতিনিয়ত তিনি তার পেজে পোস্ট করছেন। বুধবার বিকেলে তিনি পোস্ট করেন যুবলীগের ৫৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলকক্ষে এতিমদের মাঝে যুবলীগ নেতা মো. ওমর ফারুকের খাবার বিতরণের ছবি। এর আগে পাহাড়তলীতে বৈদ্যুতিক খুঁটি ও দেয়ালে চিকা মারার বেশকিছু ভিডিও পোস্ট করেন নওফেল। এছাড়াও নগরের বিভিন্ন স্থানে ঢাকা লকডাউনের পোস্টার ছাপানো ও ঘরোয়া কেক কাটার ভিডিও তিনি প্রচার করছেন রীতিমতো। ছাত্রলীগ নেতা গোলাম সামদানি জনি, যুবলীগের আসিফ মাহমুদ, জসিম উদ্দিন জয়, যুবলীগ নেত্রী উম্মে কাউচার এপিসহ কয়েকজন নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করেন পোস্টের ক্যাপশনে। শুধু তাই নয় জুম মিটিংয়ের কিছু লিংকও তিনি পোস্ট করেন তার পেজে। গত রোববার নগরের মুরাদপুর, দেওয়ানহাট ও সাগরিকায় একদিনে তিনটি ঝটিকা মিছিল করে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ মিছিলের ভিডিও ক্লিপও তিনি প্রকাশ করেন।

নওফেলের বাড়িতে পুলিশের অভিযানে গ্রেপ্তার ৭

এদিকে গতকাল বুধবার দুপুরে নওফেলের বাড়িতে অভিযান চালায় সিএমপির পাঁচলাইশ থানা পুলিশ। আধা ঘণ্টাব্যাপী এ অভিযানে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ ও যুবলীগ সদস্য সন্দেহে সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পাঁচলাইশ থানার ওসি মোহাম্মদ সোলাইমান এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

ওসি সোলাইমান জানান, আমরা খবর পেয়েছি ১৩ নভেম্বরকে কেন্দ্র করে বাইরে থেকে এখানে প্রচুর লোক এসেছে। আমরা বাড়ির মালিকপক্ষের কাউকে পাইনি। তবে সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছি। তারা কোনো নাশকতায় জড়িত কি না বা ছাত্রলীগ, যুবলীগের সদস্য কি না সেটি খতিয়ে দেখা হবে। আটককৃতরা অবশ্য পুলিশের কাছে নিজেদের হোটেল কর্মচারী বলে পরিচয় দিয়েছে।

অপরদিকে অভিযান পরিচালনাকালে জুলাই ঐক্যের ৫০-৬০ জন নেতাকর্মী নওফেলের বাড়িতে ভিড় করেন। পরে তারা নগরের বিভিন্ন সড়কে লাঠি মিছিল করেন। তারা আমার দেশকে জানান, জুলাই আন্দোলনের প্রশ্নে ও ফ্যাসিবাদের প্রশ্নে কাউকে ছাড় নয়। আওয়ামী লীগকে শায়েস্তা করে তবেই ঘরে ফিরব, সেই পর্যন্ত রাজপথে আছি।