Image description

ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়ার দলীয় গঠনতন্ত্র ও শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ডের অভিযোগে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম কিশোরগঞ্জ জেলা শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট ফয়জুল করিম মুবিনকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

 

শুক্রবার সকালে কিশোরগঞ্জ প্রেস ক্লাবে কিশোরগঞ্জ জেলা জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম সংবাদ সম্মেলন করে মুবিনকে বহিষ্কারাদেশ প্রদান করে।

এর আগে বুধবার অ্যাডভোকেট ফয়জুল করিম মুবিন নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে মুবিন নিজেই লাইভে এসে আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এরপর সেই ফেসবুক লাইভ মুহূর্তেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে ওঠে। আর এমন ঘটনায় উৎফুল্ল হয়ে আওয়ামী লীগ ও আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা ঘটনাটি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে দেন।

অ্যাডভোকেট ফয়জুল করিম মুবিন কিশোরগঞ্জ সদর আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জিয়াউর রহমান সরকারের তৎকালীন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ফজলুল করিমের ছেলে। ফয়জুল করিম গত ২০ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সম্মেলনের আগের কমিটির সদস্য ছিলেন। তিনি কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির উপ-দপ্তর সম্পাদক, পৌর বিএনপির সদস্য ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম কিশোরগঞ্জ শাখার যুগ্ম-আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। 

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে কিশোরগঞ্জ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট শরীফুল ইসলাম বলেন, দেশ একটি ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। দেশের অভ্যন্তরে থাকা অপশক্তি ও বিদেশি ষড়যন্ত্রকারীরা জনগণের অর্জিত মহান স্বাধীনতা ও জুলাই বিপ্লবকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য নানা ধরনের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। যার ফলে আমাদের দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব এক চরম হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে।

লিখিত বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, এরই ধারাবাহিকতায় সাম্প্রতিক সময়ে দলীয় শৃঙ্খলার পরিপন্থি ও গঠনতন্ত্রবিরোধী বক্তব্য প্রদান করায় অ্যাডভোকেট ফয়জুল করিম মুবিনকে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম কিশোরগঞ্জের যুগ্ম আহ্বায়ক ও প্রাথমিক সদস্যপদ থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত গৃহীত হলো।

গত ৫ অক্টোবর অ্যাডভোকেট ফয়জুল করিম মুবিন তার ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে বিএনপি থেকে পদত্যাগ করার ঘোষণা দেন।

পদত্যাগপত্রে তিনি লেখেন- ‘আমি বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী, মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি, শহীদ জিয়ার আদর্শ সততায় মুগ্ধ, তার আরেক আদর্শ বহুদলীয় গণতন্ত্রের বিশ্বাসী একজন সাধারণ বিএনপি পরিবারের সন্তান। আমার নিজের রাজনৈতিক অদূরদর্শিতা, সামাজিক প্রেক্ষাপট গভীরভাবে বোঝার দূরদৃষ্টির অভাব, জাতীয় আন্তর্জাতিক রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত কোনো নেতার আস্থাভাজন হওয়ার অপারগতা, অনেক সিনিয়র যোগ্য নেতাদের উপদেশ ধৈর্যের অভাব থাকায়, আমি সুস্থ ও স্বজ্ঞানে ৫/১০/২০২৫ তারিখে বিএনপির রাজনৈতিক অবস্থান প্রিয় মাতৃভূমিতে বিগত ১৭ বছরের মাঝে সবচেয়ে ভালো থাকাবস্থায় আমি কিশোরগঞ্জ পৌর বিএনপি সদস্য পদ হতে এবং জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের যুগ্ম আহ্বায়ক পদ থেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করলাম।’

এছাড়া গত ২২ অক্টোবর মুবিন তার নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে লাইভে এসে বলেন, ‘শেখ হাসিনা যেহেতু বলেছেন, তিনি অবশ্যই দেশে ফিরবেন। আমি রাজনীতি করেছি দেশের জন্য, দলের জন্য নয়। এখন মনে করছি, দেশের নেতৃত্বে শেখ হাসিনার প্রয়োজন। বাংলাদেশের রাজনীতি এখন নতুন এক অধ্যায়ে প্রবেশ করছে। শেখ হাসিনা শুধু আওয়ামী লীগের নয়, তিনি এ দেশের স্থিতিশীলতার প্রতীক। দেশ ও জনগণের স্বার্থে এখন ঐক্যের সময়।’

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- অ্যাডভোকেট শেখ মাসুদ ইকবাল, অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর মোল্লা, কিশোরগঞ্জ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সদস্য অ্যাডভোকেট শফিউজ্জামান, অ্যাডভোকেট সাগর প্রমুখ।