খুলনা-২ (সদর ও সোনাডাঙ্গা) আসনে বিএনপির দলীয় প্রার্থী হিসেবে কার্যক্রম শুরু করার নির্দেশ পেয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য ও খুলনা মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছ থেকে সরাসরি নির্দেশনা পাওয়ার কথা জানিয়েছেন তিনি।
রবিবার (২ নভেম্বর) বিকেল সোয়া পাঁচটার দিকে লন্ডন থেকে ফোনে তারেক রহমান তাঁকে প্রার্থী হিসেবে কাজ শুরু করতে বলেন। বিষয়টি নিশ্চিত করে নজরুল ইসলাম মঞ্জু প্রথম আলোকে জানান, “দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বিকেল সোয়া পাঁচটার দিকে ফোন করে কাজ শুরু করতে বলেন। আমি বলেছিলাম, আমি চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত। তিনি বলেছেন, ‘সুস্থ হয়ে মাঠে নেমে পড়ুন, সবাইকে নিয়ে কাজ শুরু করুন। নির্বাচনে সবাইকে লাগবে। ভালো-মন্দ, পছন্দ-অপছন্দ থাকতে পারে, তারপরও সবাইকে সঙ্গে নিন।’”
তিনি জানান, সুস্থ হওয়ার পর খুলনায় ফিরে দলের স্থানীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে পরামর্শ সভা করবেন।
এর আগে গত সোমবার ঢাকায় বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় অংশ নেন নজরুল ইসলাম মঞ্জু। চার বছর পর ওই বৈঠকের মাধ্যমে তিনি দলে সক্রিয়ভাবে ফেরেন। বৈঠক শেষে খুলনায় ফেরার পর অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং পরে তাঁর চিকুনগুনিয়া ধরা পড়ে। বর্তমানে তিনি নিজ বাড়িতে চিকিৎসাধীন আছেন।
রবিবার বিকেলে ফেসবুকে একাধিক পোস্টে দলের সিদ্ধান্তের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ এবং নেতাকর্মীদের ধৈর্য ও সংযম বজায় রাখার আহ্বান জানান তিনি। এক পোস্টে লেখেন, “মহান আল্লাহ তায়ালার প্রতি শুকরিয়া। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে খুলনা-২ আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী হিসেবে দ্রুত সবাইকে নিয়ে কাজ শুরু করার জন্য দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নির্দেশনার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।”
অন্য এক পোস্টে নেতা–কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, “দলীয় মনোনয়ন প্রাপ্তি নিয়ে উল্লাস প্রকাশ, আনন্দমিছিল ও মিষ্টি বিতরণ নিষেধ। কাউকে খাটো করা বা বিদ্বেষমূলক মনোভাব পোষণ করা থেকেও বিরত থাকুন। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নির্দেশনাই আমাদের পথনির্দেশ।”
পোস্টগুলো প্রকাশের পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্থানীয় বিএনপি নেতা–কর্মীরা তাঁকে অভিনন্দন জানাচ্ছেন এবং তারেক রহমানের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছেন।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ডিসেম্বরে খুলনা মহানগর বিএনপির সভাপতি পদ হারান নজরুল ইসলাম মঞ্জু। সে সময় আহ্বায়ক করা হয় শফিকুল আলম মনাকে এবং সদস্যসচিব করা হয় শফিকুল আলম তুহিনকে। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে মঞ্জুর অনুসারীরা খুলনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে পদত্যাগের ঘোষণা দেন। প্রায় পাঁচ শতাধিক নেতা সে সময় পদত্যাগ করেন। পরে মঞ্জুকে কেন্দ্রীয় বিএনপির খুলনা বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদকের পদ থেকেও অব্যাহতি দেওয়া হয়।
দলীয় পদ হারালেও রাজনীতি থেকে সরে যাননি নজরুল ইসলাম মঞ্জু। বিভিন্ন ব্যানারে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে গেছেন, কেন্দ্রীয় কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন তাঁর অনুসারীদের নিয়ে। খুলনার বিভিন্ন সমাবেশ, শোভাযাত্রা ও সামাজিক আয়োজনে তাঁর সক্রিয় উপস্থিতি ছিল নিয়মিত।
২০০৮ সালের নির্বাচনে খুলনা-২ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন নজরুল ইসলাম মঞ্জু। তিনি নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক, সভাপতি এবং কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। বিএনপির মনোনীত প্রার্থী হিসেবে খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন তিনি।
ঢাকাটাইমস