Image description

১৯৯০ সালের পর গত ৩৫ বছরের মধ্যে মাত্র দুবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২০১৯ সালের পর গত মাসে দ্বিতীয়বারের মতো এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে ছাত্রশিবিরের প্যানেল বিপুল পরিমাণে জয়লাভ করে। এই ৩৫ বছরের মধ্যে প্রতিবছরই ভর্তির সময় নবীন শিক্ষার্থীরা ডাকসুর জন্য এককালীন ফি দিয়ে আসছে।

ডাকসুর সহ-সভাপতি (ভিপি) আবু সাদিক কায়েম বলেছেন, ঢাবি প্রশাসনকে চিঠি দিয়েও এই ফির টাকা কোথায় আছে সেই হিসাবটা দিতে পারেনি। তিনি আরও বলেছেন, ২০১৯ সালের ডাকসুর অডিটের হিসাবটা দিতে হবে। তাছাড়া ২০১৯ সালের পর থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত যে হিসাব সেই হিসাবটা আমাদের একাউন্টে পৌঁছে দিতে হবে। আজ শনিবার (২৫ অক্টোবর) দুপুরে ক্যাম্পাসে সাংবাদিকদের আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। 

ভিপি সাদিক কায়েম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের কাছে হিসাবটা দিতে পারেনি। কিন্তু প্রত্যেকটা টাকা হিসাব আমাদেরকে দিতে হবে। দীর্ঘদিন ধরে ডাকসু অকার্যকর থাকার কারণে এটার যে স্ট্রাকচার তা পুরাটাই ভেঙে দেওয়া হয়েছে। ১৯৯০ সালের পরে ২০১৯ সালে ডাকসু নির্বাচন হয়। এরপর থেকে আর ডাকসু হয়নি। তো আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে ট্রেজারার বরাবর ইতোমধ্যে চিঠি দিয়েছি। 

‘‘আমরা বলেছি, ১৯৯০ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা হল সংসদ এবং কেন্দ্রীয় সংসদের জন্য প্রতিবছর ভর্তির সময় যে টাকাটা দেয় সে হিসাবটা আমাদের কাছে দিতে হবে। ২০১৯ সালের যে ডাকসু যে অডিট সে অডিটের হিসাবটাও দিতে হবে। তাছাড়া ২০১৯ সালের পর থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত যে হিসাব সেই হিসাবটা আমাদের একাউন্টে পৌঁছে দিতে হবে। এই চিঠি আমরা দিয়েছিলাম প্রায় আজকে থেকে তিন সপ্তাহ আগে। এখন পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের কাছে সেই হিসাবটা দিতে পারেনি।’’

তিনি বলেন, আমরা আবারও জানিয়েছি লিখিতভাবে। এরপরও যদি না হয় তাহলে আমরা শিক্ষার্থীদেরকে সাথে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে অবস্থান নেব। আমাদের অবস্থান, শিক্ষার্থীরা যে টাকা তাদের কল্যাণের জন্য দিয়েছে এই টাকা অন্যখাতে ব্যবহার করলে সে টাকার হিসাব দিতে হবে। প্রয়োজনে তাদের বেতন বন্ধ থাকবে। কিন্তু শিক্ষার্থীরা যে টাকা দিয়েছে সে টাকাটা শিক্ষার্থীদের স্বার্থে বের করতে হবে এবং এটার জন্য আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বাধ্য করব।

‘‘ইতোমধ্যে আমরা প্রত্যেকটা হল সংসারের সাথে কথা বলেছি এবং আমরা রবিবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে যাব। ইতোমধ্যে আমার সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজার এবং ভাইস চ্যান্সেলর (ভিসি) যোগাযোগ করেছেন। উনারা এই হিসাবটা কীভাবে সমন্বয় করা যায় সেটা নিয়ে আলাপ করছেন। তো আমাদের অবস্থান পরিষ্কার, যে টাকাটা ডাকসুর জন্য শিক্ষার্থীরা দিয়েছে সেই টাকাটা ডাকসুর কাছে ফিরে দিতে হবে।’’

 

অভিযোগ করে ভিপি সাদিক কায়েম বলেন, আমরা দেখতে পাচ্ছি বিশ্ববিদ্যালয়ের আমাদের হলের যারা প্রশাসন আছে এবং বিভিন্ন পর্যায়ের যারা প্রশাসনে আছে আমরা তাদের বিভিন্ন জায়গায় অসহযোগিতা দেখতে পাচ্ছি। আমাদের কথা হচ্ছে পরিষ্কার, আপনারা যদি শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন, শিক্ষার্থীদের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন তাহলে আপনাদের পরিণতি খারাপ হবে। শিক্ষার্থীরা আমাদেরকে ম্যান্ডেট দিয়ে নির্বাচিত করেছে। তাদের যে প্রত্যাশা তাদের যে আকাঙ্ক্ষা সেটা বাস্তবায়ন করার জন্য আমাদেরকে দায়িত্ব দিয়েছে। সুতরাং শিক্ষার্থীদের যে প্রত্যাশা সেটা বাস্তবায়ন না হওয়ার আগ পর্যন্ত আমরা আমাদের লড়াই চালিয়ে যাব। আমরা যে কমিটমেন্ট দিয়েছি স্বপ্নের ক্যাম্পাস সেই স্বপ্নের ক্যাম্পাস বির্নিমান না হওয়ার আগ পর্যন্ত আমরা আমাদের লড়াই চালিয়ে যাব।