Image description

বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল আরটিভির অনলাইন সংস্করণে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর সংবাদ প্রকাশ করে মানহানি ঘটানোর অভিযোগে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শাখা। শিবিরের পক্ষ থেকে এ নোটিশ পাঠান সংগঠনটির ছাত্রকল্যাণ সম্পাদক ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখার প্রতিনিধি মো. তৌহিদ হাসান।

সোমবার (২০ অক্টোবর) ঢাকা আইনজীবী সমিতির কার্যনির্বাহী সদস্য ও বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. মুজাহিদুল ইসলাম এই লিগ্যাল নোটিশটি পাঠিয়েছেন।

আইনি নোটিশে বলা হয়েছে, গত ১৪ অক্টোবর ২০২৫ তারিখে দুপুর ১২টা ১০ মিনিটে, “তথ্যগত বিভ্রান্তির কারণে সংবাদটি প্রত্যাহার করা হয়েছে” শিরোনামে একটি প্রতিবেদন আরটিভির অনলাইন পোর্টালে প্রকাশিত হয়। সংবাদটিতে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরকে জড়িয়ে মিথ্যা, বিভ্রান্তিকর ও সাংবাদিকতার নীতিবিরোধী তথ্য প্রচার করা হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়।

আইনি নোটিশ পাওয়া ব্যক্তিরা হলেন, সৈয়দ আশিক রহমান (আরটিভি সিইও), হুমায়ুন কবির বাবলু (ব্যবস্থাপনা পরিচালক, আরটিভি), আবু সাদেক মোহাম্মদ আলিম (মহা ব্যবস্থাপক, মানবসম্পদ বিভাগ আরটিভি),  মো. বেলায়েত হোসেন (সিনিয়র প্রোডিউসার, আরটিভি) ইলিয়াস হোসেন (হেড অব নিউজ, আরটিভি),  এ কে এম ওয়াহিদুজ্জামান অ্যাপোলো (পরিচালক, আরটিভি), মোহাম্মদ আবু আজাদ (অনলাইন ইনচার্জ, আরটিভি), কবির আহমেদ (হেড অব ডিএসএম, আরটিভি) এবং মাইদুর রহমান রুবেল (চিফ রিপোর্টার, আরটিভি)।

আইনি নোটিশে শিবির তাদের যৌক্তিক অভিযোগসমূহ উত্থাপিত করে তুলে ধরেন। সেখানে তারা বলেন, আরটিভি যে সংবাদ প্রকাশ করেছে, তা মিথ্যা, বানোয়াট, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও সাংবাদিকতার নীতি বহির্ভূত। প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে র‍্যাগিংয়ের দায়ে বহিষ্কৃত ১৬ শিক্ষার্থীর মধ্যে দুজন ছাত্রশিবিরের কর্মী। তবে শিবিরের দাবি- এই তথ্য ভিত্তিহীন। নোটিশে আরও বলা হয়, সংবাদটি প্রকাশের আগে অভিযুক্ত সংগঠন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বা সংশ্লিষ্ট কারও মতামত নেওয়া হয়নি, যা সাংবাদিকতার মৌলিক নীতি লঙ্ঘন করে। এছাড়া শিবির অভিযোগ করেছে, “আরটিভির এক প্রতিবেদক সত্য সংবাদ প্রচার করায় তাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে”, যা তাদের মতে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত পদক্ষেপ।

অন্যান্য সংবাদমাধ্যমের উদ্ধৃতি তুলে ধরে শিবিরের পক্ষ থেকে বলা হয়, আরটিভি'র এই ‘সংশোধনী’ আসলে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সংবাদ বিকৃতি, যা সংগঠনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার প্রচেষ্টা। নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে, একই ঘটনার খবর দৈনিক জনকণ্ঠ, ঢাকা ভয়েস ২৪ ও দৈনিক সংগ্রামসহ একাধিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে, যেখানে স্পষ্টভাবে বলা হয়- “জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে র‍্যাগিংয়ের ঘটনায় বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কোনো সদস্য জড়িত নয়।” তারা আরও উল্লেখ করেন যে, এমনকি ১৭ অক্টোবর শিবিরের প্রচার সম্পাদক মো. মাজহারুল ইসলামের স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতেও বিষয়টি অস্বীকার করা হয়।

আইনি নোটিশে বলা হয়েছে, “আরটিভির প্রকাশিত সংবাদটি দণ্ডবিধি-১৮৬০ এর ৫০০ ধারায় মানহানিকর অপরাধের শামিল।” তাই আরটিভির সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ৩ দিনের মধ্যে সংবাদটি প্রত্যাহার করে নেওয়া ও সংগঠন ও জাতির কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অন্যথায়, সংগঠনটি ১০০ কোটি টাকার মানহানি মামলাসহ বাংলাদেশে প্রচলিত অন্যান্য আইনি পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হবে বলে নোটিশে উল্লেখ করা হয়।